করোনার থাবায় গোটা বিশ্ব গত এক বছর ধরেই প্রায় ছন্দ হারিয়েছে। সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা গুনতে প্রতিদিন ব্যস্ত দেশগুলি। শরীরে পুরনো রোগ বাসা বেঁধে থাকলে করোনায় মৃত্যুর সম্ভাবনা যে বেশি তাও বিশ্বের বিশেষজ্ঞ মহল জানিয়ে আসছেন। বাস্তবে সেই ছবিই ধরা পড়ছে।
বিশ্বজুড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ এই ভাইরাসঘটিত রোগের শিকার হয়েছেন। অত্যন্ত সংক্রামক হলেও এর মারণ ক্ষমতা তুলনায় অনেকটাই কম। তবে শরীরে দীর্ঘদিনের পুরনো রোগ থাকলে অবশ্য অন্য কথা। তখন করোনা সংক্রমণ প্রাণঘাতী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দৃঢ় হয়।
এক্ষেত্রে কোমর্বিডিটি শব্দটা এখন বহুলাংশে ব্যবহৃত হচ্ছে। যে যে রোগ থাকলে করোনায় মৃত্যুর সম্ভাবনা সব থেকে বেশি সেগুলি সম্বন্ধে খুব পরিস্কার ধারনা তৈরি হচ্ছিল না বিশেষজ্ঞদেরও। তাঁরাও কার্যত কেস স্টাডির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তাই শুরুর দিকে নানান অসুখকেই কোমর্বিডিটি থেকে মৃত্যুর আওতাভুক্ত করছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এবার তা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে প্রধানত ৪টি অসুখ করোনা সংক্রমিতদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে।
গবেষকদের মতে এই ৪টি অসুখের একটি বা একাধিক অসুখ কারও শরীরে দীর্ঘদিন রয়েছে এমনটা হলে তাঁদের করোনায় মৃত্যুর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
এগুলি হল ক্যান্সার, কিডনির দীর্ঘস্থায়ী অসুখ, ডায়াবেটিস ও হাইপার টেনশন। তবে এই তালিকায় সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতী হিসাবে কিডনির অসুখকেই চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বের ১৪টি দেশের ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮৫৯ জন করোনা আক্রান্তের ওপর গবেষণা চালানো হয়। তা থেকেই উঠে আসে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
যেসকল ব্যক্তি দীর্ঘস্থায়ী কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তাঁদের জন্যই কোভিড-১৯ সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতী হয়েছে। এছাড়া হাইপার টেনশন, স্থূলতা বা ওবেসিটি আর ডায়াবেটিস, এই ৩টি অসুখে মৃত্যু সবচেয়ে বেশি পরিমাণে দেখা গেছে আক্রান্তদের মধ্যে। তবে ওবেসিটি বা স্থূলতা অতটাও ভয়ংকর নয় করোনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে।
ডায়াবেটিস বিশ্বের একটি বড় সমস্যা। ভারতে এর প্রভাব অত্যন্ত চিন্তাজনক। আজকাল বহু পরিবারে ডায়াবেটিস রোগী খুঁজে পাওয়া যায়। ডায়াবেটিস অত্যন্ত ক্ষতিকারক। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে দুর্বল করে তাদের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
এই অসুখে আক্রান্ত যাঁরা তাঁদের বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ এখন আবার করোনা রয়েছে, যা ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের প্রাণ পর্যন্ত কেড়ে নিতে অনুঘটকের কাজ করতে পারে। গবেষণায় উঠে আশা তথ্য থেকে কিডনির সমস্যাও এখন চিন্তায় ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা