বিয়ের পর থেকেই কারণে-অকারণে ঝামেলা করছে শাশুড়ি। সব কিছুতেই খুত ধরা,খুঁজে খুজে দোষ বের করা নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। স্বামীর সাথে বাইরে বেড়াতে গেলেও কথা শুনিয়ে দিচ্ছে শাশুড়ি। নতুন সংসারে শাশুড়ির এমন ব্যবহারে মনটাই ভেঙ্গে গিয়েছে আপনার। কিন্তু কেন এমন আচরণ?
আমাদের সমাজে প্রায়ই আমরা দেখতে পাই শাশুড়ি-বউ এর খারাপ সম্পর্ক। কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি হয় আমরা কি ভেবে দেখেছি কখনো? নাকি সংসারে নতুন পা রাখা মানুষটিকে দোষারোপ করেই ক্ষান্ত হয়ে যাই আমরা?
আর কেবল মাত্র একজনের উপর দোষারোপ করে বিষয়গুলোকে ধামা চাপা দিয়ে রাখতে রাখতেই সংসারের অশান্তি বেড়ে যায় এবং অনেক সময় গৃহবধুরা নির্যাতনের স্বীকার হয়।
শুনতে খারাপ শোনালেও সত্যি যে অধিকাংশ শাশুড়িই কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে ছেলের বউকে ঈর্ষা করে থাকেন। বিশেষ করে একমাত্র ছেলে হয়ে সমস্যা আরো প্রকট রূপ নেয়। আসুন জেনে নেয়া যাক একমাত্র ছেলের বৌকে শাশুড়ির ঈর্ষা করার ৭টি কারণ সম্পর্কে।
ছেলের জীবনে দখলদারিত্ব
ছেলেকে বিয়ে করানোর আগ মূহূর্ত পর্যন্ত খুব স্বাভাবিক ভাবে ছেলের জীবনের পুরো দখলটা নিজের থাকে। কিন্তু ছেলেকে বিয়ে করার পরেই সেই দখলদারিত্ব অনেকাংশেই ছেলের বউয়ের কাছে চলে যায়। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও এই দখলদারিত্বের হাত বদল অনেক শাশুড়িই মেনে নিতে পারে না।
সংসারের ভাগ দেয়া
ছেলেকে বিয়ে করানোর আগ পর্যন্ত পুরো সংসারটা শাশুড়ির কর্তৃত্বেই থাকে। কিন্তু ছেলের বিয়ের পরে ঘর, বাড়ি, রান্নাঘর, সংসারের টাকা পয়সা, নিয়মকানুন অনেক কিছুই ছেলের বউয়ের অধীনে চলে যায় স্বাভাবিক ভাবেই। এই হঠাৎ পরিবর্তনটা অনেক শাশুড়িই মেনে নিতে পারেন না এবং মনের গভীরে অভিমানের সৃষ্টি হয়। আর এই অভিমানের ফলেই ছেলের বউকে ঈর্ষা করেন তারা।
ছেলের জীবনে গুরুত্ব কমে যাওয়া
ছোটবেলা থেকে ছেলেকে বড় করা পর্যন্ত ছেলের জীবনের প্রতিটি কোণা জুড়ে থাকে মা। কিন্তু বিয়ের পর খুব স্বাভাবিক ভাবেই ছেলেরা স্ত্রীকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কিন্তু এই বাস্তব সত্যটি মেনে নিতে পারে না অধিকাংশ ছেলের মা। আর তাই ছেলের বউ এর সাথে অহেতুক খোঁচাখুঁচি লাগিয়ে রাখার প্রবণতা দেখা দেয় শাশুড়িদের মধ্যে।
কিছু মানুষ স্বভাব সুলভ হিংসুটে
কিছু মানুষের স্বভাবই থাকে হিংসুটে ধরণের। তারা ছেলের প্রেমিকা, স্ত্রী, বন্ধু বান্ধব সবার সাথেই হিংসাত্মক করে। এধরণের শাশুড়িরা ছেলের বউয়ের পরিবারের সদস্যদের সাথেই হিংসা করে এবং ছেলের বউয়ের সাথে খারাপ আচরণ করে বিকৃত মানসিক শান্তি পায়।
হীনমন্যতা
সংসারে নতুন বউ এলে সবাই নতুন বউটিকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে যায়। নিজের সংসারে, আত্মীয়স্বজনদের কাছে, ছেলের কাছে সব যায়গাতেই আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দু থাকে ছেলের বউটি। ফলে শাশুড়িদের মনের অজান্তেই একধরনের হীনমন্যতা কাজ করে। সংসারে নিজের গুরুত্ব কমে যাচ্ছে মনে করে তারা ছেলের বউকে ঈর্ষা কড়া শুরু করে।
প্রতিযোগীতামূলক মনোভাব
কিছু নারীর সব ক্ষেত্রেই প্রতিযোগীতামূলক মনোভাব থাকে। আর এই প্রতিযোগিতার কবল থেকে রক্ষা পায় না ছেলের বউও। এধরণের শাশুড়ীরা সব সময়েই জাহির করার চেষ্টায় থাকে যে কম বয়সে সে তার ছেলের বউয়ের চাইতে অনেক বেশি সুন্দরী ছিলো, তার পরিবার অনেক বড়লোক, অনেক বনেদী বংশে জন্ম নিয়েছে সে। এসব জাহির করে ছেলের বউকে ছোট করার চেষ্টায় কারণে অকারণে ছেলের বউকে মানসিক কষ্ট দিয়ে শান্তি পায় এধরণের শাশুড়িরা।
বার্ধক্যে একাকীত্বের ভয়
ছেলের বউয়ের সাথে হিংসা করার পেছনে শাশুড়িদের একটি মানসিক ভয় কাজ করে। আর তা হলো তারা মনে করে ছেলের বউ তাদেরকে ছেলের কাছ থেকে দূরে ঠেলে দেবে এবং বার্ধক্যে তার কোন আর্থিক কিংবা আবাসিক সমর্থন থাকবে না। এই আতংকে শাশুড়িরা ক্রমাগত ছেলের বউ বিদ্বেষী হয়ে ওঠে এবং অহেতুক তার সাথে খারাপ আচরণ করে।