জীবনে একসঙ্গে পথ চলার শপথ করেছিল। স্বপ্ন দেখেছিল ঘর বাঁধার। কিন্তু ধোঁকা দিল সেই ‘ভীষণ ভরসা’র স্বপ্নের মানুষটাই। ভেঙে দিল বিশ্বাস। আর স্বপ্ন ভেঙে খান খান হতেই চরম সিদ্ধান্ত নিল প্রেমিকা। আত্মহত্যার চরম পথ বেছে নিল সে। ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ায়।
পুরুলিয়ার মফস্বল থানার নাডুরডি গ্রামে বাড়ি কলেজছাত্রীর। অভিযুক্ত প্রেমিক মৃত্যুঞ্জয় রায়ের বাড়ি পুরুলিয়া শহরের অলংগিডাঙায়। প্রায় তিন বছরের সম্পর্ক ছিল দুজনের। কিন্তু আচমকাই ছন্দপতন। প্রেমিকের স্বরূপ চেনার পরই হাতের শিরা কাটে ওই যুবতী। তারপর নিজের বাড়ির সামনেই একটি গাছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। এদিন সকালে উদ্ধার হয় ওই কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
পুলিস জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে ২ পাতা লম্বা সুইসাইড নোট লিখে রেখে গেছে ওই ছাত্রী। সুইসাইড নোটের লাইনে লাইনে প্রেমিক মৃত্যুঞ্জয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছে সে। এই ঘটনার জন্য প্রেমিক মৃত্যুঞ্জয়কেই দায়ী করেছে ওই তরুণী। সুইসাইড নোটে ওই ছাত্রী লিখেছে, প্রেমিক মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে দীর্ঘ তিন বছরের সম্পর্ক ছিল তার। এই তিন বছর সময়ে মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে বেশ কয়েকবার শারীরিকভাবেও ঘনিষ্ঠ হয় সে। তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু দিন কয়েক আগেই সে জানতে পারে, অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে মৃত্যুঞ্জয়।
সুইসাইড নোটে প্রেমিক মৃত্যুঞ্জয়কে প্রতারক বলে উল্লেখ করেছে ওই যুবতী। তার স্পষ্ট অভিযোগ, মৃত্যুঞ্জয় তাকে ঠকিয়েছে। সেই কারণেই সে নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে বলে জানিয়েছে। সুইসাইড নোটে ওই যুবতী মৃত্যুঞ্জয় ও তার বেশ কয়েকজন বন্ধু ও বান্ধবীর নামও উল্লেখ করেছে। সেইসব বন্ধুদের প্রত্যেকেই এই ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিস।
পুলিস জানিয়েছে, অভিযুক্ত মৃত্যুঞ্জয় রায় পেশায় টোটোচালক। এই ঘটনাটির তদন্তে ওই কলেজছাত্রীর সুইসাইড নোটটি-ই মোক্ষম প্রমাণপত্র। ওই সুইসাইড নোটের ভিত্তিতেই এগোবে তদন্ত। অন্যদিকে ওই কলেজছাত্রীর দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিস। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।