১. প্রসব ব্যথায় রোজা ভাঙা :
যদি রোজা না ভাঙলে গর্ভবতী মহিলার অথবা বাচ্চার কোনো ক্ষতি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে, তাহলে রোজা ভেঙে ফেলা বৈধ। এ ক্ষেত্রে তার ওপর রোজার কাজা করা ওয়াজিব, কাফফারা নয়। এ ধরনের আশঙ্কা ছাড়া রোজা ভাঙা গুনাহ। তাতে কাফফারা দেওয়াও ওয়াজিব হবে। তবে যদি ওই দিন সূর্যাস্তের আগেই বাচ্চা জন্ম হয়, তাহলে কাফফারা রহিত হয়ে যাবে। (সূত্র : আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৪৪২)
২. প্রসূতি ও দুর্বল মহিলার বিধান :
বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর প্রসূতি অথবা রুগ্ন দুর্বল মহিলা, যে রোজা রাখতে পারে না, এমতাবস্থায় তার পক্ষে ফিদয়া দেওয়া যথেষ্ট নয়। যদি ফিদয়া দিয়ে দেয় এবং পরে সুস্থ হয় এবং ক্ষমতা এসে যায়, তাহলে ওই রোজার কাজা করা জরুরি। (সূত্র : ফাতাওয়া দারুল উলুম, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪৭৮)
৩. দুধ পান করালে রোজা ও অজু ভাঙে না :
দুধ পান করানোর দ্বারা মহিলাদের রোজা ও অজু ভাঙে না। রোজা এ জন্য ভাঙে না, দুধ বের হওয়াই স্বাভাবিক। রোজা তো পানাহার ও যৌনাচার Sexual থেকে বিরত থাকার নাম। (সূত্র : ফাতাওয়া দারুল উলুম, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৪০৮)
৪. ঋতুবর্তী মহিলার রমজানুল মোবারকে পানাহারের বিধান :
রমজান মাসে Ramadan month মহিলাদের মাসিক বা ঋতুস্রাব চলার কারণে রোজা না রাখলে অথবা রোজা রাখার পর ঋতুস্রাব Menstruate শুরু হলে তার জন্য পানাহার করা বৈধ। তবে অন্য লোকদের সামনে পানাহার করা উচিত নয়। দিনের বেলায় যদি ঋতু বন্ধ হয়ে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে, তাহলে দিনের বাকি অংশে রোজাদার এর মতো পানাহার ও যৌনাচার বর্জন করা ওয়াজিব। (সূত্র : আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৪২০)
৫. রোজা অবস্থায় বাচ্চাকে মুখ দিয়ে চিবিয়ে খাওয়ানো :
রোজা রাখা অবস্থায় নিজের ছোট বাচ্চাকে মুখ দিয়ে চিবিয়ে কোনো খাদ্য খাওয়ানো মাকরুহ। (সূত্র : বেহেশতি যেওর, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ১৩)।
নারীদের অপবিত্র থাকার সময়ে নামাজ পড়া, রোজা রাখা, কোরআন তিলাওয়াত ও মসজিদে প্রবেশ নিষিদ্ধ, যেভাবে তা অপবিত্র পুরুষের জন্য নিষিদ্ধ। কিন্তু তারা বিভিন্ন দোয়া-দরুদ, তাসবিহ-তাহলিল ও জিকির-আজকার করতে পারবেন। এমনকি দোয়া হিসেবে আয়াতুল কুরসি ও কোরআনের বিভিন্ন আয়াত পাঠ করা যাবে। এতে সাওয়াব পাওয়া যাবে, নিরাপত্তাও লাভ হবে।
পারিবারিক ও সামাজিক কারণে আমাদের দেশের নারীরা রমজানে কঠোর পরিশ্রম করে থাকেন। বিশেষত সাহরি ও ইফতারের প্রস্তুতির ভার তাঁদেরই বহন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে পুরুষের উচিত নারীদের যথাসম্ভব সহায়তা করা। কেননা পরিবার নারী-পুরুষ সবার। নারীরাও রক্ত-মাংসের মানুষ। তাঁরাও রোজা রাখেন। কাজেই তাঁদের ওপর অতিরিক্ত কাজের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া অনুচিত। মহানবী (সা.) গৃহস্থালি কাজে তাঁর স্ত্রীদের সাহায্য করতেন। তাঁর জীবন ঈমানদারদের জন্য উত্তম আদর্শ। গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান
সুত্রঃ প্রিয় ইসলাম