একটা কাশি যেটা কোন ভাবে যাচ্ছেনা। শ্বাস প্রশ্বাস খুব ঘন হয়ে যাচ্ছে যখন সিঁড়ি বেয়ে উঁচু স্থানে আরোহন করছেন। প্রায়ই আপনার গলা কোন কারণ ছারাই কর্কশ শব্দ তৈরি করে এবং যখন আপনি কারো সাথে কথা বলছেন আপনার নিজেরই অস্বস্তি লাগছে। এই সকল বিষয়গুলো কে আপনি সহজভাবে নিলে ভুল করছেন কারণ এই সকল বিষয়ের মধ্যে আমরা দেখতে পারি কিছু অপ্রত্যাশিত ফুসফুসের রোগের অন্যতম প্রধান উপসর্গ।
পুরো আলোচনাটা Dr.Andrea McKee ( MD, Chairman of oncology Lahey Hospital & Medical Center Sophia Gordon Cancer Center in Burlington, Massachusetts)এবং American Lung Association এর একদল এক্সপার্ট চিকিৎসকের গবেষণা থেকে অনুদিত।
০১.
আপনার পা ফুলে যাচ্ছে এবং সেখানে ব্যথা করছে। যখন আপনার হঠাৎ এমন কোনো সমস্যা হবে আপনার কাছে মনে হবে না যে এটা ফুসফুসের রোগের কোন একটা লক্ষণ। কিন্তু সত্যি কথা বলতে গেলে এটা আপনার কোন শিরার ভেতরে রক্তে নালিতে জমাট বাধার লক্ষণ হতে পারে। কিন্তু এই জমাট রক্ত ভেঙে গিয়ে আপনার ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে যেটার নাম পালমোনারি এম্বোলিজম।
আপনার ফুসফুসে কোন জমাট বাঁধা রক্ত রক্তের প্রবাহ কে বন্ধ করে আপনার শরীরে ভয়ঙ্কর ক্ষতি করতে পারে। যদি তেমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে আপনি উপসর্গ হিসেবে দেখতে পাবেন আপনার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এবং বুকে ব্যথা হচ্ছে একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আপনার মনে রাখা উচিত যদি এরকম ঘটনার দ্রুত চিকিৎসা নেয়া না হয় ১০০ জন রোগীর ৩০ জন ই মারা যায়।
০২.
আপনি বেশি শ্বাস নিতে পারেন না। সামান্য সর্দি কিংবা ফ্লু জাতীয় সমস্যায় আপনার শ্বাস কার্যক্রম বহুলাংশে বাধাগ্রস্ত হয়। যখন আপনার ফুসফুসে কোন মারাত্মক সমস্যা বিরাজ করছে, তখন এই সর্দির পাশাপাশি আপনার ভেতরে ভয়ংকর ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হতে পারে যার ফলে আপনার ব্রংকাইটিস কিংবা ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়া হতে পারে।
০৩.
আপনি আর আগের মত সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে চান না। যদি আপনি অনুভব করেন স্বাভাবিক কার্যক্রম যখন চালিয়ে যাচ্ছেন সেই মুহূর্তে আপনার শ্বাসে কষ্ট হচ্ছে। আপনার কোন ক্রনিক কাশি এবং নিঃশ্বাসের দুর্বলতা ইতিমধ্যেই রয়েছে। তার মানে আপনি কোন ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন। এবং আপনার ফিজিশিয়ান আপনাকে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ পরীক্ষার জন্য প্রেসক্রাইব করবেন।
কখনোই এমনটা ভাববেন না যে বয়সের কারণে আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে। কারণ, আপনার ফুসফুস কোন ভাবে সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে।
০৪.
আপনি জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলেন। যদি আপনি মনে করেন আপনি গভীর নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না, তাহলে আপনার অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এটা হতে পারে আপনি কোন সম্ভাব্য শ্বাসকষ্টের রোগী কিংবা ফুসফুস জনিত কোন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অথবা আপনার রক্তশূন্যতা রয়েছে।
০৫.
আপনার কাশির সাথে রক্ত যায়। যদি আপনার কফের সাথে উজ্জ্বল লাল কিংবা খানিকটা ধূসর বর্ণের রক্ত আসে, তাহলে আপনার জানা উচিৎ এই লক্ষণগুলো ফুসফুস ক্যান্সারের হতে পারে। কিংবা অন্য বিভিন্ন কারণে ও আপনার কফের সাথে রক্ত যেতে পারে যেমন যদি আপনার কোন ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস অথবা এমফিসেমা জাতীয় কোন সমস্যা থেকে থাকে। আপনার অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
০৬.
