বছর তিনেক আগে দাদার মৃত্যু হয়েছে। তারপর থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ ছাত্রীর। মৃত দাদাকে ফিরে পেতেই কি সূচ খেত অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী? কৃষ্ণনগর অক্ষয় বিদ্যাপীঠের ছাত্রী অপরূপা বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই মনে করছেন চিকিত্সক, তদন্তকারীরা। এই ঘটনার নেপথ্যে জোরালো হচ্ছে তন্ত্র যোগও।
বয়স ১৪ বছর, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অপরূপার গলায় সূচ বেঁধে থাকার ঘটনায় দুটি বিষয় ভাবাচ্ছে চিকিত্সকদের। উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, তিন বছর আগে অপরূপার দাদার মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই তার আচরণে বদল আসে। সবার থেকে নিজেকে আলাদা করে রাখতে ভালোবাসে সে। দাদাকে হারানোয় মনকষ্টে ভুগছে অপরূপা। সেক্ষেত্রে দাদাকে ফিরিয়ে আনতে অপরূপা তন্ত্রসাধনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল নাকি, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
দ্বিতীয়ত, অপরূপা ‘ব্লু হোয়েল’ জাতীয় কোনও মারণ খেলার নেশায় জড়িয়ে পড়েছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখছেন চিকিত্সকরা।
চিকিত্সকদের দাবি, অপরূপার গলায় জোর করে সূঁচ কেউ ঢুকিয়ে দেননি। সূঁচগুলি যেভাবে অপরূপার গলায় বিঁধে রয়েছে, তা দেখে মনে করা হচ্ছে, সূচগুলি স্বেচ্ছায় গিলেছে অপরূপা। একসঙ্গে ১০টি সূচ খায়নি অপরূপা। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক দিন একটি-একটি করে সূচ খেয়েছে অপরূপা।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কেন সূচ খেতে গেল ১৪ বছরের এই কিশোরী?
এর প্রশ্নের উত্তর চিকিত্সক তো দূরস্ত, খোদ কিশোরীর বাবা-মা-ই জানেন না। হতে পারে, দাদাকে হারানোর পর নিজেকে কষ্ট দিতেই এই কাজ করেছে কিশোরী। মঙ্গলবার এনআরএস-এ অপরূপার গলার অস্ত্রোপচার করা হয়। এখনও পর্যন্ত দশটির মধ্যে ৭টি সূচ বার করা সম্ভব হয়েছে। জানা গিয়েছে, বাকি ৩টি সূচ গলার পেশির মধ্যে আটকে রয়েছে। ছাত্রী সুস্থ হয়ে ওঠার পরই এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে বলে আশাবাদী সকলে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গলায় ব্যাথা নিয়ে অপরূপাকে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে আসে তার বাবা-মা। জানা যায়, গত ন’দিন ধরে গলা ব্যাথায় ভুগছিল সে। ঠান্ডা লেগেছে বলে প্রথমে স্থানীয় চিকিত্সককে দেখান তাঁরা। কিন্তু তাতে সমাধান হয়নি। রবিবার স্কুল থেকে ফিরে বাড়িতে খেতে বসে অজ্ঞান হয়ে যায় অপরূপা। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণনগর হাসপাতালে। সেখান থেকে তাকে এনআরএস-এ স্থানান্তরিত করা হয়। অপরূপার গলার ডিজিট্যাল এক্স-রে করার পরই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। দেখা যায়, গলায় বিঁধে রয়েছে ১০টি সূচ।