আপনাদের জন্য এখন দেওয়া হচ্ছে আরো একটি রেসিপিগুচ্ছ। এবার দেওয়া হচ্ছে হালুয়ার ১৪ পদের রেসিপি। দেখে নিন রেসিপিগুলো। আশা করছি ভালোই লাগবে।
সুজির হালুয়া
উপকরণ :
১. সুজি ২ কাপ,
২. চিনি দেড় কাপ,
৩. ঘি ১/৪ কাপ,
৪. ঘন দুধ দেড় কাপ,
৫. কিশমিশ, পেস্তাবাদাম, এলাচ গুঁড়া পরিমাণমতো।
প্রণালি :
> প্রথমে সুজি লাল করে ভেজে নিন।এবার কড়াইতে ঘি দিন।
ঘি গরম হয়ে এলে সুজি ও দুধ দিয়ে ৫ মিনিট নেড়ে নিন।
তারপর চিনি দিয়ে আরও ৫ মিনিট নাড়ুন।
এবার কিশমিশ, পেস্তাবাদাম, এলাচ গুঁড়া, দিয়ে নামিয়ে একটি ঘি মাখানো ট্রে-তে বিছিয়ে নিন।
এরপর চেপে সমান করুন।
কিছুক্ষণ রেখে ঠান্ডা হলে সুন্দর করে কেটে পরিবেশন করুন সুজির মোহনভোগ।
বুট-বাদামের হালুয়া
উপকরণ :
১. বুটের ডাল ২ কাপ,
২. চিনি দেড় কাপ (স্বাদমতো),
৩. লবণ সিকি চা-চামচ,
৪. বাদাম আধা কাপ,
৫. দারুচিনি ২ টুকরা,
৬. ঘি ১ কাপ,
৭. লবণ সিকি চা-চামচ,
৮. কিশমিশ ও বাদাম সাজানোর জন্য।
প্রণালি :
> বুটের ডাল কয়েক ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ফুলে ওঠার পর সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নিন। ডাল বেটে রাখুন। বাদাম টেলে বেটে রাখুন। ঘিতে দারুচিনি, বুটের ডাল দিয়ে নাড়ুন। চিনি, বাদাম বাটা, লবণ দিয়ে নাড়ুন। ঘন হয়ে হালুয়া তৈরি হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে পছন্দমতো ডাইসে ঢেলে নকশা তৈরি করুন। বাদাম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
নেসেস্তার হালুয়া
উপকরণ :
১. সুজি আধা কেজি,
২. চিনি দেড় কাপ (স্বাদমতো),
৩. লবণ সিকি চা-চামচ,
৪. এসেন্স কয়েক ফোঁটা,
৫. খাওয়ার রং সামান্য,
৬. ঘি ৩ টেবিল চামচ,
৭. বাদাম ও কিশমিশ ৩ টেবিল চামচ।
প্রণালি :
> সুজি ১ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। পাতলা কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। পছন্দমতো খাওয়ার রং কয়েক ফোঁটা, এসেন্স ও চিনি মেশান। ঘিতে ঢেলে ঘন ঘন নাড়ুন। বাটিতে ঘি মেখে হালুয়া ঢালুন। ওপরে বাদাম কুচি, কিশমিশ দিন। ঠান্ডা হলে কেটে নিন।
সুজি চকলেট হালুয়া
উপকরণ :
১. সুজি ২ কাপ,
২. চিনি ১ কাপ (স্বাদমতো),
৩. কোরানো নারকেল ১ কাপ,
৪. চকলেট সিরাপ ২ টেবিল চামচ,
৫. কোকো পাউডার ১ টেবিল চামচ,
৬. লবণ সামান্য ও ঘি আধা কাপ।
প্রণালি :
> ঘিতে সুজি, চিনি, নারকেল দিয়ে নাড়ুন। চকলেট সিরাপের সঙ্গে কোকো পাউডার মেশান। অর্ধেকটা সুজি অন্য পাত্রে ঢেলে চকলেটের মিশ্রণ দিয়ে নাড়ুন। দুই রকম হালুয়া অল্প অল্প করে হাতে নিয়ে হালুয়ার আকারে তৈরি করুন।
লাউ চালকুমড়ার হালুয়া
উপকরণ :
