আয়োজন সামান্য, কিন্তু খেয়ে তারিফ করবেন যে কেউ। জেনে নিন ফারাহ তানজীন সুবর্ণার কাছ থেকে ৭ রকমের ভর্তার রেসিপি!
১) আলু ভর্তার উপকরণ
- আলু – ২ টা (বড়)
- পেঁয়াজ – ১ টা (কুঁচি)
- শুকনা মরিচ – ৪/৫ টা (সরিষার তেলে ভেজে নেওয়া)
- লবণ – স্বাদ মত
- সরিষার তেল বা আচারের তেল – প্রয়োজন মত
প্রস্তুত প্রণালী
আস্ত আলু খোসা সহ সেদ্ধ করে নিন। পানি ঝরিয়ে একটু ঠাণ্ডা হতে দিন। তারপর খোসা ছাড়িয়ে নিন। সরিষার তেলে শুকনা মরিচ মচমচে করে ভেজে নিন। তারপর একটা পাত্রে কুঁচি করে কাটা পেঁয়াজ, ভাজা শুকনা মরিচ (বিচি ফেলে নেবেন) আর লবণ দিয়ে ভাল করে মেখে নিন। তারপর আলু-ও যতটা সম্ভব ভাল করে চটকে মাখিয়ে নিন। পেঁয়াজ, মরিচ, আলু একসাথে মাখা হয়ে গেলে পছন্দ এবং পরিমাণ মত সরিষার বা আচারের তেল মিশিয়ে পরিবেশন করুন।
২) ডাল ভর্তার উপকরণ
- মশুরের ডাল – ১৫০ গ্রাম
- পেঁয়াজ – ১ টা (কুঁচি)
- রশুন – ৩ কোয়া
- কাঁচা মরিচ – ৪/৫ টা
- ধনেপাতা কুঁচি – ১ চা চামচ
- লবণ – স্বাদ মত
- সরিষার তেল বা আচারের তেল – প্রয়োজন মত
প্রস্তুত প্রণালী
মশুর ডাল অল্প পানি, অল্প লবণ, কাঁচা মরিচ আর রশুনের কোয়া দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। একটা পাত্রে পেঁয়াজ কুঁচি, লবণ আর ধনেপাতা কুচি ভাল ভাবে মেখে নিয়ে তাতে সেদ্ধ ডাল দিয়ে মসৃণ করে মেখে নিতে হবে। তারপর পছন্দ এবং পরিমাণ মত সরিষার বা আচারের তেল মিশিয়ে নিলেই ভর্তা তৈরি। আপনি চাইলে কাঁচা মরিচের বদলে ভাজা শুকনা মরিচ আর কাঁচা পেঁয়াজের পরিবর্তে সরিষার তেলে ভেজে নেওয়া পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারেন।
৩) বেগুন ভর্তার উপকরণ
- বেগুন – ২ টা (আধা কেজি)
- পেঁয়াজ – ১ টা (কুঁচি)
- রশুন – ২ কোয়া
- শুকনা মরিচ – ৫/৬ টা (সরিষার তেলে ভেজে নেওয়া)
- ধনেপাতা কুঁচি – ১ চা চামচ (ইচ্ছে হলে)
- লবণ – স্বাদ মত
- সরিষার তেল বা আচারের তেল – প্রয়োজন মত
প্রস্তুত প্রণালী
বেগুনের নিচের দিকে ত্রিভুজাকারে কেটে টুকরাটি বের করে নিয়ে সেই ফাঁকা অংশ দিয়ে ১ কোয়া রশুন চেপে ভরে দিয়ে আবার বেগুনের টুকরোটি ঢুকিয়ে দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিন। তারপর বেগুনে হাল্কা করে তেল মেখে তাওয়ার উপরে দিয়ে পাশ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বেগুন গুলো ভাল করে পুড়িয়ে নিন। এরপর পোড়া বেগুনের খোসা ছাড়িয়ে নিন। একটা পাত্রে তেলে ভাজা শুকনা মরিচ, পেঁয়াজ আর লবন ভাল করে মেখে তারসাথে পোড়ানো বেগুন আর রশুন-ও ভাল ভাবে ভর্তা করে নিন। চাইলে ধনেপাতা কুঁচি মেশাতে পারেন। পরিশেষে ইচ্ছানুযায়ী সরিষার বা আচারের তেল মেখে পরিবেশন করুন পোড়া বেগুনের ভর্তা।
