রেশমের মতো নরম ত্বক পাওয়ার জন্য কত চেষ্টাই তো করছেন! সেই ত্বকের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, তার জন্য কত রকম পরিচর্যা করেই চলছেন! কিন্তু যে জিনিসটি রেশমেরই তৈরী তার যত্নের কী ব্যবস্থা করছেন?
সিল্কের শাড়ির যত্ন নেন?
আরে আমি বলছি আপনার আলমারিতে থাকা সিল্কের শাড়িগুলির কথা! প্রতি বছর শুধু দাম দিয়ে শাড়ি কিনে আলমারি ভরলেই হবে? তাদের ঠিক মতো দেখভালও তো করতে হবে। নয়তো কিন্তু অত সাধের দামী শাড়িগুলির এক্কেবারে বারোটা বেজে যাবে! আর আপনার শাড়িগুলি আপনার কত সাধের তা আমি বেশ ভালই জানি। তাই আজ আমি আপনাদের জানাবো এই সব শাড়িগুলির যত্ন আপনি কীভাবে নেবেন|
ঘরে বসে যত্ন!
সিল্কের শাড়ি কিন্তু খুব ডেলিকেট হয়। তাই ঠিক মতো না রাখলে তা নষ্ট হয়ে যায়| বেশীর ভাগ সময় দেখা যায় শাড়িগুলি ভাঁজে ভাঁজে কেটে যায় বা ওতে সাদা ছোপ বা ফাঙ্গাস পড়ে যায় বা তার রং ফেড হয়ে যায়| এই সব সমস্যার সমাধান আপনি নিজেই করে ফেলুন আজকের ৪ টি বিশেষ টিপস মেনে|
১. শাড়ি কীভাবে রাখবেন
যেমন তেমন করে ভাঁজ করে আলমারিতে শাড়ি রেখে দিয়ে আপনি যদি ভেবে থাকেন যে এতেই শাড়ি ভালো থাকবে, তাহলে আপনি কিন্তু মস্ত ভুল করছেন! কারণ সিল্কের শাড়িগুলিকে আলমারিতে রাখার সময় কতগুলি বিষয় মথায় রাখা জরুরী|
প্রথমত, সিল্কের শাড়ি কখনই ঝুলিয়ে রাখা উচিত নয়| যেগুলি জরির কাজ করা সেগুলি তো কোনো মতেই নয়| আপনি ভালো করে শাড়িগুলিকে ভাঁজ করে সুতির কাপড়ে মুড়িয়ে আলমারিতে রাখলে তা ভালো থাকবে| যে শাড়িগুলিতে জরি থাকে তা ভাঁজ করার সময় জরি যাতে ভেতরের দিকে থাকে তা খেয়াল রাখতে হবে| মাসে অন্তত ১ বার করে শাড়িগুলির ভাঁজ খুলে খোলা জায়গায় ছায়ার নীচে রেখে তা আবার পাল্টে ভাঁজ করা প্রয়োজন| এতে শাড়ি ভালো থাকবে|
২. শাড়িগুলি কীভাবে ধোয়া উচিত
সিল্কের শাড়ি সব সময় ড্রাই ওয়াশ করানোই ভালো| তবে যদি বাড়িতে আপনি শাড়ি ধুতে চান তাহলে মেশিনের বদলে হাতেই ধুয়ে ফেলুন| এক্ষেত্রে মাইল্ড ডিটারজেন্ট বা শ্যাম্পু ব্যবহার করাই ভালো| গরম জল একেবারেই ব্যবহার করবেন না এবং শাড়ি ধোয়ার সময় কোনোভাবেই ব্রাশ দিয়ে ঘষবেন না| এতে শাড়ি ছিঁড়ে যেতে পারে বা রঙ খারাপ হয়ে যেতে পারে| শাড়িগুলি থেকে জল ঝরানোর জন্য কোনোভাবেই তা নিংড়ানো উচিত নয়। শাড়ি মেলার সময় তা রোদে না মেলে ছায়ায় মেললে ভালো| যেগুলি জরি বা ভারী কাজ করা শাড়ি সেগুলি কিন্তু বাড়িতে না ধুয়ে ড্রাই ওয়াশ করানোই ভালো|
৩.কীভাবে আয়রন করবেন
সিল্কের শাড়ি একবার পরার পর কিছুক্ষণ মেলে রেখে আয়রন করে রাখা ভালো| এতে শাড়ি ভালো থাকে| আপনি যখন বাড়িতে শাড়ি আয়রন করবেন তখন কখনই বেশী গরম করে নেবেন না| হিট মিডিয়াম রাখাই এক্ষেত্রে ভালো| সব সময় কোনো সমান জায়গায় প্রথমে শাড়ি রেখে তার ওপর একটি সুতির কাপড় রেখে তার ওপর দিয়ে আয়রন করা উচিত|
৪. কীভাবে শাড়ির উজ্জ্বলতা বজায় রাখবেন
শাড়ি বাড়িতেই পরিষ্কার করুন বা ড্রাই ক্লিনিং-এ পাঠান, বেশীর ভাগ সময়েই এর রঙ ফেড হয়ে যেতে দেখা যায়| তবে আপনি কিন্তু এর উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে পারেন যাতে প্রতিবার পরার পরেও তা নতুনের মত গর্জাস থাকে|
পদ্ধতি
একটি পরিষ্কার বালতিতে জল নিয়ে তাতে ডিস্টিলড হোয়াইট ভিনিগার মেশান| ১ লিটার জল হলে ১ চামচ ভিনিগার মেশাতে হবে| অর্থাৎ রেশিও হওয়া উচিত ১:১| এবার আপনার শাড়ি ওতে চুবিয়ে ৩-৫ মিনিট রেখে বের করে কল চালিয়ে জলের নীচে ধুয়ে ফেলুন যাতে ভিনিগারের গন্ধ চলে যায়| খুব সাবধানে জল ঝরিয়ে নিন| এবার একটি বড় লম্বা তোয়ালে দিয়ে শাড়িটি মুড়িয়ে রেখে অতিরিক্ত জল শুষে নিন| এবার সোজা ভাবে ছায়ায় মেলে শুকিয়ে নিন| অল্প ভেজা বা ড্যাম্প অবস্থায় শাড়িটি ইস্ত্রি করে নিন|
আপনার সিল্কের শাড়িগুলির যত্ন নিতে এই ৪ টি বিষয় কিন্তু মাথায় রাখতেই হবে| তাহলেই আপনার শাড়িগুলির গ্ল্যামার এবং তা পরে আপনার গ্ল্যামার চোখে পড়ার মতো হবে! তাই দেরী করছেন কেন! এইসব টিপসগুলি মেনে এখুনি যত্ন নেওয়া শুরু করে দিন|