১. লাউ সিদ্ধ করে ব্লেন্ড করা বা বাটা আধা কাপ,
২. চালকুমড়া সিদ্ধ করে ব্লেন্ড করা বা বাটা ১ কাপ,
৩. চিনি ১ কাপ,
৪. ঘি ও তেল ২ টেবিল-চামচ,
৫. দারুচিনি ২ টুকরা,
৬. এলাচ ৩টি,
৭. কিশমিশ ২ চা-চামচ।
প্রণালি :
> একটি মাঝারি লাউ ও একটি মাঝারি চালকুমড়া ছিলে বড় বড় টুকরা করে কেটে নিন। মাঝ থেকে চামচ দিয়ে আঁচড়ে দানা পরিষ্কার করে নিন।
> হাঁড়িতে পানি নিয়ে এক চা-চামচ লবণ দিয়ে তাতে লাউ ও চালকুমড়া সিদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নিন। তারপর লাউ ও চালকুমড়া ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে বা বেটে কাপড়ে মুড়িয়ে চেপে অতিরিক্ত পানি ঝরিয়ে নিন।
> কড়াইয়ে তেল ও ঘি গরম করে এতে দারুচিনি ও এলাচ ছেড়ে দিন। ব্লেন্ড করা লাউ ও চালকুমড়া দিয়ে মৃদু আঁচে ভুনতে থাকুন।
> তেল ছেড়ে দিলে এতে চিনি দিন। বারবার নেড়ে চিনি গলিয়ে হালুয়া নামিয়ে নিন।
> একটি ট্রেতে ঘি মাখিয়ে গরম হালুয়া ঢেলে ঠাণ্ডা করুন। এখন পছন্দ মতো কেটে কিশমিশ দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
মাশরুমের হালুয়া
উপকরণ :
১. বাটা মাশরুম এক কাপ,
২. চিনি ৩ কাপ,
৩. খেজুর আধা কেজি,
৪. এলাচ গুঁড়া চারভাগের এক চা চামচ,
৫. ঘি চারভাগের তিন কাপ,
৬. কিশমিশ ২ টেবিল চামচ,
৭. পেস্তা বাদাম কুচি ৩ টেবিল চামচ,
৮. দারুচিনি গুঁড়া চারভাগের এক চা চামচ।
প্রণালি :
> খেজুর বিচি ছড়িয়ে বেটে নিতে হবে, মাশরুম অল্প পানিতে দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। আধা কাপ ঘি গরম করে বাটা মাশরুম ও বাটা খেজুর দিয়ে কিছুক্ষণ ভুনে চিনি, দারুচিনি গুঁড়া দিয়ে নাড়াচাড়া করতে হবে। হালুয়া ঘন হয়ে গেলে এলাচ গুঁড়া, কিসমিস ও বাকি ঘি দিয়ে কিছুক্ষণ অল্প আচেরেখে ডিশে ঢেলে দিতে হবে। পেস্তা বাদাম কুচি উপরে দিতে হবে। এরপরে ঠান্ড হলে কেটে পরিবেশন করেুন।
পেশোয়ারি হালুয়া
উপকরণ :
১. কাঠ বাদাম/পেস্তা বাদাম আধা কাপ,
২. নারিকেল বাটা আধা কাপ,
৩. ছানা আধা কাপ,
৪. চিনি ১ কাপ,
৫. এলাচ গুঁড়ো ১ চা চামচ,
৬. তরল দুধ আধা কাপ,
৭. মাওয়া আধা কাপ,
৮. ঘি ৩ টেবিল চামচ,
৯. জাফরান সামান্য।
প্রণালি :
> প্রথমে তরল দুধ ও বাদাম ব্লেন্ড করুন। এরপর চুলায় জ্বাল দিয়ে পানি শুকিয়ে নিন। এরপর টি ননস্টিক প্যানে ঘি এবং বাদামের মিশ্রণ দিয়ে নাড়তে থাকুন। তারপর ছানা, নারিকেল বাটা, চিনি দিয়ে নাড়ুন। এরপর মাওয়া ও এলাচ দিয়ে ভুনে নিন। এবার সব কিছু একসঙ্গে ভুনে যখন প্যানের গা থেকে উঠে আসবে; তখন বাটিতে ঢেলে কিশমিশ, বাদাম হালুয়া ওপরে ছড়িয়ে দিন। এবার সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
