৩ কেজি ওজনের সুস্থ্য সন্তান জন্মদানে গর্ভবতী নারীদের খাবার তালিকা জেনে নিন!

একটি ৩ কেজি ওজনের সুস্থ্য সন্তান জন্মদান করার জন্য প্রায় প্রত্যেক গর্ভবতী মা’কে গর্ভাবস্থায় ১০ কেজি পর্যন্ত ওজন বৃদ্ধি করতে হয়। তবে লক্ষ রাখতে হবে প্রত্যেক মাসে যেন ১ কেজির বেশি ওজন বৃদ্ধি না পায়। গর্ভাবস্থায় সন্তানের সুস্থতার জন্য গর্ভবতী মা কে উপযুক্ত খাবার খেতে হয়।

তবে এ খাদ্য প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বা কম হলে, মোট কথা অসামঞ্জস্যপূর্ণ হলে তা অনেক বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় গর্ভস্থ সন্তানের জন্য। আসুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় মায়েদের খাবারের তালিকা কেমন হওয়া উচিত।

Cheerful beautiful pregnant woman sitting on the sofa with a bowl full of vegetables.

সকালে :
গর্ভবতী নারীদের সকালে উঠতে কিছুটা বেগ পেতে হয় কারণ বেশিরভাগ মায়েদেরই রাতে ঠিক মত ঘুম হয়না। তবে অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকলে গর্ভের বাচ্চার উপরে এর প্রভাব পড়ে। আবার অনেক সময় সকালে উঠার পরে বমিভাব হয়, খেতে ইচ্ছা হয়না। সেক্ষেত্রে সকালেই ভারি খাবার না খেয়ে হালকা চা খাওয়া যেতে পারে। সাথে একটা বিস্কিট।

প্রাতরাশ :
চা খাওয়ার বেশ খানিকটা পরে খেতে পারেন ২টি রুটি অথবা মাখন লাগিয়ে খেতে পারেন ২ স্লাইস পাউরুটি। সাথে থাকতে পারে সবজি তরকারি। এবং একটি ডিম। ডিম সিদ্ধ করে খেতে পারেন অথবা পোঁচ করেও খাওয়া যাবে। তবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে পাউরুটি না খাওয়াটাই ভাল হবে। দশটা এগারটার দিকে এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। কখনো কখনো ফলমূলও খেতে পারেন।

দুপুরের খাবার :
দুপুরে ভাত খাবেন এক বাটি। তবে ভাত খেতে না চাইলে রুটি খেতে পারেন। সেক্ষেত্রে রুটি খাবেন ৪ টি। সাথে মাছ বা মাংস অবশ্যই খাবেন। পরিমানটা হবে পঞ্চাশ থেকে সত্তর গ্রাম। সেই সাথে খেতে হবে বিভিন্ন রকম তরকারি, ডাল, তাজা ফল ও সবজির সালাদ। খাবার পরে খেতে পারেন দই।

বিকালে :
বিকালে হালকা কিছু দিয়ে নাস্তা করতে পারেন ভারি খাবার না খেয়ে। একটু চা বা দুধ খেতে পারেন। সাথে হয়ত দুই তিনটি বিস্কিট। অথবা খেতে পারেন কোন মজাদার ফল। কোন দিন এক স্লাইস কেক বা বাসায় তৈরি হালকা পাতলা স্নাক্সও খেতে পারেন। তবে বেশি তেলের জিনিষ ও ভাজা পোড়া না খাওয়াই ভাল হবে।

রাতের খাবার :
রাতের খাবার হবে দুপুরের মতই। তবে শাক জাতীয় জিনিষ রাতে খাওয়া পরিহার করলে ভাল হবে। বিভিন্ন সবজির আইটেম থাকতে পারে বেশি করে।

রাতে শোয়ার আগে :
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধ অবশ্যই খেতে ভুলবেন না। সারারাত যেহেতু আপনি অভুক্ত থাকবেন তখন এই দুধটুকুই কিন্তু রাতে আপনার গর্ভস্থ সন্তানকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করবে।

এছাড়াও পানি খেতে হবে প্রচুর। পানি খাবার জন্য কোন নিয়ম নেই। একটু পরপর গর্ভবতী নারী তার চাহিদা অনুযায়ী পানি খেতে পারবেন।

গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি একটি প্রতিদিনের সাধারন খাদ্য তালিকা। ডাইবেটিকস এর শিকার হলে শর্করা জাতীয় ও মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিত্যাগ করতে হবে, আবার প্রেশারের রুগিরা লবন কম খাবেন। তাই গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ও তার দেয়া তালিকা অনুযায়ী খাবার গ্রহন করতে হবে। শুধুমাত্র একজন গর্ভবতী নারীই পারে তার গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহন করে গর্ভের সন্তানের সুস্থ্যতা নিশ্চিত করতে।

Related Posts

রোজা রেখে অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে কী করবেন!

রোজার মাসে সবাই যেন খাবারের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। সারা দিন না খাওয়ার অভাবটুকু ইফতারে পুষিয়ে নেওয়ার জন্য কি এই প্রতিযোগিতা? কে কত খেতে বা রান্না করতে পারে।…

গলার অতিরিক্ত চর্বি কমানোর ১০টি সহজ উপায়…

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই লক্ষ্য করছেন তো জিনিসটা? আর ভাবছেন কী বাজে লাগছে মুখটা! অতিরিক্ত কী একটা ঝুলছে! আজ্ঞে হ্যাঁ, আমি গলায় জমে থাকা…

জানেন কি গরমে খাবারের চার্ট কেমন হওয়া উচিত?

গরমে অস্বস্তিতে সবাই। এরমধ্যে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় অনেকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শারীরিক অসুবিধা দেখা দিচ্ছে। তাই গরমে সুস্থ থাকতে ঠিকঠাক খাবার চার্ট খুবই জরুরি-…

বয়স অনুযায়ী আপনার শিশুর প্রতিদিন কতটুকু পানি প্রয়োজন

বাচ্চার কতটুকু পানি প্রয়োজন সেটি আসলে নির্ভর করে বাচ্চার অবস্থা, ওজন ও বয়সের ওপর। জ্বর বা অসুখের সময় পানির বেশি প্রয়োজন। বেশি গরম পড়লে, খেলাধুলা করলে বেশি…

শারীরিক সৌন্দর্য বারাতে ও ওজন কমাতে রইল ১৪ টি সহজ ঘরোয়া উপায়

মাঝে মাঝে ব্যয়াম ও কখনো কখনো ডায়েট করে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করাটা আসলেই দুঃসাধ্য।শরীরের বাড়তি মেদ নিয়ে আজকাল অনেকেই চিন্তিত। সুস্বাস্থ্যের জন্য তো বটেই, শারীরিক সৌন্দর্যের…

ওভেনের খাবার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়!

কম সময়ে খাবার গরম করতে মাইক্রোওয়েভ ওভেনই ভরসা। আধুনিক এই যন্ত্রটি জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। নামমাত্র সময়ে ঠান্ডা খাবার গরম করার এর চেয়ে ভাল উপায় আর নেই।…