সব মানুষই চায় সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন।এর জন্য যে কাজ গুলো করতে হয় তা করতে গিয়ে অনেকেই হোঁচট খান। মানুষ ভবিষ্যতের লাভের জন্য বর্তমানের আনন্দকে ত্যাগ করাটা খুব কঠিন মনে করে। বর্তমান শতাব্দীতে উন্নত ঔষধ, উন্নত স্যানিটেশন, নিরাপত্তা, কাজের পরিবেশ ও ব্যাক্তি সতর্কতার ফলে বিশ্বের প্রথম সাড়ির দেশ গুলুতে গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে।
বর্তমানে একজন পুরুষের গড় আয়ু ৬৮.৫ বছর এবং একজন মহিলার গড় আয়ু ৭৩.৫বছর। শুধুমাত্র দীর্ঘ জীবন নয় সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন পাওয়ার জন্য কতগুলো পন্থা অবলম্বন করা প্রয়োজন। আসুন জেনে নেই সেই পন্থা গুলো ও এগুলো অনুসরণের মাধ্যমে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভ করি:
১। প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ বন্ধ করুন: প্রক্রিয়াজাত খাবারে অনেক বেশি চিনি, লবণ ও ফ্যাট থাকে এবং এইসব খাবারে ফাইবার/ আঁশ কম থাকে। প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে হার্ট অ্যাটাক, হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।তাই আপনার খাদ্য তালিকা থেকে প্রসেসড ফুড বাদ দিয়ে শাকসবজি, ফলমূল ও আঁশ জাতীয় খাবার খান,ধূমপানের অভ্যাস থাকলে বাদ দিন এবং প্রচুর পানি পান করুন।
২। নেতিবাচক চিন্তা বাদ দিন: নেতিবাচকতা আপনার ভেতরের শক্তিকে নষ্ট করে দেয় এবং আপনার স্ট্রেস লেভেল বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে রাগ, হতাশা, বিষণ্ণতা ও উদ্বিগ্নতা বৃদ্ধি পায় এবং অধিক খাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। তাই নেতিবাচকতা পরিহার করে ইতিবাচক হোন।
আপনার জীবনের লক্ষ্য ঠিক করুন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করুন এতে আপনার স্ট্রেস কমবে ফলে আপনি দীর্ঘজীবী হবেন।
৩। একভাবে বসে থাকবেন না: বর্তমানের একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, ব্যায়ামের মাধমে দীর্ঘমেয়াদি অসুখ যেমন- ক্যান্সার ও স্থূলতা র সম্ভাবনা কমায়। দিনে ৩০ মিনিটের ব্যায়াম আপনার আয়ু বাড়িয়ে দেবে।
২০১১ সালে The Lancet e প্রকাশিত গবেষণা পত্রে দেখা গেছে যে, দিনে ১৫ মিনিটের ব্যায়াম যারা করেছেন তাদের আয়ু ৩ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে এবং যারা দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করেছেন তাদের আয়ু ৪ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। তাইওয়ানের ৪১৬০০০ নারী ও পুরুষ কে নিয়ে এই গবেষণাটি করা হয়। তাই দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা লাভের জন্য সারাদিনের কিছুটা সময় বেছে নিন ব্যায়ামের জন্য।
৪। রাতের ঘুম ছাড় দেবেন না: ঘুমের ব্যাপারে কার্পণ্য করবেন না। স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন এর জন্য প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন । ২০০৭ সালে ঘুম বিষয়ক একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা পত্র থেকে জানা যায় যে , ঘুমের হ্রাস বৃদ্ধি মানুষের মৃত্যু হারের উপর প্রভাব বিস্তার করে।
নিয়মিত কম ঘুমালে হৃদরোগ,ডায়াবেটিস ও স্থূলতার মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আর নিয়মিত ভালো ঘুম হলে স্ট্রেস, ডিপ্রেশন ও হার্ট ডিজিজ দ্রুত ভালো হয়।
বড় কোন পরিবর্তন নয় ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে নিজের জীবনযাপনের ধরণের পরিবর্তন করুন। আপনার বাবা বা দাদা অনেকদিন বেঁচে ছিলেন বলে আপনিও অনেকদিন বেঁচে থাকবেন তাই সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভের জন্য আপনাকে কোন চেষ্টা করতে হবেনা এমনটা ভাববেন না।
আবার আপনার পূর্ব পুরুষ রা দীর্ঘায়ু লাভ করেন নি বলে আপনি ও দীর্ঘজীবী হতে পারবেন না এই ধরণের ধারণা বা ভয় ও লালন করা ঠিক না। ইতিবাচক ভাবে চিন্তা করুন এবং জীবনে সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু লাভ করে জীবনকে পরিপূর্ণ ভাবে উপভোগ করুন।