সত্যজিৎ রায়ের ‘খগম’ গল্পের কথা মনে পড়ে? সেই যে, এক ব্যক্তি এক সাধুর পোষা সাপকে মেরে ফেলায় সাধুর অভিশাপে নিজেই হয়ে গিয়েছিলেন সাপ। বাঙালি পাঠকের কাছে এ গল্পকে নতুন করে মনে করানোর প্রয়োজনও মনে হয় নেই।
কিন্তু সে তো নিছকই ফ্যান্টাসি গল্প। আমেরিকার রিচার্ড হার্নান্ডেজের জীবনটা কিন্তু গল্প নয়। যদিও তা হার মানায় কল্পনাকে। তিনি মানুষ থেকে হয়ে গিয়েছেন ড্রাগন! হ্যাঁ, তাঁর দাবি তেমনটাই।
দাবির সপক্ষে চোখের সামনে তিনি তুলে ধরেন তাঁর চেহারা। শিং, সবুজ চোখ শরীরময় ড্রাগনসুলভ নকশা আর… অবশ্যই চেরা জিভ! কোন সাধুর অভিশাপে নয়, নিজের মনের খেয়ালেই খোদার উপরে এই খোদকারী করেছেন রিচার্ড। রিচার্ড নন, এখন অবশ্য তিনি তিয়ামত বাফোমেট মেডুসা। হ্যাঁ, লিঙ্গও বদলে ফেলেছেন তিনি।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ১৯৯৭ সালের আগে পর্যন্ত জীবনটা ছিল প্রাচুর্যে ভরা। যদিও খুব অল্প বয়সেই মা এবং সৎ বাবা তাঁকে ফেলে চলে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে নাকি একজোড়া ডায়মন্ড র্যাটেল সাপকে নিজের মা-বাবা বলে মেনে নিয়েছিলেন তিনি। হ্যাঁ, এটুকু থেকেই বুঝে নেওয়া যায়, ভিতরে ভিতরে এক অস্বাভাবিকতার বীজ তখন থেকেই প্রোথিত ছিল তাঁর ভিতরে।
তবুও পরবর্তী সময়ে জীবন কিন্তু বেশ ভাল ভাবেই কাটছিল তাঁর। বিশেষ করে আর্থিক ও সামাজিক প্রতিপত্তির দিকটা। আমেরিকার একটি জনপ্রিয় ব্যাঙ্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। এর পরই ছন্দপতন। রিচার্ড জানতে পারেন তিনি এইচআইভি পজিটিভ!
ব্যাস! আবার জীবনে ফিরে এল অস্বাভাবিকতার রং। চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি। ঠিক করে জীবনটাকে এবার বইয়ে দেবেন অন্য খাতে। প্রথমে বদলে ফেলেন নিজের লিঙ্গ পরিচয়। তার পর মানুষ থেকে হয়ে উঠতে থাকেন ড্রাগন। আসলে অন্য কোনও প্রাণী হয়েই মৃত্যুকে আপন করে নেওয়াই মনস্থ করেছেন রিচার্ড। মানুষ হিসেবে মরাটা তাঁর একেবারেই নাপসন্দ।
নিজেকে ড্রাগন হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি খরচ করেছেন প্রায় ৩৯ লক্ষ টাকা। নাক ও কানে অস্ত্রোপচারের পাশাপাশি স্থায়ী ট্যাটুও করিয়েছেন শরীরে। চোখের মণির রং করে ফেলেছেন সবুজ। অস্ত্রোপচার করিয়ে মাথায় তৈরি করেছেন শিং। দাঁতও তুলে ফেলেছেন। আর হ্যাঁ, জিভও চিরে ফেলেছেন অস্ত্রোপচার করিয়ে।
এক ভয়াল চেহারা ধারণ করেছেন রিচার্ড ওরফে মেডুসা। নিজেকে তিনি বলেন ‘ড্রাগন লেডি’। নিজের রূপান্তরে তিনি অবশ্য এখনও খুশি নন। জানিয়েছেন আরও ২৬ লক্ষ টাকা খরচ করিয়ে তিনি নিজেকে ড্রাগন হিসেবে আরও নিখুঁত করে গড়ে তুলতে চান।
সূত্র: এবেলা