কাঁচা পেপের হালুয়া
উপকরণ :
১. পেঁপে ৫০০ গ্রাম,
২. চিনি ২৫০ গ্রাম (পছন্দমতো),
৩. গুঁড়া দুধ আধা কাপ,
৪. দারুচিনি ২ টুকরা,
৫. ঘি আধা কাপ,
৬. সবুজ খাওয়ার রং ২-৩ ফোঁটা,
৭. বাদাম, তবক সাজানোর জন্য।
প্রণালি :
> পেঁপের খোসা ও বিচি ফেলে ছোট ছোট টুকরা করে সেদ্ধ করে নিতে হবে। বেটে নিন অথবা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। ঘিতে সব উপকরণ দিয়ে ঘন ঘন নাড়তে থাকুন। হালুয়া হয়ে গেলে বাদাম ও তবক দিয়ে সাজিয়ে নিন।
খেজুরের হালুয়া
উপকরণ :
১. খেজুর ২৫০ গ্রাম।
২. চিনি ২০০ গ্রাম।
৩. ঘি ৩ টেবিল-চামচ।
৪. এলাচ ২,৩টি।
৫. লবণ সামান্য।
প্রণালি :
> প্রথমে খেজুর ছিলে দানা বের করে নিন। এবার ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন খেজুরগুলো। হাঁড়িতে ঘি ও এলাচ দিন।
> তারপর খেজুর, চিনি ও লবণ দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন যেন পুড়ে না যায়।
> হালুয়া শুকিয়ে হাঁড়ি থেকে আলগা হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নামিয়ে ফেলতে হবে।
> একটা ঘি মাখানো ট্রেতে হালুয়া চেপে বসিয়ে দিন। ঠাণ্ডা হলে পছন্দ মতো আকারে কেটে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
ডিম গাজরের হালুয়া
উপকরণ :
১. ৩টি ছোট গাজর কুচি করা,
২. আধা কাপ গুঁড়াদুধ,
৩. ৪ টেবিল-চামচ চিনি,
৪. ১টি ডিম,
৫. ২ টেবিল-চামচ ঘি বা তেল ১ চা-চামচ,
৬. ১টি এলাচ-গুঁড়া,
৭. দারুচিনি ১টি,
৮. তেজপাতা ১টি।
প্রণালি :
> গাজরকুচি, গুঁড়াদুধ, সামান্য পানি ও চিনি দিয়ে সিদ্ধ করতে হবে।
> এবার ডিম এবং সিদ্ধ গাজরের মিশ্রণ ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। চুলায় কড়াই দিয়ে আঁচ অল্প রেখে ঘি গরম হতে দিন।
> গরম ঘিয়ে এলাচ, তেজপাতা, দারুচিনি ও ডিম-গাজরের মিশ্রণ দিয়ে ক্রমাগত নাড়তে থাকুন। নাড়তে নাড়তে যখন দেখবেন মিশ্রণটি আঠালো হয়ে এসেছে তখন চুলা থেকে নামিয়ে দুতিন মিনিটের জন্য ঠাণ্ডা হতে দিন।
> এখন মিশ্রণটা সহনীয় মাত্রার গরম থাকা অবস্থায় হাতে অল্প অল্প করে নিয়ে ইচ্ছা মতো আকার দিয়ে তৈরি করুন সন্দেশ। মিশ্রণটা হাতে নেওয়ার আগে হাতে সামান্য ঘি মাখিয়ে নেবেন।
ডিমের হালুয়া
উপকরণ :
১. ডিম ৮টি,
২. তরল দুধ ১ কাপ,
৩. চিনি ১ কাপ (স্বাদমতো),
৪. ঘি আধা কাপ,
৫. এসেন্স ২-৩ ফোঁটা,
৬. পেস্তা বাদাম ২ চা-চামচ,
৭. কাজু বাদাম ২ চা-চামচ,
৮. কিশমিশ ২ চা-চামচ।
প্রণালি :
> ফেটানো ডিমের সঙ্গে চিনি ও দুধ মেশান। ঘিতে ঢেলে ঘন ঘন নাড়ুন। এসেন্স কয়েক ফোঁটা, বাদাম দিন। বাটিতে ঘি মেখে ঢালুন। ঠান্ডা হলে কেটে পরিবেশন করুন।
গাজরের হালুয়া
উপকরণ :
