পৃথিবীতে সন্তানের সাফল্যই বাবা-মায়ের সবচেয়ে বড় আনন্দের বিষয়। সন্তানকে সেভাবেই ‘মানুষ’ করতে হয়, যাতে সে সফল হবেই। সন্তানের সাফল্যের জন্য বাবা-মায়ের এই কাজগুলি অবশ্যই করা দরকার।
মূল্যবোধের শিক্ষা :
টাকা-পয়সা, নাম, যশ, খ্যাতিকেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা জীবনের সফলতা ভাবি। এগুলো জীবনের সফলতা, ঠিক। কিন্তু জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা হচ্ছে, ভালো মানুষ হয়ে ওঠা। পরিবারই একটি শিশুর সবচেয়ে বড় শিক্ষক। সন্তানের সাফল্যের জন্য এই কাজগুলি অবশ্যই করুন।
সন্তানের রোল মডেল বা আদর্শ হওয়া :
জীবনে যারা সফল হয়েছে, তারা কোনো না কোনো সময় কারো না কারো দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন। সেসকল মানুষই আমাদের কাছে রোড মডেল। সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় রোড মডেল তার বাবা-মা।
সন্তানের সামনে নিজেদেরকে রোল মডেল হিসেবে তৈরি করে উপস্থাপন করতে হবে।
সামাজিকতা শিক্ষা :
সন্তানকে ছোট থেকেই সামাজিক হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। তার সমবয়সী বাচ্চার সঙ্গে খেলতে দেওয়া, কোনো সমস্যা হলে মা-বাবা সাহায্য না করে, তার বন্ধুদের নিয়ে তার সমস্যা সমাধানের জন্য উৎসাহ দেওয়া।
তবে সন্তান কার সঙ্গে মেলামেশা করছে, সে অসামাজিক হয়ে উঠছে কিনা, তা নজরে রাখতে হবে।
বাড়ির ছোট ছোট কাজ করতে দেওয়া :
সন্তানকে ৫ বছরের পর থেকেই বাড়ির ছোট ছোট দায়িত্ব দিতে হবে। এর মাধ্যমে তার দায়িত্ববোধ গড়ে উঠবে। এই দায়িত্ববোধের জ্ঞান তাকে জীবনের নানা ক্ষেত্রে সফল হতে সাহায্য করবে। খেলনা গুছিয়ে রাখা, পড়ার টেবিল পরিষ্কার রাখা, জুতার ফিতা বাঁধতে শেখা, এই সব ছোটো ছোটো কাজগুলি সন্তানকে একাই করতে দিন।
কম মানসিক চাপ :
কোনো কিছুই যেন সন্তানের মানসিক চাপের কারণ না হয়। পড়াশুনা নিয়ে কখনোই সন্তানকে চাপ দেবেন না। আপনাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ থাকলে, তার প্রভাব যেন কোনওভাবেই সন্তানের ওপর না পড়ে। সন্তানকে ভারমুক্ত রাখুন, সবসময়ই তার সঙ্গে ইতিবাচক কথা বলুন।
সাধনা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা গড়ে তোলা :
জীবনে সফল হতে হলে লক্ষ্য থাকতে হয়, সেই সঙ্গে থাকতে হয় সাধনা আর উচ্চাকাঙ্ক্ষা। সন্তানকে তার লক্ষ্য স্থির করতে সাহায্য করুন, কিন্তু কখনই নিজের ইচ্ছা তার উপর চাপিয়ে দেবেন না। ছোটো থেকেই লক্ষ্য স্থির করে সাফল্যকে ছোঁয়ার চেষ্টা করতে হবে।
পুষ্টিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা :
সন্তানের সুন্দর জীবন ও সাফল্য এর জন্য ছোট থেকেই তার শরীর ও মস্তিষ্কের বিকাশের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সন্তানের সুষম খাবার দেন।
সন্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক :
সন্তানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখুন। তাদের সঙ্গে মন খুলে মেলামেশা করুন। সন্তানের সুষ্ঠ সুন্দর বিকাশের জন্য মা-বাবার সঙ্গে বন্ধনটা থাকতে হবে মজবুত।
সবশেষে বলতেই হয়, সন্তানের জন্য তার বাবা-মায়ের সাপোর্টটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। সন্তানকের তার নিজের ইচ্ছায় চলতে দিন, কিন্তু নজরে রাখুন যেন বিপথগামী না হয়। কখনই নিজের মত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।