আমাদের জীবনকে সহজ করতে প্রযুক্তির বিকল্প নেই। প্রতিদিন বাজার করার ঝামেলা এড়াতেই প্রযুক্তি আমাদের দিয়েছে রেফ্রিজারেটর। ফ্রিজ খাবার রেখে দিনের পর দিন আমরা তাজা মাছ-মাংস খেতে পারি।
কিন্তু ফ্রিজে রাখলে কতদিন সেগুলো ভালো বা খাওয়ার উপযোগী থাকবে? এজন্য কি কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন রয়েছে? চলুন জেনে নেয়া যাক।
সঠিক নিয়মে আর নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় যদি মাংস রাখা হয় তবে সেগুলো অনেকদিন ভালো থাকবে। প্রথমতঃ মাংস তাজা থাকা অবস্থায়ই ফ্রিজে ঢুকিয়ে ফেলুন। কারণ তাজা অবস্থাতেই সংরক্ষণ করা না হলে স্বাদ এবং উপযোগ দুটোই হেরফের ঘটে।
দ্বিতীয়তঃ তাজা মাংস অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল প্যাক বা প্লাস্টিক (পলিথিন) থলেতে ভালো করে মুড়িয়ে ফ্রিজে রাখলে সেটা অনেকদিন পর্যন্ত তাজা এবং সুস্বাদু থাকবে। মোড়ানোর পরে প্যাকের গায়ে দিন-তারিখ লিখে রাখুন।
সংরক্ষিত মাংস জাতীয় খাদ্যদ্রব্য সঠিকভাবে ফ্রিজে সংরক্ষণ করার জন্য একটি ন্যূনতম তাপমাত্রার দরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘শূণ্য ডিগ্রি’ ফারেনহাইট তাপমাত্রায় সংরক্ষিত খাদ্যদ্রব্য অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত খাওয়ার উপযোগী থাকে।’ যদিও ‘খাওয়ার উপযোগী’ আর ‘খেতে সুস্বাদু’ ব্যাপার দুটির মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।
সাধারণত রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষিত খাদ্যদ্রব্য পঁচে না গেলেও একটা নির্দিষ্ট সময় পরে খাবারগুলো স্বাদ এবং উপযোগিতা হারায়।
ফ্রিজে খাবার সংরক্ষণের সময়সীমা:
মাংস (গরু, খাসি, ভেড়া ইত্যাদি) : খাদ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, রেফ্রিজারেটরে রাখলে কাঁচা মাংস- চার মাস থেকে এক বছর, চাপ- চার থেকে ছয় মাস, রোস্ট বা তেলে ভাজা মাংস– চার থেকে বার মাস এবং সসেজ এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।
মুরগির মাংস : মুরগির মাংস সাধারণত রেফ্রিজারেটরের মধ্যে এক বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। তবে সংরক্ষণের নয় মাসের মধ্যে খেয়ে ফেলাই উত্তম।
মাছ : যেকোনো ধরনের মাছ রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণের ব্যাপারে প্রথমে খেয়াল করতে হবে যে মাছটা কতটা চর্বিযুক্ত। স্বাদ এবং উপযোগ বজায় রাখতে হলে কম ফ্যাটযুক্ত মাছ সাধারণত ছয় মাস পর্যন্ত এবং বেশি ফ্যাটযুক্ত মাছ দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
রান্না করা মাছ বা মাংস : কাঁচা মাছ-মাংসের মতো রান্না করা মাছ-মাংস খুব বেশি সময় ধরে ফ্রিজে রাখা যায় না। গরু, ছাগল কিংবা ভেড়ার রান্না করা মাংস সাধারণত দুই থেকে তিন মাস এবং রান্না করা মুরগির মাংস সর্বোচ্চ চার মাস পর্যন্ত ফ্রিজে ভালো থাকে।
ফ্রিজে সংরক্ষিত মাছ-মাংসের বরফ গলানোর পদ্ধতি:
প্রথমে রেফ্রিজারেটর সুইচ অফ করে নিন। ভেতরে জমা বরফ হালকা হয়ে গেলে প্যাকেট থেকে ছাড়িয়ে ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। বরফ গলানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় নিন এবং প্রতি আধঘণ্টা পর পর পানি পরিবর্তন করুন।
বাইরের দিকের বরফ গলে গেলেই খাওয়া কিংবা রান্না করা আরম্ভ করবেন না, কারণ এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। সর্বোপরি সংরক্ষিত খাবারের ঘ্রাণ যদি ঠিক মনে না হয় তবে সেটা না খাওয়াই ভালো।