বাংলা রক ব্যান্ড ফসিলস-এর নীল রং ছিল ভীষণ প্রিয় গানটির কথা মনে পড়তেই পারে এই নীল ভাতের ছবি দেখে। তবে এশিয়ান কুইজিনে আপাতত ভাইরাল এই নীল ভাত। সম্প্রতি বলিউডের শ্রীলঙ্কান সুন্দরী অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজও এই নীল ভাত খাওয়ার ব্যাপারে নিজের মতামত জানিয়েছেন। এই নীল ভাত সবচেয়ে বেশি প্রচলিত মালয়শিয়া ও তাইল্যান্ডে। একে ওই দেশে নাসি কেরাবু নামেও ডাকা হয়। খাদ্যরসিকদের নিঃসন্দেহে এই ভাত নিয়ে কৌতূহল জাগবেই।
ভোজনরসিকদের মনে-প্রাণে এই নীল রঙের ভাত যেমন আকর্ষণ তৈরি করবে, তেমনই জেনে রাখা দরকার স্বাস্থ্যের জন্যও দারুণ উপকারী এই ভাত। স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ নিজেদের ডায়েটে কার্ব কমানোর জন্য ভাতই বাদ দিয়ে দেন। তবে গবেষকরা বলছেন, উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ভরপুর এই নীল ভাত গুণেও দারুণ উপকারী।
এই ভাত তৈরি করাও দারুণ সহজ। বাড়িতে অতিথিদের খাওয়ানোর পরিকল্পনা থাকলেও, দারুণ সহযোগী হতে পারে এই নীল ভাত বা ব্লু রাইস। কী ভাবে তৈরি করবেন এই নীল ভাত? কোনও রং বা অন্য কোনও ধরনের উপকরণ কিনে আনতে হবে বাজার থেকে? জবাব, একেবারেই না। এটি খুবই স্বাস্থ্যকর এবং সহজলভ্য জিনিস দিয়ে অনায়াসে বাড়িতেই তৈরি করে ফেলতে পারবেন।
কী ভাবে তৈরি করা হয়ে নীল ভাত? খুবই পরিচিত ও সহজলভ্য অপরাজিতা ফুল দেবে এই নীল রঙের জোগান। প্রথমে ১০ থেকে ১৫টি অপরাজিতা ফুলকে ভালো করে ব্লেন্ড করে রস বের করুন। তার পর ভাত তৈরি করার পর জলে অপরাজিতার নীল জুস ঢেলে দিন। আরও বেশ কিছুক্ষণ ফোটান। খেয়াল রাখবেন ভাত যেন গলে না যায়। ভাত ঝরঝরে নামামোর চেষ্টা করুন।
যে কোনও ধরনের হালকা সাইড দিশ দিয়ে এই ভাত ভালো লাগবে। পাশাপাশি, শরীরের ফ্রি রাডিক্যালস ও টক্সিন বের করতে দারুণ কার্যকরী এই নীল ভাত। ডিমের কষা, মাছ ভাজা, চিকেন ফ্রাই দিয়েও দারুণ জমে এই নীল ভাত। কিংবা আপনার পছন্দের যা কিছু দিয়েই এটি খেতে পারবেন। কোনও আলাদা গন্ধ থাকে না এই নীল ভাতে। সুগন্ধি এই ভাত যে কোনও কারি জাতীয় ডিশের সঙ্গেই খেতে বলেন বিখ্যাত শেফরা।
পরিবেশনের ক্ষেত্রে ভাতের উপর দিতে পারেন একটি অপরাজিতা ফুল। তার সঙ্গে খাবারের প্লেটে রাখতে পারেন কলাপাতা। যাতে রঙ-বেরঙের খাবার আপনার চোখের খিদেকেও কমাতে সক্ষম হয়। এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বিখ্যাত খাবার এই ব্লু রাইস। ইতিহাস থেকে জানা গেছে, এই নীল ভাত খাওয়ার প্রচলন ছিল আদিকালেও।
অপরাজিতা ফুলের চা-এর পাশাপাশি এই ফুল থেকে তৈরি ভাতও কিন্তু শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এই ফুলে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশ করলে তা নানা ভাবে উপকারে আসে। শরীরের বিষ বের করতে দারুণ কার্যকরী এই নীল ভাত।