প্রেমে পড়ার নির্দিষ্ট কোনও বয়স নেই। যে কোনও বয়সে যখন খুশি, যার সঙ্গে খুশি প্রেমে পড়া যায়। আসলে প্রেম কোনও বাধাই মানে না। তবে আমাদের সমাজের বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। সেগুলি ইচ্ছে না থাকলেও কিছুটা হলেও আমাদের মেনে চলতে হয়। তার মধ্যে একটা হল, বিয়ের পর আর কেউ প্রেমে পড়তে পারে না।
আসলে এই কথার কোনও যুক্তি নেই। কারণ প্রেমে যখন খুশি পড়া যায়। প্রেমে পড়া যেতেই পারে। কিন্তু, কে কী বলবে এটা ভেবে আর পার্টনারের খারাপ লাগার কথা ভেবে অনেকেই পিছিয়ে আসেন। আবার অনেকেই কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করে দিব্যি দুটো সম্পর্কই চালিয়ে যান। তবে সেটা না করে সম্পর্কে যদি কোনও তিক্ততা তৈরি হয় তাহলে তার থেকে বেরিয়ে আসাই ভালো।
বিয়ের পর যদি প্রেমে পড়েন তাহলে কীভাবে সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করবেন ?
প্রেমে পড়া অত সহজ নয়। প্রথমে বুঝতে হবে যে কেন প্রেমে পড়লেন আপনি ? আপনার পার্টনারের এমন কোন জিনিস আপনার পছন্দ হচ্ছে না। যার জন্য আপনি বিয়ের পরও অন্য কোনও নারী বা পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হলেন। যার প্রতি আপনি আকৃষ্ট হয়েছেন তার কোন বিষয়টি আপনাকে সবথেকে বেশি আকৃষ্ট করেছে। এই বিষয়গুলি আগে দেখে নিন।
সময় দিন
সময় সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেয়। তাই এইসব ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সময়ের উপর ভরসা করা দরকার। যেমন, কোনও মানুষ কাউকে ভালো লাগতেই পারে। আর সেটা যে কেউ হতে পারে। তার মানে এই নয় যে তার প্রেমে পড়ে গেছেন। যদি বিষয়টা ইনফ্যাচুয়েশন হয়ে থাকে তাহলে একটু সময় দেওয়া ভালো। দেখবেন সময় দিলেই বুঝবেন যে সেটা ইনফ্যাচুয়েশন না প্রেম। অনেক সময় গতানুগতিক জীবন যখন আমাদের কাছে একঘেয়েমী হয়ে ওঠে তখনই মনে হয় জীবনটা একটু অন্যরকম হলে ভালো হত। তাই কয়েকদিন নিজেকে সময় দিন। তারপর দেখুন আপনার মনের অবস্থা কী থাকে।
গোপনে কোনও সম্পর্কে জড়াবেন না
গোপনে কোনও কাজ করবেন না। যদি কাউকে ভালো লাগে তাহলে সে কথা পার্টনারের সঙ্গে আলোচনা করুন। হয়ত তিনি বুঝতে চাইবেন না। কিন্তু, খেলার ছলেই তাকে বোঝান। তিনি হয়ত হালকভাবেই নেবেন, কিন্তু তাও বলুন। দেখবেন আপনারও অনেকটা ভালো লাগবে।
পার্টনারের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলুন
যদি নিজেকে সময় দেওয়ার পরও মনে হয় কোনও পার্টনারের থেকে আপনার সেই পুরুষ বা নারীকে বেশি ভালো লাগছে তাহলে পার্টনারের সঙ্গে খোলাখুলিভাবে কথা বলুন। কষ্ট হোক, তাও বলুন। আসলে একটা সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হলে তার থেকে বেরিয়ে আসাই ভালো। না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই পরিষ্কার কথা বলুন। তবে আপনার স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবেন না।
এর জন্য কিছুটা হলেও প্রযুক্তি দায়ি
আসলে ব্যস্ত সময়ের মধ্যে এখন আমাদের জীবনের অর্ধেকটাই কেড়ে নেয় মুঠো ফোন নয়ত ল্যাপটপ। কোনও কাজ না থাকলে আমরা সব সময় এগুলিতেই বেশি ব্যস্ত থাকি। সঙ্গীর কথা খুব একটা চিন্তা করি না। অনেক সময় তাঁকে সময় দেওয়ার কথাও ভুলে যাই। এটা ঠিক না। আর আমাদের অবসর সময় কেড়ে নেয় সোশাল মিডিয়া। যার মাধ্যমে আমরা অচেনা মানুষের সঙ্গে বেশি সময় কাটাই। কখনও আবার পুরোনো প্রেম জেগে ওঠে।
বিয়ের পর যদি কখনও প্রেমে পড়েন, তাহলে সেই বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দেবেন না। কয়েকটা সময় নিজের ভালো লাগার থেকে বেশি আপনার উলটোদিকে থাকা মানুষটির খুশির কথাও চিন্তা করবেন। না হলে আপনি স্বার্থপর হয়ে যাবেন। তবে সম্পর্ক যদি একেবারেই ভালো না থাকে, দু’জনেই যদি একে অপরের সঙ্গে থাকতে না পারেন তাহলে তার থেকে বেরিয়ে যান।
যদি বিষয়টি শুধু আপনার দিক থেকেই হয়ে থাকে তাহলে নিজেকে আরও সময় দিন। পার্টনারের সঙ্গে যতটা পারেন তত সময় কাটান। সম্পর্ককে ফের নতুন করে গড়ে তুলুন। তেমন হলে একসঙ্গে কোথাও ঘুরে আসুন। সম্পর্কের প্রথমদিনগুলি বা বিয়ের পর আপনাদের একসঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলির কথা চিন্তা করতে পারেন। সেইভাবে আবার সম্পর্কটিকে নতুন করে গড়ে তোলার চেষ্টা করুন। আর যদি তা না হয় তাহলে সম্পর্ক সেখানেই শেষ করে দিন। আর এগিয়ে নিয়ে যাবেন না।