শরীর থাকলে ব্যথাও থাকবে। আঘাত বা কোনও অসুখ-জনিত ব্যথা নিয়ে এই প্রতিবেদন নয়। এমন কিছু ব্যথা আমরা সকলেই অনুভব করি, যাদেরকে ঠিক ‘সকারণ’ বলা যাবে না। এই ব্যথা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হঠাৎই আসে এবং হঠাৎই এরা মিলিয়ে যায়।
আমরা এদের চিকিৎসার কথা ভেবে ওঠার আগেই এরা লোপ পায় বলে এদের নিয়ে তেমন মাথা ঘামানোর সময় বা সুযোগ আমাদের জীবনে ঘটে না। কিন্তু মনোবিদরা জানাচ্ছেন, এই ব্যথাগুলির অন্য তাৎপর্য রয়েছে।
ট্রমা ও অবসাদ সংক্রান্ত মনোরোগের বিশেষজ্ঞ এবং ‘সাইকোলজি টুডে’ পত্রিকার নিয়মিত কলাম লেখক সুজান ব্যাবেল এক আশ্চর্য তত্ত্ব পেশ করেছেন সম্প্রতি। তাঁর মতে এই আচমকা ব্যথার পিছনে গভীর কারণ রয়েছে। এবং কারণগুলি মূলত আবেগ-জাত। বেশ কিছু আবেগ ও অনুভূতিই তীব্র আকার নেয় এই ব্যথাগুলিতে। এগুলি আসলে সেই অনুভূতিগুলিরই প্রকাশ।
দেহের ১২টি অঙ্গের কথা বলেছেন সুজান ব্যাবেল। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন কোন অঙ্গে আচমকা ব্যথার আবেগ-ঘটিত উৎস কী।
• মাথা— মাথা ব্যথা বা মাইগ্রেনের পিছনে কাজ করে স্ট্রেস বা অতিরিক্ত মানসিক চাপ।
• ঘাড়— এই এলাকায় নিয়মিত আচমকা ব্যথার অর্থ কোনও কিছুকে ক্ষমা না করতে পারা।
• কাঁধ— অতিরিক্ত মানিসক ভার থেকে এই অঞ্চলে আচমকা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। বেশি দায়িত্ব হাতে এলেও ঘাড়ে ব্যথা অনুভূত হয়।
• পিঠের উপর দিক— যাঁদের আবেগ শেযার করার জায়গা নেই তাঁরাই এই ব্যথায় বেশি ভোগেন। একাকীত্ববোধ থেকেও এই ব্যথা অনুভূত হয়।
• পিঠের নীচের দিক— আর্থিক দুশ্চিন্তা, ঋণ ইত্যাদির কারণে এই ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
• বাহু ও কনুই— যাঁদের চিন্তা অতিরিক্তমাত্রায় অপরিবর্তনীয়, কঠোর, তাঁরাই এখানকার ব্যথায় বেশি ভোগেন।
• হাতের তালু— সামাজিক মেলামেশা কমে এলে, নিজেকে বিচ্ছিন্ন বলে বোধ হলে এখানে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
• নিতম্ব— কোনও বিশেষ সিদ্ধান্তকেই আঁকড়ে ধরতে যাঁরা ভালবাসেন, তাঁদের এই স্থানে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক।
• হাঁটু— নিজেকে অতিমাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভাবা, তুমুল অহমিকাবোধ থেকে জন্ম নিতেই পারে হাঁটুর ব্যথা।
• কবজি— এই অঙ্গের ব্যথার পিছনে কাজ করে তীব্র ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা।
• গোড়ালি— জীবনে একঘেয়ে লাগলে এবং সেই বোধ তীব্র আকার নিলে গোড়ালি ব্যথা হতে পারে।
• পায়ের পাতা— পায়ের পাতায় অসহ্য ব্যথা অবসাদের লক্ষণ। অবসাদ গভীর হলে এরকম ব্যথা অনুভূত হতে পারে।