এক দম্পতির রহস্যমৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল উত্তর ২৪ পরগনার বরানগরে। প্রাথমিক তদন্তের পর অনুমান, স্ত্রীকে খুন করে স্বামী আত্মঘাতী হয়েছেন। আবার যুগলে আত্মঘাতী হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে ঘনীভূত রহস্য। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বরানগর থানার পুলিস।
বরানগরের নিরঞ্জন সেন নগর এলাকায় থাকতেন সুদীপ দেব। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ৭ বছর আগে সঙ্গীতাকে বিয়ে করেন সুদীপ। দম্পতির সাড়ে ৩বছরের একটি পুত্রসন্তানও রয়েছে। কিন্তু, বিয়ের পর থেকেই অশান্তির সূত্রপাত। স্বামী সুদীপের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এমনটাই সন্দেহ করতেন সঙ্গীতা। আর এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীতে অশান্তি লেগেই থাকত।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছুতেই বনিবনা হত না। দুজনের মধ্যে বিবাদ মেটানোর জন্য বহুবার পাড়াতে সালিশি সভা ডেকে দুজনকে মুখোমুখি বসানো হয়েছিল। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। বৃহস্পতিবার রাতেও সুদীপ আর সঙ্গীতাকে নিয়ে সালিশি সভা বসান পাড়া প্রতিবেশীরা। ঠিক হয়, দুজনে একবাড়িতে একসঙ্গে থাকলেও, একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করবেন না। যে যার মতো আলাদা আলাদা রান্না করে খাবেন।
এরপরই সঙ্গীতা বাপের বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু সঙ্গীতাকে ফের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান সুদীপ। বৃহস্পতিবার রাতে দুজনে একসঙ্গে রাতের খাবারও খান। কিন্তু , এরপরই এদিন সকালে ঘরের মধ্যে থেকে দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সকাল ১০টা বেজে গেলেও কেউ দরজা না খোলায় সন্দেহ হয়। ঘরের ভিতর থেকে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ আসছিল। তারপরই দরজা ভেঙে দেখা যায়, খাটের তলায় পড়ে রয়েছে সঙ্গীতার নিথর দেহ। অন্যদিকে সিলিং ফ্যান থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় সুদীপের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
প্রতিবেশীরাই পুলিসে খবর দেন। খবর পেয়ে বরানগর থানার পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। প্রাথমিকভাবে অনুমান, সঙ্গীতাকে শ্বাসরোধ করে খুনের পর আত্মঘাতী হয়েছেন সুদীপ। তবে খাবারে বিষ মেশানো হয়েছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিস। পাশাপাশি, উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না অশান্তির জেরে যুগলে আত্মঘাতী হওয়ার সম্ভাবনাও।