৪) চিংড়ি শুঁটকি ভর্তা উপকরণ
- চিংড়ি শুঁটকি – ২০০ গ্রাম
- পেঁয়াজ – ১ টা (বড় আকারের, মোটা করে চাক করে কেটে নেওয়া)
- শুকনা মরিচ – ৪/৫ টা
- রশুন – ৩ কোয়া
- লবণ – স্বাদ মত
- তেল – ২ টেবিল চামচ
প্রস্তুত প্রণালী
চিংড়ি শুঁটকি ভাল করে ধুয়ে নিন যাতে বালু না থাকে। তারপর প্যানে তেল দিয়ে শুকনা মরিচ ভেজে তুলে রাখুন। তারপর মোটা করে কাটা পেঁয়াজ আর আস্ত রশুনের কোয়া গুলো ভেজে তুলে রাখুন। তারপর অই একই প্যানেই চিংড়ি শুঁটকি গুলো মচমচে করে ভেজে নিন। তারপর সব ভাজা উপকরণ আর লবন একসাথে পাটায় বা মিক্সিতে বেটে নিলেই ভর্তা তৈরি।
৫) টমেটো ভর্তার উপকরণ
- টমেটো – ৩ টা (বড়)
- পেঁয়াজ – ১ টা (কুঁচি)
- কাঁচা মরিচ – ২/৩ টা
- ধনেপাতা কুঁচি – ১ চা চামচ
- লবণ – স্বাদ মত
- সরিষার তেল – প্রয়োজন মত
প্রস্তুত প্রণালী
ফুটন্ত পানিতে ১০ মিনিট টমেটো সেদ্ধ হতে দিন। তারপর পানি থেকে তুলে খোসা ছাড়িয়ে নিন। তারপর হাত দিয়ে ভাল করে ভেঙ্গে নিন। যদি একটু শক্ত থেকে থাকে তবে ছুরি দিয়ে কুঁচি করে নিন। তারপর প্যানে তেল দিয়ে টমাটো আর লবন দিয়ে ভাল করে নেড়ে পানি শুকিয়ে নামিয়ে নিন। তারপর একটি পাত্রে কুচনো পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ আর ধনেপাতা কুঁচি ভাল করে মেখে টমেটো আর সরিষার তেল দিয়ে আর একটু মেখে নিন। ব্যাস, পান্তা কিংবা গরম ভাতের থালা নিয়ে বসে যান।
৬) ধনেপাতা ভর্তার উপকরণ
- ধনেপাতা – ২ আঁটি
- কাঁচা মরিচ – ২/৩ টা
- রশুন – ২ কোয়া
- কাঁচা আম – অল্প (চাইলে তেঁতুল-ও দিতে পারেন)
- চিনি – ১ চিমটি
- লবণ – স্বাদ মত
- সরিষার তেল – প্রয়োজন মত
প্রস্তুত প্রণালী
চিনি বাদে বাকি সব উপকরণ চুলার আঁচ বাড়িয়ে খুব চটজলদি ভেজে নিন। বেশিক্ষণ চুলায় রাখবেন না, তাতে ধনেপাতার রঙ নষ্ট হয়ে যাবে। এরপর শিল পাটা বা মিক্সিতে এক চিমটি (প্রয়োজনে পরিমাণ একটু বাড়িয়ে দিতে পারেন) চিনি দিয়ে মসৃণ করে বেটে নিলেই হয়ে গেল ধনেপাতার ভর্তা। অনেকে না ভেজে উপরে উল্লিখিত কাঁচা উপকরণ দিয়েও এই ভর্তা করে থাকেন। কিন্তু সেটি ভর্তার চেয়ে চাটনি হিসেবে খেতেই বেশি ভাল লাগে।
৭) পেঁয়াজ-শুকনা মরিচের ভর্তার উপকরণ
- পেঁয়াজ – ১ টা (বড়, কুঁচি)
- শুকনা মরিচ – ৪/৫ টা (সরিষার তেলে ভেজে নেওয়া)
- লবণ – স্বাদ মত
- সরিষার তেল বা আচারের তেল – প্রয়োজন মত
প্রস্তুত প্রণালী
সরিষার তেলে শুকনা মরিচ মচমচে করে ভেজে নিন। তারপর একটা পাত্রে কুঁচি করে কাটা পেঁয়াজ, ভাজা শুকনা মরিচ (বিচি ফেলে নেবেন) আর লবণ দিয়ে ভাল করে মেখে নিন।
পোষ্টটি যদি আপনাদের ভালো লাগে, তবে শেয়ার করতে ভুলবেন না!