যে কোনো অঙ্গের মতোই কিডনির সুরক্ষায়ও বিশেষ কিছু খাবার দরকার। স্বাস্থ্যবান হৃদপিণ্ডের মতোই একটি স্বাস্থ্যবান কিডনি থাকাটাও জরুরি। কিডনিদের প্রধান কাজ হলো দেহ থেকে বর্জ্য বের করে দেওয়া। এবং ক্ষতিকর টক্সিন বা বিষ অপসারণের মাধ্যমে দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেওয়া।
এছাড়াও কিডনি ইলেকট্রোলাইটস এবং অন্যান্য তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে। এমনই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গকে সুস্থ রাখার জন্য সঠিক কিডনির জন্য উপকারী খাদ্যাভ্যাসও জরুরি। এখানে রইল এমন ১২টি খাদ্যের তালিকা যেগুলো কিডনির সুরক্ষায় নিয়মিত খেতে হবে।
১. বাধাকপি:-
এতে আছে ফাইটোকেমিক্যালস, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, এবং ভিটামিন কে এবং আঁশ ও ফলিস এসিড। এই সবগুলো উপাদান ক্ষতিগ্রস্ত কিডনির মেরামত এবং কিডনিকে সচল রাখতে সহায়তা করে।
২. মাছ:-
এতে থাকা ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড দেহের প্রদাহ কমায় এবং কিডনিকে সুরক্ষা দেয়। যাদের কিডনিতে সমস্যা হচ্ছে তাদের বেশি বেশি মাছ খাওয়া উচিত।
৩. বেরি:-
বেরিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন সি, খাদ্য আঁশ এবং ফোলেট। স্ট্রবেরি, ক্র্যানবেরি, র্যাস্পবেরি এবং ব্লুবেরি কিডনির জন্য বেশ উপকারী বলে বিবেচিত হয়। বেরিতে আছে প্রদাহরোধী এবং পঁচনরোধী উপাদান এবং মূত্রাশয়ের কার্যক্রমেরও উন্নতি ঘটায়।
৪. রসুন:-
রসুনে আছে পঁচনরোধী এবং জমাটরোধী উপাদান যা কার্যকরভাবে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করে। রসুন কিডনিকে ক্ষতিকর ধাতব পদার্থের সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
৫. অলিভ অয়েল:-
সকলেই জানেন অলিভ অয়েল হার্টের জন্য ভালো। কিন্তু সেটি যে কিডনির জন্যও উপকারী তা জানেন কি? এতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রদাহরোধী ফ্যাটি এসিড যা জারণ কমিয়ে কিডনিকে সুরক্ষিত রাখে। সালাদে বা রান্নায় এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
৬. ডিমের সাদা অংশ:-
কিডনি রোগে আক্রান্তদেরকে ডিমের অংশ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ ডিমের সাদা অংশে ফসফরাসের পরিমাণ কম থাকে এবং ভালো মানের প্রোটিন বেশি থাকে। এছাড়া এতে আছে অ্যামাইনো এসিড যা কিডনির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার জন্য জরুরি। তবে কিডনির রোগ হলে ডিমের কুসুম না খাওয়াই ভালো।
৭. লাল ক্যাপসিকাম:-
এতে পটাশিয়াম কম, কিন্তু উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এ, বি, সি এবং বি৬ আছে। এটি ফলিক এসিড এবং খাদ্য আঁশেরও ভালো উৎস। যেগুলো কিডনিকে সচল রাখার জন্য জরুরি।
৮. আপেল:-
কোষ্ঠ্য কাঠিন্য দূর করে, হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। এছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা পঁচনরোধী উপাদান এবং ভিটামিন থাকায় আপেল কিডনির স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। এছাড়া রক্তে কোলোস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে এবং পেশাব পরিষ্কার রাখতেও বেশ কার্যকর আপেল।
৯. লাল আঙ্গুর:-
লাল আঙ্গুরে আছে এমন এসিড যা কিডনির এবং পেশাবের নালির জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণুদের মেরে ফেলে। এছাড়াও মাংসপেশিদেরকে শিথিল করা এবং রক্তের প্রবাহ উন্নত করতেও বেশ কার্যকর লাল আঙ্গুর।
১০. লেবুর রস:-
লেবুতে যে এসিড উপাদান আছে তা কিডনিতে জমা হওয়া পাথর ভাঙ্গতে বেশ কার্যকর। লেবুতে যে সাইট্রাস উপাদান আছে তা কিডনিতে থাকা ক্রিস্টালদের পরস্পরের জোড়া লাগতে বাধা দেয়।
১১. ফুলকপি:-
এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফোলেট এবং খাদ্য আঁশ। এটি লিভারকে দেহে জমা হওয়া খাদ্যবিষ অপসারণেও সহায়তা করে। এছাড়া কোষের ঝিল্লি সংরক্ষণেও সহায়তা করে।
১২. পেঁয়াজ:-
পেঁয়াজে আছে প্রচুর পরিমাণে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা পঁচনরোধী উপাদান। যা কিডনিকে বিষমুক্তকরন এবং পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। এতে পটাশিয়াম, ক্রোমিয়াম ইত্যাদি কম থাকে। ফলে পেঁয়াজ চর্বি, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেটস হজমে সহায়তা করে।