১) আপনাদের পুত্র ও পুত্রবধূকে আপনাদের সাথে একই ছাদের তলায় বাস করতে উৎসাহ দেবেন না। বরং অন্যত্র বাসস্থান খুঁজে তাদের আলাদা থাকতে পরামর্শ দিন। সন্তানের পরিবার থেকে যত দূরে থাকবেন, তাদের সাথে সম্পর্ক তত ভাল থাকবে।
২) পুত্রের স্ত্রীকে ‘পুত্রবধূ’ হিসাবেই ভাবুন, আপনাদের নিজের মেয়ে বলে ভাবতে যাবেন না। তাকে বন্ধু হিসাবে ভাবতে পারেন। আপনাদের পুত্র চিরকালই আপনাদের কাছে ছোট্ট থাকবে। কিন্ত তার স্ত্রীকে যদি সেই সমমর্যাদায়
ফেলেন এবং কখনো তাকে বকাবকি করেন, সে কিন্তু চিরকাল তা মনে রাখবে। বাস্তবিক জীবনে জেনে রাখবেন, তার নিজের বাবা-মাকেই সে বকুনি দেবার অধিকার দেয়, আপনাদের নয়।
৩) পুত্রবধূর চরিত্র বা অভ্যাসগুলো যে ধরণেরই হোক না কেন, সেটা পুত্রের সমস্যা, আপনাদের নয়। কারণ সেও প্রাপ্তবয়স্ক, তার স্ত্রীও প্রাপ্তবয়স্কা।
৪) যদি একত্রে থাকাটা অনিবার্য হয়, নিজেদের কাজকর্ম নিজেদের মধ্যে পরিস্কার ভাগাভাগি করে নিন। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, তাদের হয়ে ধোপার কাজ, রাঁধুনীর কাজ, বাজার সরকারের কাজ, বাচ্চা রাখার কাজ করবেন না। অবশ্য বিশেষ ক্ষেত্রে পুত্রবধূ যদি
বিশেষভাবে অনুরোধ করে বাচ্চার খেয়াল রাখার জন্য এবং শারীরিকভাবে আপনি তা করতে সমর্থ হন, তাহলে আলাদা কথা। তবে এই কাজের বিনিময়ে কোনকিছু আশা করবেন না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল এই যে, পুত্রের পারিবারিক কোন সমস্যাকেই নিজের সমস্যা ভাববেন না। তাদের সমস্যা তাদেরই সমাধান করতে দিন।
৫) পুত্র ও পুত্রবধূর মধ্যে ঝগড়ার সময়ে অন্ধ ও কালা সেজে থাকুন। স্বামী-স্ত্রীর বিবাদে শ্বশুর-শাশুড়ির নাক গলানো কোন দম্পতিই পছন্দ করে না।
৬) নাতিনাতনীরা পুরোপুরি ছেলে ও বৌয়ের সম্পত্তি। তারা যদি নিজেদের সন্তানদের অনেক বড় করে গড়ে তুলতে চায়, সেটা তাদের ব্যাপার। এক্ষেত্রে কৃতিত্ত্ব বা অভিযোগ, কোনটাই আপনাদের আসার সম্ভাবনা নেই।
৭) আপনাদের শ্রদ্ধাভক্তি করা বা সেবা করার দায়িত্ত্ব পুত্রবধূর নয়, আপনাদের পুত্রের দায়িত্ত্ব। আপনারা যদি পুত্রকে সঠিক শিক্ষা দিয়ে থাকেন, তাহলে তাদের মধ্যে সম্পর্ক অবশ্যই ভাল হবে।
৮) নিজেদের অবসর জীবন ভালভাবে কাটানোর পরিকল্পনা বেশি করে করুন, আপনার সন্তানেরা সেই সময়ে আপনাদের দায়িত্ত্ব নেবে, ভুলেও সে কথা ভাববেন না। আপনারে জীবনে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে এসেছেন, আরো বহু বাকি। বহু কিছু দেখার ও শেখারও বাকি। অবসর জীবন সুখী করার দায়িত্ত্ব আপনাদেরই। নিজেদের কষ্টার্জিত সম্পত্তি মৃত্যুর আগেই ভোগ করে নিন।
৯) নাতিনাতনীরা আপনার পরিবারের কেউ নয়, মনে করুন তাদের পিতামাতা আপনাদের এই বহুমূল্য উপহার দিয়েছে।
সকলের সাথে শেয়ার করুন। পারিবারিক জীবন শান্তিতে কাটাতে সাহায্য করুন।