আমাদের মধ্যে অনেকে যেমন অতিরিক্ত ওজনের হন, তেমনই এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁদের ওজন প্রয়োজনের তুলনায় কম। দুটোই সুস্থ থাকার জন্য সমস্যা। উচ্চতা অনুসারে ওজনের যে সঠিক নির্দেশনা রয়েছে, এর কমবেশি হলে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অসুবিধা হতে পারে। সাধারণত একজন পরিণত মানুষের ওজন যদি স্বাভাবিকের থেকে কম হয়, তাহলে কিন্তু এই ‘আন্ডারওয়েট’ সমস্যায় ভুগতে হয়।
আন্ডারওয়েট হলে তাঁর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা একেবারেই কমে যায়। কম ওজনের অনেকেই আমাকে বলেন, পছন্দসই জামাকাপড় পরার পর নিজেকে দেখে মনে হয় সেগুলো হ্যাঙ্গারে ঝুলছে। এ ছাড়া নানা কটুকথাও শুনতে হয় কম ওজনের কারণে। সব মিলে জীবনে চলে আসে হতাশা। তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে ওজন বাড়ানোর জন্য কিছু খাবার নিয়মিত খেতে পারেন। এতে ওজন বাড়তে সাহায্য করবে।
শুকনো ফলমূল
শুকনো ফলমূল (ড্রাই ফ্রুটস) ওজন বাড়ানোর জন্য আদর্শ খাবার। এগুলোতে ক্যালরির মাত্রা বেশি থাকে। তাই শুকনো কাজুবাদাম, কিশমিশ, খেজুর বা আমণ্ড খেলে আপনার মোটা হওয়ার ইচ্ছা খুব তাড়াতাড়ি পূর্ণ হবে। নিয়মিত সকালে নাশতার সময় ১০-১২টি আমণ্ড বা কাজু, কিশমিশ বা খেজুর খাওয়া শুরু করুন। তবে এগুলো খাওয়ার আগে রাতে আধা কাপ পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খাওয়া ভালো। যদি দিনে কমপক্ষে তিনবার খাওয়া যায়, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ওজন বাড়বে। তবে এই শুকনো ফলও খেতে হবে পরিমাণমতো।
পিনাট বাটার
পিনাট বাটার উচ্চ ক্যালরিযুক্ত একটি খাবার। তাই প্রতিদিন একবার করে পাউরুটির সঙ্গে অথবা বিস্কুটে খানিকটা পিনাট বাটার মেখে খেয়ে ফেলুন। এতে কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি ওজন বাড়ে। অনেকে কোনো খাবারের সঙ্গে না মিশিয়ে শুধু পিনাট বাটার খেতেও ভালোবাসেন।
সহজলভ্য আলু
কার্বোহাইড্রেট ও কমপ্লেক্স সুগারে পরিপূর্ণ একটি খাবার আলু। তাই এই উপাদান আপনাকে খুব ভালোভাবে সাহায্য করবে ওজন বাড়াতে। প্রতিদিন দুবার করে খাবার পাতে সেদ্ধ আলু খান। এ ছাড়া আলুর তৈরি চিপস জলপাই তেলে ভেজে সংরক্ষণ করে রেখেও খেতে পারেন। দুই মাস নিয়মিত আলু খেলেই নিজের ওজনের পার্থক্য আপনার চোখে ধরা দেবে।
ডিম
ওজন বাড়ানোর জন্য ডিমের ওপর সহজেই আস্থা রাখতে পারেন। এতে থাকা চর্বি, প্রোটিন ও গুড ক্যালরি আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ওজন বাড়াতে চাইলে নিয়মিত ডিম খাওয়া শুরু করুন। প্রতিদিন তিন-চারটি ডিমের সাদা অংশ খান, দ্রুত ওজন ফিরে পাবেন। তবে কোনোভাবেই কাঁচা ডিম খাবেন না। সেদ্ধ করা ডিমের সাদা অংশ খাওয়া উচিত। নিয়মিত ডিম খেলে দুই মাসের মধ্যেই আপনার ওজন বেড়ে যাবে।
ভাতের মাড়
সবার বাড়িতেই কমবেশি ভাত রান্না হয়। ভাত রান্না করার পরে যে মাড় বের হয়, সেই মাড় খেলেও ওজন বাড়ে। ভাত ছাঁকার পর মাড়টুকু আলাদা করে সংরক্ষণ করে অল্প লবণ গুলে পান করতে পারেন। ভাতের মাড়ে প্রচুর শক্তি থাকে। এটা শরীরকে মোটা হতে সাহায্য করে।
হরেক রকম সবজি
পরোটার সঙ্গে প্রতিদিন কলিজা ভুনা না খেয়ে মাঝেমধ্যে সবজি খান। সবজির মধ্যে আলু, গাজর, শিম ইত্যাদি ওজন বাড়ানোর জন্য ভালো। এ ছাড়া ডালও ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
তাজা ফলমূল
সকালের নাশতায় ফলমূল রাখতে পারেন। ফলের মধ্যে মিষ্টিজাতীয় ফল যেমন আপেল, আঙুর, কলা, নাশপাতি ইত্যাদি ওজন বাড়ানোর জন্য ভালো।
এই খাবারগুলো নিয়মিত খেতে থাকুন, ওজনের সমস্যা মিটে যাবে সহজেই। তবে ওজন বাড়াতে গিয়ে আবার অতিরিক্ত করে ফেলা কোনো কাজের কথা নয়। তাই কাঙ্ক্ষিত ওজন বাড়ার পর সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখুন। তাহলেই সুস্থ থাকতে পারবেন।