পৃথবীতে এমন কিছু ঘটনা ঘটে থাকে যেগুলি কিছু মানুষ পুরোপুরি আজগুবি ও কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দেয়।যেগুলি সত্যিই বিশ্বাস করা কঠিন।এরকই এক ঘটনা ঘটে সমাধি সৌধ মমিকে ঘিরে।
পূর্বে মিশরের রাজা রানীরা বিশ্বাস করতো মৃত্যুর পর আত্মা পুনর্জীবিত হয়ে পুনরায় শরীরে ফিরে আসে।তাই তারা সেই মৃতদৃহগুলি মমি করে রাখতো।এর ফলে মিশরে তৈরী হয় কিছু আশ্চর্যজনক পিরামিড।মমি আজও মানুষের কাছে বিস্ময়ের বিষয়।মমিকে নিয়ে আজও মানুষের মনে হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খায়।এই মমিকে ঘিরেই কিছু আশ্চর্যজনক ঘটনা।চলুন জেনে নিই সেই ঘটনাগুলো সম্পর্কে।
একসময় ফারাওদের বসবাস ছিলো।তারা অত্যন্ত প্রতাপশালী ছিলো।এদের আমরা ফারাউন জাতিও বলে থাকি।ফারাওদের মধ্যে তুতেন খামেন একটি অতি বিখ্যাত নাম।খুব অল্প বয়সে তার মৃত্যু ঘটে।মৃত্যুর তাকে একটি সোনার কফিনে রাখা হয় প্রচুর দামী দামী ধনরত্ন সহ।১৯২২ সালে মি. হাওয়ার্ড ও কর্ণারভান নামক দুজন প্রত্নতত্ত্ববিদ খুঁজে বের করেন সেই সোনায় মোড়া তুতেন খামেনের কফিন।এটি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ খোঁজগুলোর মধ্যে একটি হলেও বিপদ তখন ঘনিয়ে আসে যখন খবর পাওয়া যায় তুতেন খামেনের মমি খোঁজার ৫ মাস পরেই কর্নারভানের মৃত্যুর খবর আসে।সে কি কারণে মারা যায় ডাক্তাররাও তা নির্ণয় করতে ব্যর্থ হন। তার মৃত্যু আরেক বিস্ময়কর ঘটনার সৃষ্টি করে। যেমুহূর্তে তিনি মারা যান তখন মিশরের রাজধানী কায়রোর সবগুলো বাতি হঠাৎ নিভে যায়। শুধু তাই নয়, লন্ডনে তার পোষা কুকুরটিও একই সময় ছটফট করতে করতে মারা যায়। এরপর বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, মমিটির গায়ে যেসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র ছিল, কর্নারভানেরশরীরও ঠিক সে রকম ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র হয়ে গিয়ে ছিল। কিন্তু এর প্রধান আবিষ্কারক মি. হাওয়ার্ড ৭০ বছর বয়সে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন।
খ্রিস্টপূর্ব একাদশ শতকে মিসরে আমেনরা নামে এক রাজ কুমারী মারা যান। তাকে যথা নিয়মে মমি করে সমাধিস্থ করা হয়। অনেক বছর পর ঊন বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে তারমমিটি কেনার জন্য চারজন ইংরেজ মিসরে আসেন এবং তারা রাজকুমারী আমেনরার মমিটি ক্রয় করেন। কিন্তু এর জন্য তাদের নিদারুণ দুর্ভাগ্য বরণ করতে হয়। মমিটি কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় চারজনের মধ্যে একজন মরুভূমিতে ঝড়ের কবলে পড়ে মারা যান।তারপর ইংল্যান্ডে ফেরার পর তাদের একজন দেখেন তার সব সম্পত্তি কেউ একজনআত্মসাৎ করেছে। অপরজন ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার চাকরি চলে যায়। মমিটিরপরবর্তীতে স্থান হয় ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। কিন্তু যেই একবার মমিটিকে স্পর্শ করেছে তাকেই কোনও না কোনও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।এমন কি এক দর্শনার্থী যে কিনা কাপড় দিয়ে মমিটির মুখ পরিষ্কার করেছিল এক সপ্তাহের মধ্যে তার ছেলে মারা যায়। আর একবার এক ফটো সাংবাদিক মমিটির ছবি তুলেছিলেন।ছবিটি ডেভেলপ করে তিনি দেখেন রাজকুমারীর মুখের বদলে এক বীভৎস ও বিকৃত মুখ। সে রাতেই তিনি আত্মহত্যা করেন।
এরপর মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ মমিটির প্রদর্শন বন্ধ করে দেন এবং এটি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।পরেরদিনই কর্মকর্তাদের চোখে আসে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার লাশ পড়ে আছে টেবিলে।কিন্তু মানুষের শখ কোনোদিন কম হয়না।এক আমেরিকান পর্যটক সেই মমিটি কিনে দেশে ফেরার জন্য একটি জাহাজের পুরো কেবিনটি ভাড়া করেন।কিন্তু এটিই ছিলো তার প্রথম আর শেষবারের যাত্রা।আর এই জাহাজটি ছিলো ইতিহাসে নাম লেখানো জাহাজ টাইটানিক।