আপনার কণ্ঠস্বর পরিবর্তিত হচ্ছে। আপনারা অবশ্যই মনোযোগী হওয়া উচিত যদি কেউ আপনাকে বলে যে আপনার কন্ঠটা শুনতে কেমন যেন অন্যরকম লাগছে? এটা একদম সর্দির মত স্বাভাবিক কোনো কিছু হতে পারে। কিন্তু যদি আপনার এই গলার কর্কশ অবস্থা কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার কোন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। কেননা এ সকল সমস্যা ফুসফুস রোগের অন্যতম প্রধান উপসর্গ হিসেবে বিবেচিত।
০৭.
আপনার কাঁধে প্রতিনিয়তই প্রচন্ড ব্যথা করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাঁধের এই ব্যথা দেহের মধ্যে কোনো রক্তক্ষরণজনিত কারণে হয়ে থাকে। কিন্তু যদি আপনি এ ধরনের কোন কিছু করে না থাকেন যেটাতে আপনার পেশিতে আঘাত হয়েছিল। এবং এই ধরনের ব্যথায় সপ্তাহ জুড়ে আপনি ভুগছেন কিন্তু কোনভাবেই কমছে না। তাহলে আপনার অবশ্যই দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য যে আপনি কোন ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন না তো?
০৮.
আপনার নখ গুলো নীলাভ হয়ে যাচ্ছে। আপনার নখের এমন ধরনের কোন পরিবর্তন যদি দেখেন এবং সেই রঙটা দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। তার মানে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার রোগের অবস্থান ও ততটাই শক্ত হচ্ছে। অতএব আপনার উচিত একজন ভালো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।
০৯.
আপনার ওজন ক্রমেই কমে যাচ্ছে। ফুসফুসের রোগ আক্রান্ত ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ রোগীদেরই অপ্রত্যাশিত ভাবে শরীরের ওজন কমতে থাকে। এবং এই ক্রমেই হ্রাসমান ওজন এটা ইঙ্গিত করে যে শরীর ঠিক ভাবে কাজ করছে না। মূলত আপনার শরীরের সব জায়গায় অক্সিজেন প্রয়োজন এবং যেখানে অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারছেনা সে সকল স্থানে আপনার শরীরে সঞ্চিত ক্যালোরি খরচ করা হচ্ছে।
যার কারণে আপনার ওজন হঠাৎ করে কমে যাচ্ছে এবং আপনাকে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত যে আপনি কোন শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগছেন কিনা সেটা নিশ্চিত হতে?
১০.
রাতে আপনার প্রচন্ড কাশির ফলে ঘুম ভেঙে যায়। যদি অত্যাধিক কাশির ফলে আপনার বুক ধরে আসে এবং রাতে আপনার ঘুমোতে কষ্ট হয় তাহলেও আপনি ধরে নিতে পারেন শ্বাস-প্রশ্বাসে কোন সমস্যা হচ্ছে। আপনার দ্রুত চিকিৎসকের নিকট যাওয়া উচিত।
১১.
যখন আপনি ক্লান্ত। রাতে একটা ভালো ঘুম আপনাকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে। কিন্তু যদি আপনি অবসাদগ্রস্থ হন পৃথিবীর সকল ঘুম এসেও আপনাকে এনার্জি দিতে পারবে না। এ ধরনের সমস্যা যদি নিয়ত হতে থাকে তাহলে আপনি কোন ফুসফুস ক্যান্সার কিংবা অন্য কোনো বড় রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আপনার অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
১২.
আপনি তেমন কোনো উপসর্গ দেখতে পাচ্ছেন না। সবচাইতে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে ফুসফুস ক্যান্সারের প্রথম স্তরে থাকা রোগীদের অনেকেরই তেমন কোনো লক্ষণীয় উপসর্গ থাকে না। পিছনে প্রচন্ড ব্যথা, মাথা ব্যথা এবং অবসাদ এগুলো হচ্ছে খুব সাধারণ উপসর্গ যে আপনি ফুসফুস ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছেন এবং তা বিভিন্ন জায়গায় ছড়াচ্ছে।
১৩.
কিভাবে আপনি আমার আপনার ফুসফুসকে রোগমুক্ত রাখতে পারেন? সর্বপ্রথম আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি যদি একজন তামাক সেবনকারী হয়ে থাকেন অবশ্যই আপনাকে তামাক চিরতরে ছেড়ে দিতে হবে। আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে আপনার ফুসফুসের যে ফিল্টার রয়েছে সেটা সারা শরীরে অক্সিজেন বহনের জন্য এবং দূষিত পদার্থ ধ্বংসের জন্য।
কিন্তু আপনি অক্সিজেনের সাথে যদি নিকোটিন প্রবেশ করান আস্তে আস্তে আপনার সেই ফিল্টার জাম হতে থাকবে এক সময় গিয়ে আপনি একজন ভয়াবহ ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন। সুতরাং সকল ধরনের তো তামাক বর্জন করুন
আপনাদের সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে আমরা স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল প্রকাশ করি। অতএব আপনি বিষয়গুলো জেনে সতর্ক হোন এটাই আমাদের লক্ষ্য। লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।