জাভেদ হাবিব৷ হেয়ার স্টাইলিং-এর দুনিয়ায় তিনিই শাহরুখ খান৷ কলকাতা-সহ দেশের ৯২টি শহরে সব মিলিয়ে মোট ৪৮৪টি সালোঁ আউটলেট রয়েছে তাঁর সংস্থার৷ এ শহরে সেভাবে কাজ না করলেও কর্মীদেরপ্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে মাঝে ধ্যেই কলকাতা ঘুরে যান তিনি৷সম্প্রতি ‘৯৪.৩ রেডিও ওয়ান ’এবং ‘ফেস’-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ১০ জন বাছাই করা ‘নন্দিনী-র হেয়ার স্টাইলিং করলেন নিজের হাতে ৷
মাত্র আধঘণ্টার মধ্যে প্রতিযোগিদের ভোল যেভাবে নিমেষে পাল্টে ফেললেন, তা নিজের চোখে না দেখলে সত্যি বিশ্বাস করা কঠিন৷ চুলের যত্ন নিতে সবচেয়ে সহজ উপায় কী? চুল নিয়ে সাধারণ অনেক বিষয়েই এদেশের মানুষের অজানা৷ কলকাতা২৪x৭-এ দেওয়া ‘এক্সক্লুসিভ’ সাক্ষাৎকারে সে সমস্ত কথাই জানালেন জাভেদ হাবিব৷
বেশ কয়েকমাস পর আবার কলকাতায় এলেন? এবারের এই সফর কী কোনও বিশেষ উদ্দেশ্যে?
জাভেদ হাবিব: আমি এর মধ্যে বেশ কয়েকবারই কলকাতা ঘুরে গেলাম৷ আবার হয়তো কিছুদিনেই আসব৷ কলকাতার একটি রেডিও চ্যানেলের সঙ্গে একটি কন্টেস্টে আমাদের ‘টাই-আপ’ রয়েছে৷ প্রতিযোগীরা চাইছিলেন আমার হাতে হেয়ার কাটিং এবং স্টাইলিং করতে৷ সেই উদ্দেশ্যেই এই শহরে আসা৷ কলকাতায় আমার সংস্থার অনেক আউটলেট রয়েছে৷ এ শহরে আমি কাজ না করলেও কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং ওদের খোঁজখবর নিতে সময় পেলেই এখানে ঘুরে যাই৷ কর্মীদের চুল কাঁটার কাজে ‘প্যাশন’, ‘রোম্যান্স’টা যাতে শেষ না হয়ে যায় সেটাই নজরে রাখি৷
হেয়ার কাটিং-এর ট্রেনিং-এর বিষয়টি যদি একটু বিষদে বলেন৷ এবং এই হেয়ার স্টাইলিং শিল্পকে কীভাবে নিজেদের প্রফেশন হিসেবে আজকালকার ছেলেমেয়েরা নিচ্ছে বলে আপনি মনে করেন?
জাভেদ হাবিব: আমি মনে করি একজন ভাল হেয়ার স্টাইলিস্টের কাজ একজন ডাক্তারের মতোই৷ একটা ভালো হেয়ার কাটিং একজন মানুষের পুরো পারসোন্যালিটি বদলে দিতে পারে৷ চুল কাটার শিল্প এমনই যে তা যে কারোর বয়স এক নিমেষে কমিয়ে দিতে পারে৷ এবং চুল কাটার পর একজনের ‘লুক’ আরও বেশি ফ্রেশ লাগতে পারে৷ হেয়ার কাটিং-এর শিল্পকে এখন আর নাপিতের কাজ বলা যেতে পারে না৷ এর যথাযথ প্রশিক্ষণের জন্য অবশ্যই আপনাকে যেতে হবে একটা ভালো ট্রেনিং স্কুল এবং পাঠশালায়৷
মুম্বই-দিল্লি থেকে হায়দরাবাদ-কলকাতা সর্বত্র আমি এই কাজের উদ্দেশ্যেই ঘুরে বেড়াই৷ এই শহরেও আমার অনেক ট্রেনিং ইনস্টিটিউট আছে৷ কলকাতায় আমার মূলত পাঁচ ধরনের কাজকর্ম (জাভেদ হাবিব হেয়ার অ্যান্ড বিউটি, হেয়ার এক্সপ্রেসো, হেয়ার অ্যাকাডেমি, বেভেলস এবং হেয়ার যোগা) ৷ এছাড়াও খুব তাড়াতাড়ি ‘জাভেদ আলি বিউটি পার্লার’ এবং ‘জাভেদ হাবিব বার্বার শপ’-এর আউটলেট এশহরে খুলতে চলেছি আমরা৷
ভারতের আবহাওয়ায় চুলের স্বাস্থ্য এবং কোয়ালিটি বজায় রাখা নিয়ে বেশিরভাগ মানুষই সমস্যায় পড়েন৷ এর থেকে বাঁচার সহজ উপায় কী?
জাভেদ হাবিব: আমি মনে করি, ‘দিজ কান্ট্রি ইজ মিসিং দ্য হেয়ার এডুকেশন’৷ চুলের জন্য শুধুমাত্র বাজারের বিভিন্ন প্রডাক্ট বিভিন্ন সময় কিনতে বেশি আগ্রহী থাকেন এদেশের মানুষ৷ সহজ উপায়ে যদি চুলের যত্ন নিতে হয়, তাহলে আমি বলব প্রতিদিন শ্যাম্পু করাটা বাধ্যতামূলক৷ আরও ভালো হয়, যদি রোজ শ্যাম্পু করার দশ মিনিট আগে মাথায় তেল লাগানো যায়৷ আর সেই তেল হবে অবশ্যই সর্ষের তেল৷ কারণ ভারতের ক্লাইমেটে সর্ষের তেল চুলের জন্য সবচেয়ে উপকারি৷
আপনি নিশ্চয় আমাকে এখন জিজ্ঞেস করবেন, শ্যাম্পুতে তো কেমিক্যালস রয়েছে৷ আমি বলব কেমিক্যাল কোন জিনিসে নেই? সাবান, টুথপেস্ট সবকিছুতেই৷ তাহলে ওগুলো যদি রোজ আমরা ব্যবহার করতে পারি, তাহলে শ্যাম্পুই বা নয় কেন৷
শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার লাগানোটা কী তেলের বিকল্প হতে পারে?
জাভেদ হাবিব: দেখুন কন্ডিশনার জিনিসটা চুলের টেক্সচারের উপর নির্ভর করে৷ এক এক ধরনের চুলের ক্ষেত্রে এক এক ধরনের কন্ডিশনার৷ তাই সবচেয়ে ভালো হয়, রোজ তেল এবং শ্যাম্পু লাগানো৷ তাহলেই অনেক সমস্যার সমাধান হতে পারে৷ কলকাতা বা পূর্ব ভারতে যেমন বড় এবং ‘সিম্পল’ চুলের ট্রেন্ড৷ কিন্তু এখানকার আবহাওয়ায় আর্দ্রতার পরিমাণ অনেক বেশি৷ তাই চুলে এবং মেখে তেলচিটে ভাবটাও বেশি থাকে৷ এখানে তো প্রতিদিন শ্যাম্পু করাটা আবশ্যিক৷