শিশুকে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ানো জরুরি।
একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর খাদ্যতালিকা বাড়ন্ত শিশুর জন্য খুব জরুরি।
বাড়ন্ত বয়সে শরীরে কিছু প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলের প্রয়োজন হয়।
তবে ব্যস্ত জীবনযাপনের জন্য বাবা-মা হয়তো শিশুকে স্বাস্থ্যকর খাবারগুলো খাওয়াতে পারেন না।
এতে শিশু ঝুঁকে পড়ে ফাস্টফুডের দিকে। আর ফাস্টফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার শিশুর শরীরে বাজে প্রভাব ফেলে।
এর থেকে বাজে চর্বি, চিনির মতো কিছু উপাদান ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না।
এতে শিশুর ওজন বেড়ে যায়। এটি পরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তাই এসব খাবার এড়িয়ে শিশুকে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ানো খুব দরকার।
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট টপটেন হোম রেমিডি জানিয়েছে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় কিছু খাবারের নামঃ
১. দুধ
দুধ শিশুদের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার।
ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দুধের দুটি জরুরি মিনারেল।
এগুলো স্বাস্থ্যকর হাড়, দাঁত, নখের জন্য জরুরি।
এছাড়া দুধের মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি, যেমন : প্রোটিন, জিংক, ভিটামিন এ, বি২ ও বি১২। রয়েছে আয়োডিন, নায়াসিন ও ভিটামিন বি৬।
প্রতিদিন দুই গ্লাস দুধ বাড়ন্ত বয়সের শিশুদের জন্য উপকারী।
যদি শিশু শুধু দুধ খেতে পছন্দ না করে, এর মধ্যে বাদাম দিতে পারেন।
এ ছাড়া দুধের তৈরি পুডিং বা কাস্টার্ড তৈরি করেও শিশুকে খাওয়ানো যেতে পারে।
২. ডিম
বাড়ন্ত বয়সের শিশুদের জন্য ডিম খুবই উপকারী একটি খাবার।
এতে রয়েছে উচ্চ পরিমাণ প্রোটিন। আর প্রোটিন বাড়ন্ত বয়সের শিশুদের জন্য জরুরি।
ডিমের মধ্যে রয়েছে বি ভিটামিন।
এটি মস্তিষ্কের গঠন এবং কার্যক্রমের জন্য দরকার।
পাশাপাশি ডিমের মধ্যে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন ডি, ফোলেট, জিংক, আয়রন ও সেলেনিয়াম। সপ্তাহে কয়েক দিন সকালের নাশতায় শিশুকে ডিম খাওয়াতে পারেন।
এটি শিশুকে সারা দিনের কাজ করার জন্য শক্তি জোগাবে।
৩. ব্রকলি
এই সবজি ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।
এটি দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে এবং কোষের ক্ষতি প্রতিরোধে কাজ করে।
এই স্বাস্থ্যকর সবজিটির মধ্যে রয়েছে আঁশ, যা বাড়ন্ত শিশুর জন্য জরুরি। রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিংক, পটাশিয়াম, ফলিক এসিড।
এটি বি ভিটামিনেরও ভালো উৎস; এতে স্নায়ু পদ্ধতি ভালো থাকে।
শিশুকে প্রতিদিন ব্রকলি খেতে দিন।
রান্না করে, সালাদের সঙ্গে বা জুস করেও খেতে দিতে পারেন।
আর যদি এগুলো খেতে পছন্দ না করে, স্যুপও খাওয়াতে পারেন।
৪. দই
দই শিশুর জন্য বেশ উপকারী।
এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হজমে সাহায্য করে।
এর মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন বি, জিংক ও ফসফরাস।
প্রতিদিন দই খেলে হাড় ভালো থাকে। এটি শক্তিও জোগান দেয়।
যদি দই খেতে শিশু পছন্দ না করে, এর মধ্যে ফল বা চকলেট চিপস দিতে পারেন।
৫. মিষ্টিআলু
বাড়ন্ত বয়সের শিশুর জন্য মিষ্টিআলু খাওয়া প্রয়োজন।
এর মধ্যে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। এতে আছে বেটা ক্যারোটিন ও ক্যারোটিনয়েড।
এগুলো চোখ ভালো রাখার জন্য দরকার। এ ছাড়া এটি ভিটামিন এ, সি ও ই, পটাশিয়াম, ফোলেট, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও আঁশের ভালো উৎস।
অনেক শিশু মিষ্টিআলু পছন্দ করে এর স্বাদের জন্য।
একে সেদ্ধ করে বা রান্না করে খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া মিষ্টিআলুর চিপস বানিয়েও শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
৬. মাছ
বাড়ন্ত শিশুর জন্য প্রোটিন জরুরি। মাছ প্রোটিনের ভরপুর একটি খাবার।
পাশাপাশি এর বড় সুবিধা হলো এটি লো ফ্যাট। এর মধ্যে ভিটামিন বি এবং প্রয়োজনীয় মিনারেল রয়েছে। পাশাপাশি মাছের মধ্যে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড।
এটি মস্তিষ্কের বৃদ্ধি ভালো করে এবং বিষণ্ণতা কাটাতে কাজ করে। স্যামন, টুনা শিশুদের জন্য বেশ ভালো মাছ।
এ ছাড়া ছোট ছোট মাছ, যেমন–মলা, ঢেলা ইত্যাদি শিশুর জন্য ভালো।