১. গাজর আধা কেজি,
২. চিনি ১ কাপ,
৩. কনডেন্সড মিল্ক আধা কাপ,
৪. দারুচিনি ২ টুকরা,
৫. তেজপাতা ১টি,
৬. ঘি ২ টেবিল চামচ,
৭. বাদাম ও কিশমিশ পছন্দমতো।
প্রণালি :
> গাজর কুচি করে সেদ্ধ করুন। ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন অথবা পাটায় বেটে নিন। ঘিতে দারুচিনি, তেজপাতা ভেজে গাজর পেস্ট ঢেলে নাড়ুন। চিনি ঢেলে নাড়তে থাকুন। চিনি গলে গেলে কনডেন্স মিল্ক দিন। ঘন হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে কিশমিশ ও বাদাম দিয়ে সাজিয়ে নিন।
ছোলার ডালের হালুয়া
উপকরণ :
১. ছোলার ডাল আধা কাপ,
২. চিনি আড়াই কাপ,
৩. ঘি এক কাপের একটু কম,
৪. তেল এক কাপের একটু কম,
৫. খাওয়ার সোডা আধা চা চামচ,
৬. পেস্তা বাদাম কুচি ২ টেবিল চামচ,
৭. এলাচির গুঁড়া আধা চা চামচ,
৮. কেওড়া পানি ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি : ডাল ৫-৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে মিহি করে বেটে এলাচির গুঁড়া চিনি দিয়ে মাখিয়ে দুই ঘণ্টা রাখতে হবে। তেল ও ঘি একসঙ্গে গরম করে ডাল দিয়ে ভুনতে হবে। হালুয়া যখন ফাঁপা হয়ে আসবে, তখন খাওয়ার সোডা দিয়ে কিছুক্ষণ ঘি মাখানো ডিশে ঢেলে ওপরে পেস্তা বাদামের কুচি ছড়িয়ে দিয়ে পছন্দমতো টুকরো করে পরিবেশন করতে হবে।
মাসকাট হালুয়া
উপকরণ :
১. কর্নফ্লাওয়ার ১ কাপ,
২. চিনি ২ কাপ বা স্বাদমতো,
৩. ময়দা আধা কাপ,
৪. চায়না গ্রাস ১৫ থেকে ১৭ গ্রাম (১ কাপ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট),
৫. পানি দেড় কাপ (শিরার জন্য),
৬. ঘি ও তেল ১ কাপ,
৭. লেবুর রস ১ চা-চামচ,
৮. কমলার রস ১ টেবিল চামচ,
৯. ফুড কালার কমলা ও সবুজ (ইচ্ছেমতো অন্য রংও দিতে পারেন) ১ ফোঁটা করে,
১০. পেস্তাবাদাম কুচি ২ টেবিল চামচ,
১১. শুকনা নারকেলের কুচি সাজানোর জন্য।
প্রণালি :
> কর্নফ্লাওয়ার ও ময়দা ৫ কাপ পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন পানি ওপর থেকে ফেলে দিয়ে মিশ্রণটি দুই ভাগ করে তাতে আলাদা দুই রং মিশিয়ে রাখুন। একটি পাত্রে চিনি ও পানি জ্বাল দিন। চিনি ভালোমতো গলে গেলে তা থেকে অর্ধেক পরিমাণ অন্য একটি পাত্রে সরিয়ে রাখুন। এখন শিরার একটিতে কমলার রস ও অন্যটিতে লেবুর রস দিয়ে রাখুন। এবার ভেজানো চায়না গ্রাস চুলায় দিয়ে গলিয়ে নিন। এ সময় লেবুর শিরার পাত্র চুলায় দিয়ে এর মধ্যে ওপর থেকে চিকন ধারায় সবুজ মিশ্রণটি ঢালুন। নাড়তে থাকুন ও অর্ধেক চায়না গ্রাস মিশিয়ে একটি পাত্রে জমতে দিন। একই নিয়মে কমলা হালুয়াটিও তৈরি করুন। দুই রকম হালুয়ার ওপরে নারকেল ছড়িয়ে দিয়ে জমে গেলে পছন্দমতো আকারে কেটে পরিবেশন করুন।