প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলার ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে; যে ব্যক্তি এ গুণবাচক নামগুলোর জিকির করবে; সে জান্নাতে যাবে।’এ গুণবাচক নামগুলোর আলাদা আলাদা আমল এবং অনেক উপকার ও ফজিলত রয়েছে।
আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম সমূহের মধ্যে (اَلْوَدُوْدُ) ‘আল-ওয়াদুদু’ একটি। এ পবিত্র নামের আমলে স্বামী-স্ত্রী অমিল ও দূরত্ব কমে যায়।
আল্লাহর গুণবাচক নাম (اَلْوَدُوْدُ) ‘আল-ওয়াদুদু’-এর জিকিরের আমল ও ফজিলত তুলে ধরা হলো-
উচ্চারণ : ‘আল-ওয়াদুদু’
অর্থ : ‘প্রকৃত বন্ধু’; যে তাঁর অনুগত ও তাঁর দিকে ফিরে আসে তিনি তাকে ভালোবাসে। তাদের প্রশংসা করেন এবং তাদের প্রতি তিনি ইহসানকারী।
আল্লাহর গুণবাচক নাম (اَلْحَكِيْمُ)-এর আমল
ফজিলত
>> স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে যদি মিল মহব্বত কমে যায় বা উভয়ের মাঝে বনিবনা না হয় বা তাদের একজন অপর জনের ওপর অসন্তুষ্ট হয়; তখন আল্লাহ তাআলার পবিত্র গুণবাচক নাম (اَلْوَدُوْدُ) ‘আল-ওয়াদুদু’ ১০০১ (এক হাজার এক) বার পাঠ করে কোনো খাবার-দ্রব্যের মাঝে ফুঁ দিয়ে উভয়কে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করলে আল্লাহর রহমতে উভয়ের মধ্যে মিল-মহব্বত ও আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়।
পরিশেষে…
যে সব স্বামী-স্ত্রীর মাঝে অমিল ও অসন্তোষ কাজ করে তাদের জন্য এ পবিত্র নাম (اَلْوَدُوْدُ) ‘আল-ওয়াদুদু’-এর এ ছোট্ট আমলটি করে তা প্রয়োগের মাধ্যমে তা থেকে মুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন।
যে ব্যক্তি যতবার এই দোয়াটি পাঠ করবে, জান্নাতে তার
জন্য ততটি খেজুর গাছ রোপণ করা হবে
পবিত্র কোরআনে কারিমের আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও অধিক স্মরণকারী নারী- এদের জন্য আল্লাহ রেখেছেন ক্ষমা ও মহা প্রতিদান।’ -সূরা আহজাব: ৩৫
তাই মুসলমান হিসেবে আমাদের উচিৎ বেশি বেশি আল্লাহতায়ালার জিকির করা। জিকির বিষয়ে অভিজ্ঞ আলেমরা বলেছেন, নিম্নে উল্লেখিত জিকিরগুলো নিয়মিত আদায় করলে মৃত্যুর পর জান্নাতপ্রাপ্তি ও আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন সহজ হয়।
জিকিরগুলো হলো-
এক. প্রতিদিন ১০০ বার করে ‘সুবহানাল্লাহ’ পাঠ করলে ১ হাজার সওয়াব লেখা হয় এবং ১ হাজার গুনাহ ক্ষমা করা হয়। -সহিহ মুসলিম: ৪/২০৭৩
দুই. ‘আলহামদুলিল্লাহ’র জিকির মিজানের পাল্লাকে ভারী করে দেয় এবং এটা সর্বোত্তম দোয়া। – তিরমিজি: ৫/৪৬২ ও ইবনে মাজা: ২/১২৪৯
তিন. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সর্বোত্তম জিকির। -তিরমিজি: ৫/৪৬২ ও ইবনে মাযা: ২/১২৪৯
চার.‘সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ; ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার’ এই বাক্যগুলো আল্লাহতায়ালার নিকট অধিক প্রিয় এবং নবী করিম (সা.) বলেন, পৃথিবীর সমস্ত জিনিসের তুলনায় আমার নিকট অধিক প্রিয়। -সহিহ মুসলিম: ৩/১৬৮৫ ও ৪/২০৭২
পাঁচ. যে ব্যক্তি ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ প্রতিদিন ১০০ বার পাঠ করবে সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ (সগিরা) গুনাহ থাকলেও তাকে মাফ করে দেওয়া হবে। -সহিহ বোখারি: ৭/১৬৮
ছয়. নবী করিম (সা.) বলেন, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি সুবহানাল্লিল আজিম’ এই কালেমাগুলো উচ্চারণে খুব সহজ, মিজানের পাল্লায় ভারী ও দয়াময় আল্লাহতায়ালার নিকট অতি প্রিয় । -সহিহ বোখারি: ৭/১৬৮
সাত. যে ব্যক্তি ‘সুবহানাল্লাহিল আজিমি ওয়াবিহামদিহি’ পাঠ করবে প্রতিবারে তার জন্য জান্নাতে একটি করে (জান্নাতি) খেজুর গাছ রোপন করা হবে । -তিরমিজি: ৫/৫১১
আট. নবী করিম (সা.) বলেন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহ’ হচ্ছে জান্নাতের গুপ্তধনসমূহের মধ্যে একটি গুপ্তধন। -সহিহ বোখারি: ১১/২১৩
নয়. নবী করিম (সা.) বলেন, ‘সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহ’- এই কালেমাগুলো হচ্ছে অবশিষ্ট নেকআমলসমূহ। -আহমাদ: ৫১৩
দশ. হজরত নবী করিম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা তার প্রতি দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ পাঠ করলেই দরুদ পাঠের বরকত পাওয়া যাবে।
নবী করিম (সা.) আরও বলেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি সকালে দশবার এবং বিকেলে দশবার দরুদ পাঠ করবে সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ পাবে। -আত-তারগিব ওয়াত তারহিব: ১/২৭৩
কেয়ামতের ময়দানের আজাব থেকে মুক্তির আমল
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলার ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে; যে ব্যক্তি এ গুণবাচক নামগুলোর জিকির করবে; সে জান্নাতে যাবে।’ আল্লাহ তাআলার এ গুণবাচক নামগুলোর দৈনন্দিন জীবনে পালনীয় আলাদা আলাদা আমল এবং অনেক ফজিলত ও উপকারিতা রয়েছে।
আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম সমূহের মধ্যে (اَلْمُحْصِيْ) ‘আল-মুহসি’ একটি। এ পবিত্র নামের আমলের মাধ্যমে মানুষ হাশরের ময়দানের আজাব থেকে রক্ষা পাবে।
আল্লাহর গুণবাচক নাম (اَلْمُحْصِيْ) ‘আল-মুহসি-এর জিকিরের আমল ও ফজিলত তুলে ধরা হলো-
উচ্চারণ : ‘আল-মুহসি
অর্থ : ‘সব সৃষ্ট জীবের হিসাব সংরক্ষণকারী’
আল্লাহর গুণবাচক নাম (اَلْحَمِيْدُ)-এর আমল-
>> যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার পবিত্র গুণবাচক নাম (اَلْمُحْصِيْ) ‘আল-মুহসি’ শুক্রবার রাতে ১০০১ বার জিকির করবে; আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের যাবতীয় আজাব এবং কিয়ামতের ময়দানের ভয়াবহ অবস্থা ও আজাব থেকে রক্ষা করবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কবরের আজাব ও হাশরের ময়দানের ভয়াবহ আজাব ও কষ্ট থেকে ছোট্ট এ আমলের মাধ্যমে নাজাত পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।