বাচ্চার কতটুকু পানি প্রয়োজন সেটি আসলে নির্ভর করে বাচ্চার অবস্থা, ওজন ও বয়সের ওপর। জ্বর বা অসুখের সময় পানির বেশি প্রয়োজন। বেশি গরম পড়লে, খেলাধুলা করলে বেশি পানি দিতে হবে। ডায়রিয়াতেও প্রয়োজন বেশি পানি। অপরদিকে শরীরে পানি জমলে বা ইডিমা হলে পানি গ্রহণ কমিয়ে দিতে হয়।
আমাদের দেশে ৪-৮ বছরের শিশুরা দিনে ১.১ লিটার থেকে ১.৩ লিটার পর্যন্ত পানি খাবে।
শিশুর শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে তার খিটখিটে মেজাজ, মনঃসংযোগের অভাব, রুক্ষ ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
একটি শিশুর শরীরে ৭৫% ফ্লুইড থাকে। শিশু যত বড় হতে থাকে, জলীয় পদার্থের পরিমাণ কমে ৬০%-এ এসে দাঁড়ায়। শরীরের জন্য পানি তাই অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তবে অতিরিক্ত পানিও আবার বিপদ ডেকে আনতে পারে। দিনে প্রাপ্তবয়স্কদের ২ লিটার করে জল খাওয়া উচিত, এ কথা এতদিনে আমরা সবাই জানি। কিন্তু একটি শিশু দিনে কতটা পানি খাবে? কী বলছেন ডাক্তাররা শুনুন-
শিশুর প্রতিদিনের পানির চাহিদা
বয়স পানির চাহিদা
সাত -১২ মাস আধা লিটার থেকে পৌনে এক লিটার
এক-তিন বছর এক থেকে সোয়া এক লিটার
চার- আট বছর দেড় থেকে দুই লিটার
নয় -১৬ বছর দুই থেকে আড়াই লিটার
সরাসরি পানি ছাড়াও দুধ, ফলের রস থেকেও ফ্লুইড ঢোকে শিশুর শরীরে। শিশুর শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে তার খিটখিটে মেজাজ, মনঃসংযোগের অভাব, রুক্ষ ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শিশুরা একবারে বেশি পানি খেতে পারে না। তাই একটু একটু করে বারে বারে পানি খাওয়ানো দরকার। কোথাও যাওয়ার আগে, খাওয়া শুরু করার আগে পানি খাওয়ান। বাইরে কোথাও গেলে সঙ্গে পানির বোতল রাখুন। পরিমাণ মতো পানি খেলে শিশু থাকবে হাসি-খুশি, প্রাণবন্ত।
ছয় মাসের পর থেকেই শিশুকে বাড়তি পানি খাওয়াতে হবে। এক বছর বয়সে শিশুরা সাধারণত নিজে নিজে পানি খেতে পারে। খিচুড়ি খাওয়ানোর পর এ সময় প্লাস্টিক বা ম্যালমাইনের গ্লাসে পানি দিয়ে দিন। বাচ্চাকে রঙিন আকর্ষণীয় মেলামাইনের বা স্টিলের মগ বা গ্লাসে পানি ঢেলে ধীরে ধীরে পানি খেতে শেখান। দেখবেন, পরবর্তীকালে বাচ্চা নিজে থেকেই পানি খাবে।
মনে রাখতে হবে, ডায়রিয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শে দৈনিক চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণে স্যালাইন ও পানি পান করতে হবে। শিশুর যেকোনো অসুস্থতাতেও বেশি পরিমাণে পানি পান করাতে ভুলবেন না যেন।