শুধুমাত্র বয়সের কারণেই যে ত্বক বুড়িয়ে যায় তা নয়। ত্বকের তারুণ্য হারিয়ে যাওয়ার পেছনে থাকে অনেক কারণ। রুদ্র আবহাওয়া, ত্বকের সঠিক যত্ন না নেয়া, সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি, সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাব, নিজের কিছু বাজে অভ্যাস, অতিরিক্ত পরিমানে চা/কফি পান, ধূমপান এবং মদ্যপানের অভ্যাস এই সকল কারণে তারুণ্য হারায় ত্বক। দেখা যায় অল্প বয়সেই বুড়িয়ে গেছে ত্বক।
ত্বকের এই অল্প বয়সেই তারুণ্য হারানো প্রতিরোধ এবং প্রতিকার করা যেতে পারে খুব সহজেই। কোনো প্রতিকারের পদক্ষেপ নেয়ার আগে জানতে হবে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার লক্ষণগুলোকে। এতে করে যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা গেলেই প্রতিকারের ব্যবস্থা নিলে অল্প বয়সে ত্বককে তারুণ্য হারানোর হাত থেকে রক্ষা করা যেতে পারে। তাহলে জেনে নিন সেই লক্ষণগুলোকে যাতে আপনি বুঝতে পারেন ত্বক হারাচ্ছে তার বয়স।
১. সকালে ঘুম থেকে উঠে চার গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। এর পর বাথরুমে যান।
২. বাথরুম থেকে ফিরে আরও এক গ্লাস পানি খান এবং তারপর পান করুন দুধ ছাড়া খুব হালকা এক কাপ চা। (আপনার ওজন বেশি হলে চিনি খাওয়া ছেড়ে দিন। চা কখনোই অতিরিক্ত গরম খাবেন না)
৩. সারাদিনে ৮ থেকে ১২ গ্লাস বাড়তি পানি খাবেন। “র” চা দিনে কমপক্ষে চার কাপ খাবেন।
৪. পানি খাওয়ার নাম হচ্ছে হাইড্রোথেরাপি বা জলচিকিৎসা। মূলত এটি হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বছরের প্রাচীন ভারতীয় পদ্ধতি। আধুনিক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে- ঘুম থেকে উঠে ধীরে ধীরে চার গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস করলে প্রায় ৩৬ ধরনের রোগ হয় না এবং হলেও সেরে যায়।
৫. দুধহীন এবং দুধ-চিনি-হীন হালকা গরম চা আড়াই হাজার বছর ধরে চীনে ভেষজ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। সকালে এই চা দিয়ে হার্ট, ব্লাড প্রেসার (উচ্চ রক্তচাপ) ও পেটের নানা রকম রোগের চিকিৎসা করা হতো। আবার আধুনিক বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে- চায়ে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে নিশ্চিত অবদান রাখে।
৬. ভিটামিন সি একটি বৈপ্লবিক খাদ্যপ্রাণ। এর গুণাগুণ অসংখ্য। জানা গেছে, দিনে ১ হাজার মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খেলে মানুষ চির তরুণ থাকে। তবে ট্যাবলেট খেলে কিছুই উপকার পাওয়া যায় না। প্রতিদিনই কমবেশী খেতে হবে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ তাজা ফলমূল। ভিটামিন সিও ক্যান্সার ঠেকাতে সাহায্য করে। আমলকি, সব ধরনের লেবু, টমেটো, কমলা, পেয়ারা, নানা রকর টক স্বাদের ফলে বিভিন্ন মাত্রায় ভিটামিন সি রয়েছে।
৭. ধূমপানসহ সকল ধরণের নেশা জাতীয় অভ্যাস ত্যাগ করুণ। কারণ নেশা মানুষকে সকল দিক দিয়ে ধ্বংস করে দেয়।
৮. রেডমিট অর্থাৎ গরু, মহিষ, খাসি, ভেড়া ইত্যাদির মাংস খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে। ফার্মের মুরগিও চলবে না। শুধু চর্বিহীন বাচ্চা মুরগির মাংস খাওয়া চলতে পারে।
৯. প্রচুর পরিমাণে আধা-সেদ্ধ শাক-সবজি, তরিতরকারি এবং খুব অল্প পরিমাণে ভাত-রুটি খাওয়া উচিত। ভাজাভুজি খাবেন না। অতিরিক্ত তেল, চর্বি, ঘি, মাখন খাবেন না। মসলার বিভিন্ন ভেষজ গুণ আছে, তবুও রান্নায় খুব বেশি মসলা ব্যবহার করবেন না।
১০. সালাদ হিসাবে প্রতিদিন বেশি করে খাবেন কাঁচা লেটুস পাতা, পুদিনা পাতা, টমেটো ইত্যাদি।
১১. বিধিনিষেধ না থাকলে সকালে খালি পেটে এক চামচ মধু খাবেন।
১২. পূর্ণবয়স্কদের জন্য গরু, ছাগল, মহিষের দুধ অপ্রয়োজনীয় তো বটেই, রীতিমতো ক্ষতিকর।
১৩. ছোট-বড় সব ধরনের মাছ খাবেন। সমুদ্রের মাছ খাওয়া অভ্যাস করতে পারলে তো খুবই ভালো। কেননা, এটা মহৌষধ। গাদা-গাদা মাছের কাটা খাওয়া ঠিক নয়। ওতে পাকস্থলিতে পাথর হতে পারে।
১৪. সূর্যমূখী ফুলের বীজ হচ্ছে হার্টের ভেষজ ওষুধ। রান্নায় সূর্যমূখী তেল ব্যবহার করলে হার্টের সুরক্ষা যেমন হয়, তেমনি হার্টের অসুখ থাকলে তা সারাতে সাহায্য করে।
১৫. প্রতিদিন অল্প একটু টক দই খাওয়ার অভ্যাস করুন।টক দই উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে।