ক্যারিয়ারের কারণে সন্তান না নেয়া বা কোন কারণে সন্তান হতে দেরি করা , কারণ যাই হোক না কেন আজকাল একটু বেশি বয়সে প্রথমবারের মত গর্ভধারণ করা খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার । তবে হ্যাঁ , বেশি বয়সে প্রথম গর্ভধারণ করলে ঝুঁকিটা আর দশজনের চাইতে অনেক বেশী থাকে । অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাত হয়ে যাওয়া , সন্তানের বৃদ্ধি ঠিক মত না হওয়া , প্রসবে জটিলতা , মায়ের স্বাস্থ্যহানি সহ হরেক রকমের সমস্যা দেখা দেয় । এগুলো থেকে মুক্তি পাবার একটিই উপায় , আর তা হচ্ছে এই নিয়মগুলো মেনে চলা । পরামর্শগুলো স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের জন্যই ।
১) গর্ভবতী মা সকল রকমের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এড়িয়ে চলবেন । একই সাথে রিকশা বা মোটর সাইকেলের মত বাহনও অবশ্যই এড়িয়ে চলবেন । এইসব বাহনের কারণে গর্ভপাত ঘটে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয় । এইসম্যে মাকে যতটা সম্ভব বেড রেস্টে থাকতে হবে এবং খুব বেশী দৌড় ঝাঁপ , পরিশ্রমের কাজ , ঝাঁকুনির রাস্তায় চলাফেরা করা পরিহার করতে হবে ।
২) গর্ভাবস্থার শুরুতেই খুব ভালো একজন পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করে একটি খাদ্য তালিকা তৈরি করিয়ে নিন । আপনার কোন শারীরিক সমস্যা থাকলে পুষ্টিবিদকে সেটা জানান । তিনি এমন একটি খাদ্য তালিকা তৈরি করিয়ে দেবেন যেন মা ও শিশুর শারীরিক সুস্থতা বজায় থাকে ।
৩) অতি অবশ্যই নিয়মিত ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে থাকুন । কোনক্রমেই এটা অবহেলা করবেন না ।
৪) গর্ভধারণের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেই প্রসবের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে রাখুন যেন একটা জরুরী সময়ে সব কিছু হাতের কাছে থাকে । বেশী বয়সে প্রথম গর্ভধারণে প্রি ম্যাচিউর ডেলিভারি অস্বাভাবিক কিছু নয় । যে হাসপাতালে ডেলিভারি করাবেন , তাঁদের সাথে কথা বলে রাখুন । ইমারজেন্সি আম্বুলেন্সের ফোন নম্বর হাতে কাছেই যোগাড় করে রাখুন । একটি ব্যাগে মা ও শিশুর প্রয়োজনীয় সবকিছু সর্বদা গুছিয়ে হাতের কাছে রাখুন যেন খুঁজলেই পাওয়া যায় ।
৫) বেশী বয়সে গর্ভধারণে স্বাভাবিক প্রসবের চাইতে সিজার করতেই বেশী দেখা যায় । তাই সেই অনুযায়ী আর্থিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে রাখুন ।
৬) এই সময়ে স্বামী একটু বেশী খেয়াল রাখবেন স্ত্রীর। মনে রাখবেন , বয়সের কারণে তাঁর গর্ভধারণ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ । স্ত্রীর খাওয়া দাওয়া , চলাফেরা সব দিকেই লক্ষ রাখতে হবে আপনাকেই ।
৭) স্ত্রীর যেন কোন রকম মানসিক চাপ না হয় , মনে কষ্ট না হয় সেদিকেও সামিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে । গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ যে কোন মায়ের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে ।
৮) মা এই সময়ে প্রচুর ঘুমাবেন । ঘুম যেন যথাসম্ভব আরাম ও শান্তির হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন ।
৯) সঠিক ভাবে আপনার ওজন নিয়মিত বাড়ছে কিনা লক্ষ্য রাখবেন অবশ্যই । ওজন ঠিকমত বৃদ্ধি না পাবার অর্থ শিশুর বৃদ্ধি ঠিকমত হচ্ছে না ।