হাড়ের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে একটা না একটা ধারণা তো আছে আমাদের সবারই। আমরা সবাই জানি নিয়ম করে দুধ পান করতে হবে, প্রয়োজন হলে খেতে হবে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনেই এমন কিছু কাজে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ি যা আমাদের হাড় ক্ষয়ের কারণ হয়, অস্টিপোরোসিসের মত রোগ তৈরি করে। এই অভ্যাসগুলো আপনারও নেই তো?
আপনি অতিরিক্ত সময় শুয়েবসে কাটান
আপনি যদি নিষ্ক্রিয় জীবনযাপন করেন, তাহলে বাড়ে অস্টিপোরোসিসের ঝুঁকি। হাড় এক ধরণের জীবন্ত কলা, তাকে যত ব্যবহার করবেন, সে তত সুস্থ থাকবে। পেশিকে ব্যবহার করা না হলে যেমন তা সহজে দুর্বল হয়ে যায়, তেমনি হাড়কেও নিয়মিত ব্যবহার না করলে অস্টিপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়বে। ভারোত্তলনের মত ব্যায়ামগুলো হাড়ের জন্য উপকারী।
আপনি অতিরিক্ত প্রোটিন খান
শরীরের জন্য যতটা প্রয়োজন, তারচাইতে বেশী প্রোটিন খাওয়া আপনার জন্য বেশ খারাপ। কারণ হাই-প্রোটিন ডায়েটের কারণে কিডনি বেশী বেশী ক্যালসিয়াম শরীর থেকে বের করে দেয়। ক্যালসিয়াম যেহেতু হাড় গঠনের জন্য জরুরী, ফলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে।
আপনি লবণাক্ত স্ন্যাকস পছন্দ করেন
অতিরিক্ত লবণ বিভিন্ন কারণে আপনার জন ক্ষতিকর। হাড়ের জন্য এটা বেশ খারাপ। বেশী লবণ খেলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। আপনার কিডনি তখন রক্ত থেকে সোডিয়াম বের করে দেবার চেষ্টা করে এবং এর সাথে সাথে ক্যালসিয়ামও বের হয়ে যায়। জাপানের এক গবেষণায় দেখা যায়, মেনোপজের পর যেসব নারী অতিরিক্ত সোডিয়ামযুক্ত খাবার খান, তাদের নন-স্পাইনাল হাড় ফ্র্যাকচার হবার সম্ভাবনা অন্যদের চাইতে চারগুণ বেশী থাকে।
আপনি সূর্যের আলোয় যান না
ক্যালসিয়ামকে কাজে লাগাতে ভিটামিন ডি অপরিহার্য, সুতরাং কিছুটা সূর্যের আলো আপনার জন্য উপকারী। অনেকেরই নিয়মিত রোদে যাওয়া হয় না, শীতের সময়টায় তো আরো না। আপনার কতটা সময় রোদে থাকা দরকার, তার ব্যাপারে ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।
আপনি কফি ছেড়ে দেবার কথা ভাবতেও পারেন না
কফি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কী খারাপ, এ নিয়ে প্রচুর বিতর্ক আছে। তবে বয়স্ক নারীদের জন্য কফি খারাপই বটে। মেনোপজের পর শরীরে ইস্ট্রোজেনের অভাব থাকে। ফলে এ সময়ে বেশী কফি পান করলে তা হাড়ের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
হুট করে ওজন কমানো
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাটা সুস্থ থাকার জন্য জরুরী বটে। কিন্তু হুট করে অনেকটা ওজন কমিয়ে ফেলা আপনার হাড়ের জন্য হতে পারে মারাত্মক। আপনার বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই যদি ১৯ এর কম হয় অর্থাৎ উচ্চতার তুলনায় আপনার ওজন যদি বেশ কম হয় তাহলে আপনি অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকিতে আছেন। এর থেকে মাত্র এক ইউনিট বিএমআই বাড়লে এই ঝুঁকি কমে যায় ১২ শতাংশ। শুধু তাই নয়, ওজন অতিরিক্ত কম হলে আপনি পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারেন, এটাও আরেকদিক দিয়ে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
আপনি কোমল পানীয় পছন্দ করেন
কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে সোডা বা কোমল পানীয় হাড় ক্ষয়ের জন্য দায়ী। কিন্তু কেন, সেই কারণটা স্পষ্ট নয়। হয়তো এতে থাকা ক্যাফেইন এর জন্য দায়ী, অথবা এতে থাকা ফসফোরিক এসিড হয়তো ক্যালসিয়ামের অভাবের জন্য দায়ী। তবে এমনটাও হতে পারে যে, দুধ বা জুস (স্বাস্থ্যকর ক্যালসিয়ামের উৎস) এর বদলে কোমল পানীয় পান করার ফলেই ক্যালসিয়ামের অভাব হয় ও অস্টিওপোরোসিস দেখা যায়।