আপনার গর্ভজাত ছোট্ট শিশুটির জন্মের পর আপনার চারপাশে আনন্দ ও উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। যেখানে বন্ধু-বান্ধব ও শুভানুধ্যায়ীদের ফুলেল শুভেচ্ছার পাশাপাশি আরো অনেক উপহারও পাওয়া যায়। আপনার ও নতুন শিশুর দেখাশোনা করার জন্যেও তখন পরিবার ও বন্ধুদের অনেকেই আপনার পাশে থাকেন।
কিন্তু হাসপাতাল ছেড়ে আপনি যখন বাসায় যাবেন তখন আপনাকে কিছু কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হতে হবে। যার বেশিরভাগই আপনাকে কেউ কখনো বলেনি। প্রেগনেন্সি পরবর্তী সময়ে একজন নারীর জীবনে যে পরিবর্তনগুলো আসে সে বিষয়েই জানবো এই ফিচারে।
১। আপনার রাতের ঘুমের নিরবিচ্ছিন্নতা নষ্ট হবে। যার ফলে আপনার ঘুম ঠিকমত হবেনা।
২। প্রসবের পরেও আপনাকে প্রেগন্যান্ট মনে হবে। আপনার শরীরের আকার পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে।
৩। চোখের নীচে কালি পড়তে পারে। যা মেকআপের মাধ্যমেও ঢাকা সম্ভব হয় না।
৪। স্ট্রেস মার্ক সৃষ্টি হয় যা দেখতে খুবই বাজে দেখায়। আপনি হয়তো আপনার পেটে গোলাপি রেখাগুলো আগেও দেখেছেন কিন্তু প্রসবের পর সংকুচিত পেটে এই দাগগুলো দেখে আপনি খুবই বিরক্ত হবেন হয়তো। এই দাগগুলো আস্তে আস্তে মিলিয়ে যায়। আবার কিছু ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করেও এগুলো প্রতিরোধ করা ও দূর করা যায়।
৫। প্রেগনেন্সি পরবর্তী ব্লিডিংকে লুচিয়া বলে। এই ধরণের ব্লিডিং পিরিয়ডের চেয়েও বেশি হতে পারে। ৫ দিন যাবৎ এটি থাকতে পারে।
৬। আপনার মেজাজের অকস্মাৎ পরিবর্তন হতে পারে। হঠাৎ করেই রেগে যাওয়া ও কান্নাকাটি করাটা স্বাভাবিক ঘটনা। মেজাজের এই পরিবর্তন অনেক সময় বিপদজনকও হতে পারে।
৭। আপনার পূর্বের জুতাগুলো আপনার পায়ে নাও লাগতে পারে। আপনি এডিমায় না ভুগলেও আপনার পায়ের পেশীগুলো কিছুটা ফুলে যাবে। ফলে আগের জুতাগুলো আর আপনার পায়ে ফিট নাও হতে পারে।
৮। আপনার জামাকাপড়ের ক্ষেত্রেও একই রকম সমস্যা দেখা দেবে। কারণ আপনার জরায়ু পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে বেশ কিছুদিন সময় লাগতে পারে।
৯। চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
১০। ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রবণতা তৈরি হয়।
১১। আপনি সব সময়ই ক্ষুধার্ত অনুভব করবেন। বিশেষ করে যদি আপনি ব্রেস্ট ফিডিং করান।
নারী জীবনের পূর্ণতাই আসে মাতৃত্বে এবং মাতৃত্বের সুখের সাথে অন্য কিছুর তুলনা হয়না। প্রসব পরবর্তী সমস্যাগুলোর কথা জেনে হতাশ হবেন না। এগুলোর সমাধানের উপায় আগে থেকেই ভেবে রাখলে আপনার জন্য সেই সময়টা মোকাবেলা করা সহজ হবে বলেই আমাদের এই ফিচারের উদ্দেশ্য।