প্রতিদিন আমরা যেসব খাবার খেয়ে থাকি তার মধ্যে কিছু খাবার ভুলেও ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। কারণ ফ্রিজে রাখলেই যে খাদ্যবস্তু অবিকৃত এবং তাতে পুষ্টি বজায় থাকবে , এমন নয়। দেখে নিন কোন খাবারগুলো ফ্রিজে রাখা উচিৎ নয়।
১) সেদ্ধ ডিম
আমরা প্রত্যেকেই ডিম কিনে ফ্রিজে রেখে দিই এবং প্রয়োজন মতো বের করে রান্না করি । তবে এমনও অনেকে আছেন , যারা সময় সাশ্রয় করতে ডিম সেদ্ধ করে ফ্রিজের ভিতরে রেখে দেন । সমস্যাটা ঠিক এখানেই। কারণ সেদ্ধ অবস্থায় ডিম ফ্রিজে রাখলে ডিমের সাদা অংশ শুকিয়ে যেতে শুরু করে এবং ডিমের গায়ে ফাটল ধরে । ফলে ডিমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া ঢুকে যায় । এছাড়াও ডিমের স্বাদও বদলে যায় এবং ডিমের সাদা অংশটি রাবার ব্যান্ডের মতো শক্ত হয়ে যায় । তাই শরীরকে সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে ফ্রিজে ডিম রাখা চলবে না ।
২) দুগ্ধ জাত খাদ্য
দুধ দিয়ে বানানো কোনও কিছুই ফ্রিজে রাখা উচিত নয় । যেমন ধরুন , ফ্রিজে দুধ রাখলে তা দইয়ের মতো হয়ে যায় । আবার , চিজ ফ্রিজে রাখলে তারও স্বাদ এবং আকারের পরিবর্তন হয় ।
৩) ভাজা জাতীয় খাবার
যে কোনওরকম ভাজা , তা সে চপ হোক বা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই , চেষ্টা করুন গরম গরম খেয়ে নিতে । ভুলেও এই ধরণের খাবারগুলি ফ্রিজে রেখে পরে খাবেন না । কারণ এই ধরণের খাবারগুলি বাসি অবস্থায় খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে । এছাড়াও হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে ।
৪) কার্বোনেটেড পানীয়
ফ্রিজে থরে থরে সাজানো কোল্ড ড্রিঙ্ক । মনের ইচ্ছায় যখন খুশি পান করলেই হল । কিন্তু এমনটা করলে নিজের মৃত্যুকেই কাছে টেনে আনবেন । কারণ কোল্ড ড্রিঙ্ক বেশিদিন ফ্রিজে রেখে দিলে তাতে অ্যালুমিনিয়াম জাতীয় পদার্থ মিশে যায় এবং কোল্ড ড্রিঙ্কে উপস্থিত সোডা আরও বিষাক্ত হতে শুরু করে । তাই কোল্ড ড্রিঙ্ক পান করার ইচ্ছা হলে কেনার পরপরই খেয়ে নেবেন । বেশিদিন ফ্রিজে রেখে পান করবেন না ।
৫) রান্না করা পাস্তা
ব্যস্ত জীবনে রান্না করার সময় কই ! তাইতো এক সপ্তাহের খাবার রান্না করে ফ্রিজে রেখে একটু একটু করে খেলেই হল । আর যদি বেশী পরিমাণে পাস্তা , নুডলস রান্না করে রাখা যায় , তাহলে তো কথাই নেই । সত্যিই যদি আপনার জীবন এমন নিয়মের দাস হয় , তাহলে কিন্তু খুব মুশকিল। কারণ পাস্তা বা ময়দাজাত খাবার বেশীদিন ফ্রিজে রাখলে তার স্বাদ তো পরিবর্তন হয়েই যায় , সেই সঙ্গে তা খাওয়ার অযোগ্যও হয়ে যায় । ফলে এমন খাবার খেলে শরীরের নানারকম সমস্যা দেখা দেয় । তাই কোনও ভাবেই পাস্তা জাতীয় খাবার বেশি দিন ফ্রিজে রাখা উচিত নয় ।
৬) যে সব ফল বা সব্জিতে পানির পরিমাণ বেশি
ফ্রিজে শসা , তরমুজ , খরমুজ , আপেল এগুলো তো রেখে দেওয়াই হয় , তাই না ? এছাড়াও লেটুস , পালং এই ধরণের শাকও জায়গা করে নেয় ফ্রিজে । কিন্তু জানা আছে কি , এই ধরণের ফল বা সবজি একদমই ফ্রিজে রাখা উচিত নয় । কারণ এই ধরণের খাবারে প্রচুর পরিমাণে জলীয় পদার্থ থাকে । তাই ফ্রিজে রাখার সঙ্গে সঙ্গে এগুলি বরফের মতো জমে যায় । আবার ফ্রিজ থেকে বার করে আনলে এগুলি নরম হতে শুরু করে । ফলে স্বাদ একেবারে নষ্ট হয়ে যায় ।
৭) মাছ বা মাংস
সপ্তাহে একদিন বাজারে গিয়ে বেশী পরিমাণ মাছ মাংস কিনে আনা এখন যেন রেওয়াজ । কারণ সারা সপ্তাহের ব্যস্ততায় কেউই আর প্রতিদিন বাজার যেতে পারেন না । তবে কী জানেন , প্রতিদিন ফ্রিজে রাখা এই সব মাছ মাংস বারবার বের করে , বাকি থাকা পরিমাণ ফ্রিজে রাখতে রাখতে তাঁর খাদ্যগুন নষ্ট হয়ে যায় । আরও মারাত্মক বিষয় হল এই পদ্ধতির মাধ্যমে মাছ বা মাংসে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে শুরু করে । ফলে এমন ধরনের খাবার খেলে শরীর খারাপ হওয়া কেউ আটকাতে পারে না ।
৮) সবুজ শাক
ফ্রিজে কোনও দিন ধনেপাতা , পার্সলে পাতা রেখেছেন ? দেখেছেন কি হয় ? এমনটা করলে এক দুদিনের মধ্যে কেমন খয়েরি রঙের হয়ে যায় শাকগুলি । তাই তো এই ধরণের শাককে কখনও ফ্রিজে রাখা উচিত নয় ।