এতটুকু মায়া না-করে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলে দিয়ে গিয়েছিল পরিবার। মায়া করবে কী, তারা তো জানত এ ছেলে, ছেলে নয়। আসলে ‘শয়তানের বাচ্চা’। অশুভ আত্মা ভর করে রয়েছে। অপুষ্ট, রুগণ মাথাসার ‘কুত্সিত’ ভুখা চেহারাটাই হয়তো এমনটা ভাবতে বাধ্য করেছিল। বা, এ-ও হতে পারে, পড়শিদের চাপে পড়েই কোলের বাচ্চাকে ফেলে যেতে বাধ্য হয়েছিল পরিবার।
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। ঠিক একবছর আগের একদিন। আবর্জনা ঘেঁটে বাচ্চাটিকে শেষপর্যন্ত যখন তুলে আনা হয়, নিশ্চল চোখজোড়া। ধুলো মাখামাখি আদুল গায়ে আপাদমস্তক অপুষ্টির আঁচড়। অস্তিমজ্জাসার সেই শরীর যে তখনও বেঁচে, বুকের খাঁচার ধুকপুকানি তা জানান দিচ্ছিল। আর কয়েক ঘণ্টা এভাবে পড়ে থাকলে, মৃত্যুই হতো ভবিতব্য। যে মৃত্যু নিশ্চিত করতেই ‘নির্দয়’ পরিবার ছুড়ে ফেলে দিয়ে গিয়েছিল আস্তাকুঁড়ে।
একবছর আগের সেই ছবি নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে তোলপাড় ফেলেছিল। এক বিদেশিনি অপার স্নেহে বাচ্চাটিকে জল খাওয়াচ্ছে। একহাতে মুখে ধরা মিনারেল ওয়াটারের বোতল, অন্য হাতে খাবারের প্যাকেট। ফেসবুক, ট্যুইটারে শেয়ারের পর শেয়ার হয়েছে।
এক বছর বাদে আবারও পোস্ট হয়েছে সেই একই ধরনের ছবি। মুখে ধরা জলের বোতল। কিন্তু, তার মধ্যেই আমূল পরিবর্তন। এক বছর আগের নাইজেরিয়ার সেই বাচ্চাটিই যে এ, না-বললে, শুধু দেখে চেনার উপায় নেই।
অপুষ্টির আর ছিটেফোঁটাও নেই। গায়েগতরেও পুরুষ্ট, অন্য পাঁচটা সুস্থ-স্বাভাবিক বাচ্চার মতো। এখন সে স্কুলেও যাচ্ছে। আফ্রিকায় কর্মরত যে ডেনিশ NGO কর্মী শিশুটিকে উদ্ধার করেছিলেন, সেই আনিয়া রংগ্রেন লভেনই ছবিটি পোস্ট করেছেন। বাচ্চাটির নাম রাখা হয়েছে হোপ।
তার প্রথম স্কুলে যাওয়ার দিনই এই ছবিটি তোলা।