মেয়েদের ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার সব থেকে সাংঘাতিক রোগ গুলির মধ্যে একটি। এটা এমন এক কঠিন ব্যাধি যা ডিম্বাশয়ে শুরু হয় এবং আস্তে আস্তে শরীরের সমস্ত অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। ক্যান্সার কোষগুলি মেয়েদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আস্তে আস্তে ভেঙে দেয়। খিদে নষ্ঠ হয়ে যাওয়া থেকে কোমরে যন্ত্রণা এই সব কিছুই ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারের লক্ষণ নিচের ১৫টি ছবিতে ব্যাখ্যা করা হল।
সাবধানে থাকুন সুস্থ থাকুন!
বুকজ্বালা
আপনি অ্যাসিডিটিতে ভুগলে বুকের পিছন দিকে জ্বালা করে। এর ফলে আপনার অনেক সময় বমি ভাবও আসে, এর সাথে ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারের সম্পর্ক খুবই বিরল, তবুও আপনি নিশ্চয়ই কোন সুযোগ নিতে চাইবেন না যদি এরকম বার বার ঘটতে থাকে।
শ্রোণী ব্যথা
যৌনসংসর্গের সময় যন্ত্রণা হওয়া খুব সাধারণ ব্যাপার, এটা বিভিন্ন কারণে হতে পারে যৌনিতে নীরসতা, আঁটো ভাব, জ্বালা, স্বাস্থ্যবিধি না মানা ইত্যাদি। কিন্তু তলপেটে যন্ত্রণা হলে সেটা ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারের শেষ পর্যায় হতে পারে।
অস্বাভাবিক পেট ফোলা
ডিম্বাশয়েতে ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এই লক্ষণটিকে নিঃশব্দ ঘাতক বলা যেতে পারে। আমরা যে উপসর্গটিকে খুব ছোট বলে এড়িয়ে যাই তা হল দেহের মধ্যভাগ ফোলা। এরকম হলে কখনও অবহেলা করবেন না (বিশেষ করে মধ্য বয়স্ক না হলে) এবং শীঘ্রই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
ক্লান্তি
ঠিকমত না খেলে মানুষ ক্লান্তিতে ভোগে আবার ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারের ফলেও মানুষ ক্লান্তিতে ভোগে, তবে কারণ সম্পূর্ণ আলাদা। ক্লান্তিতে ভোগা মানেই ক্যান্সার হওয়া নয়। ক্যান্সারের কোষগুলি বৃদ্ধি পেয়ে সচল হয়ে ওঠার ফলে ক্লান্তি দেখা যায়।
খিদে মরে যাওয়া
ক্যান্সার কোষগুলি দ্রুত বৃদ্ধি পেলে খুব অল্প খাবার পরই মনে হয় পেট খুব ভরে গেছে আর পেটে জায়গা নেই।
স্থূলতা অথবা ওজন হ্রাস
খিদে পাওয়ার পরও খেতে ইচ্ছা না করলে সেটা থেকে ওজন হ্রাস হতে পারে বা স্থূলতা আস্তে পারে। যখন আপনি জীবনে এরকম সব সমস্যার সম্মুখীন হন তখন বলা যেতে পারে ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারের সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে।
অন্ত্রের সমস্যা
এইসব কিছুর সাথে ক্যান্সার যেটাকে আক্রমণ করে তা হল পাচনতন্ত্র। হ্যাঁ ঠিক এইভাবেই ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে, শরীরের একটার পর একটা অংশ আস্তে আস্তে নষ্ঠ করতে করতে। তাই এইধরনের কোন লক্ষণ দেখা দিলে তা কখনই হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।
এরপরে যে সমস্যাগুলি তৈরি হয় তা হল ডাইয়োরিয়া, কনস্টিপেশান, তলপেটে যন্ত্রণা, গ্যাস ইত্যাদি। আপনার প্রতিরোধ ক্ষমতা এইভাবে ব্যাহত হলে বলা যেতে পারে এটা ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারের লক্ষণ।
অনিয়মিত পিঠে ব্যাথা
জিমে স্বাভাবিকের থেকে বেশি পরিশ্রম করে পিঠে ব্যাথা হওয়া এক জিনিস আর আচমকা অনিয়মিত পিঠে ব্যাথা হওয়া আর এক জিনিস। এইরকম লক্ষণ ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার এর ২ বা ৩ নম্বর ধাপে দেখা যায়।
অবসাদ
আপনি সবসময় ক্লান্ত অবসাদগ্রস্ত থাকেন, আপনি যাই করুন না কেন অবসাদ কাটে না।
নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা
ডাক্তারদের মত অনুসারে ক্যান্সার যখন শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পরে তার মানে সেটা ৪ নম্বর স্টেজ। খুব তাড়াতাড়ি হাঁপিয়ে ওঠা, শ্বাস কষ্ট হওয়া এর লক্ষণ।
অনিয়মিত পিরিয়ড
আপনি নিশ্চয়ই এর মধ্যে কিছু কিছু লক্ষণ জেনেছেন, কিন্তু মূল ব্যাপার হল এই লক্ষণগুলিকে ভাল করে পর্যবেক্ষণ করা। যেমন অন্যান্য সমস্যার সাথে অনিয়নিত পিরিয়ড ক্যান্সারের একটা লক্ষণ হতে পারে।
মেনোপজের পরে রক্তপাত
আপনি মেনোপজ পর্যায়ে আছেন এবং আপনার পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু মাসখানেক বাদে আবার হঠাত করে পিরিয়ড চালু হয়ে যাওয়া।
এটা ডিম্বাশয়ের সামান্য কোন সমস্যা হতে পারে আবার ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারও হতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরীক্ষা করিয়ে নিন।
ঘনঘন মূত্রের চেষ্টা
ইদানীং আপনার বার বার প্রস্রাব হচ্ছে, এটা খুব ভাল লক্ষণ নয়, এটা ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার এর ২ নম্বর ধাপ হতে পারে।
পি.এম.এস
পি.এম.এস এর লক্ষণের সাথে ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারের অনেক মিল আছে, কিন্তু যেহেতু আমাদের চিকিৎসাবিদ্যা এখনও ক্যান্সারের কোষ সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানতে পারেনি, তাই এইধরনের ছোটখাটো ব্যাপারের ওপর ভাল করে নজর রাখা উচিত।
অনেক রকমের উপসর্গ
শেষে বলা যেতে পারে এইধরনের উপসর্গগুলি যে কোন ক্যান্সার রুগী রোজকার জীবনে তাদের অভিজ্ঞতা হতেও পারে নাও পারে। ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার হোক বা না হোক আপনার শরীরে একটা তো কিছু সমস্যা হচ্ছে এবং তার সঠিক চিকিৎসা দরকার। এছাড়াও বয়স একটা ব্যাপার হতে পারে, যে কোন পঞ্চাশ উরধ মহিলা যার বংশে কারুর স্তন বা ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার ছিল বা আছে সে এধরনের রোগের শিকার হতে পারে।
আপনার ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার নাও থাকতে পারে কিন্তু এই উপসর্গগুলি জেনে রাখা ভাল।