হাতের পাঁচটি আঙ্গুল সমান নয়। ঠিক তেমনি প্রতিটি মানুষও সমান নয়, একেক জন একেক রকম। কিন্তু এটা ঠিক যে কিছু মানুষ প্রেমিক বা জীবনসঙ্গী হিসেবে আর দশজনের চাইতে ভালো।
এভাবেও বলা যায় যে, কিছু মানুষের মাঝে এমন সব গুণ থাকে যা তাকে করে তোলে অনন্য একজন। শুধু ভালো মানুষ নয়, সঙ্গী হিসেবে ভালো হতে হলে একজন পুরুষের মাঝে থাকতে হয় কিছু গুণ। এসব গুণ যদি আপনার ভালোবাসার মানুষটির মাঝেও থাকে, তবে তার সাথে জীবনটা কাটিয়ে দিলে পস্তাবেন না আপনি।
১/ তিনি আপনাকে সবকিছু মিলিয়েই ভালোবাসেন
এখনকার দিনে মানুষ শুধুই বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখে প্রেমে পড়ে যায়। এ কারণে এসব সম্পর্ক ভাঙতে সময় লাগে না। কিন্তু প্রেমিক যদি আপনার বাহ্যিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি আপনার ভেতরের মানুষটিকেও ভালোবেসে ফেলেন, তবেই জানবেন এমন মানুষ আপনি আর দ্বিতীয়টি খুঁজে পাবেন না।
আপনি সুন্দর করে সেজেগুজে থাকুন আর বাড়িতে যেমন তেমন পোশাক পরেই থাকুন না কেন, আপনার প্রতি তার ভালোবাসায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
২/ তিনি জোরাজুরির মাঝে নেই
তিনি কোনো কাজ করতে আপনাকে জোর করবেন না। কিন্তু আপনিও জোর করে তাকে দিয়ে কিছু করাতে পারবেন না। পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যারা অন্যের ইচ্ছের ওপর জোর খাটাতে পছন্দ করে, আবার আরেক রকম মানুষ আছে যাদেড় কোনো ইচ্ছাশক্তি নেই এবং নিজের ইচ্ছে প্রকাশ করতে অক্ষম। এই দুই ধরণের মানুষই সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভালো নয়।
এমন কিছু মানুষ আছেন যারা নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেও যাবেন না, আপনার ওপরেও জোর খাটাতে যাবেন না। এমন মানুষই আপনার জীবনে প্রয়োজন।
৩/ তিনি সফল হতে চান, কিন্তু ধৈর্য হারান না
সবার জীবনেই সাফল্য জরুরী। এর জন্য মিলিয়নিয়ার হওয়া জরুরী নয়, কিন্তু ছোট ছোট কিছু সাফল্য থাকে সবার জীবনেই। সাফল্যে পৌঁছানোর রাস্তা অনেক লম্বা, এর জন্য অনেক ধৈর্য প্রয়োজন। সেই মানুষটির যদি ধৈর্য এবং লক্ষ্যে পৌঁছানর সংকল্প দুটোই থাকে তবে বুঝে নিন আপনি খুঁজে পেয়েছেন খুব চমৎকার একজন মানুষ।
৪/ তার স্বপ্ন অনেক বড়, কিন্তু তার পা রয়েছে মাটিতেই
সফল হতে হলে অনেক বড় স্বপ্ন দেখতে হয়। নক্ষত্রের স্বপ্ন দেখলে তা না পেলেও যেন চাঁদে অন্তত পৌঁছানো যায়। এই চিন্তা যাদের থাকে তারা এক সময়ে গিয়ে সফল হন অবশ্যই।
শুধু এই স্বপ্ন নয়, তার মাঝে থাকা চাই বিনয়। অনেকে সাফল্য পেয়ে নিজেকে কেউকেটা মনে করেন, পা আর মাটিতে পড়ে না। এমন মানুষকে ভালোবাসুন যে সফল হলেও থাকবে বিনয়ি।
৫/ রান্নার প্রতিভা
রান্না বান্না করতে পারে এমন একজন পুরুষকে খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। আর তাকে পেয়ে গেলে ছেড়ে যাবার চিন্তা করাটাও কঠিন। আর রান্না জানা থাকলে তিনি খাওয়া দাওয়ায় স্বাস্থ্যকর অভ্যাসও মেনে চলেন বেশি। এসব কারণে তিনি সঙ্গী হিসেবে হয়ে ওঠেন অন্যদের চাইতে ভালো।
৬/ তিনি শারীরিকভাবে সক্রিয়
এখন হয়তো আপনার মনে হচ্ছে আপনার প্রেমিক ব্যায়াম করে না, শরীরে মেদ জমছে তাতে কি, আপনি তাকে এভাবেই ভালোবাসেন। কিন্তু একটা সময়ে গিয়ে, বিশেষ করে আপনি যদি তাকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন তবে একটা সময়ে আপনার মনে হবে কেন যে আপনার সঙ্গী ব্যায়াম করে না!
আপনাদের দাম্পত্য জীবনেও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি করতে পারে এ ব্যাপারটি। এ কারণে তার ব্যায়ামের অভ্যাস থাকলে ভবিষ্যতে আপনাদের দুজনেরই লাভ।
৭/ তিনি বুদ্ধিমান, কিন্তু দাম্ভিক নন
খুব চটপটে, বুদ্ধিমান, ব্যক্তিত্ববান একজন মানুষের আকর্ষণই আলাদা। তিনি যদি জেনে থাকেন তিনি অন্যদের চাইতে বুদ্ধিমান, সেটাও ঠিক আছে। কিন্তু তিনি যদি এ ব্যাপারটা নিয়ে অহংকারী হয়ে থাকেন, তখনই ব্যাপারটা কেঁচে যায়, কারণ অহংকারী মানুষের প্রতি আকর্ষণ বোধ করার কিছু নেই। অহংকার করতে গিয়ে তারা একেবারেই খারাপ আচরণ করে ফেলতে পারেন।
৮/ আপনাকে হাসিখুশি রাখতে পারেন তিনি
আপনার সঙ্গী যদি আপনার মেজাজ খারাপ করে দেন, তাহলে তার সাথে সম্পর্ক রাখছেন কেন আপনি? এমন মানুষ আপনার দরকার যে আপনার মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারবে সহজেই।
আপনার মেজাজ খারাপ তো করতে পারে সবাই, কিন্তু খুশি করতে কয়জন পারে বলুন? শুধু তাই নয়, কসমোপলিটানের মতে তার ব্যাপারে চিন্তা করলেও যদি আপনার মন ভালো হয়ে যায় তবে বুঝে নিন, তিনিই আপনার জন্য সঠিক।
৯/ আপনি বুঝতে পারেন তার ভালোবাসা
কারণে অকারণে হয়তো তিনি আপনাকে বলেন “ভালোবাসি”। কিন্তু কোনো কথা বলা ছাড়াই তার কাজে আপনি দেখতে পারেন তিনি আসলেই আপনার প্রতি অনুরক্ত। এমন মানুষই আপনার জীবনের জন্য উপযুক্ত।
আপনার প্রেমিক যদি আপনাকে বারবার ভালোবাসার কথা বলে অথচ কাজের বেলায় তার প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়, তবে হয়তো তিনি আপনার জন্য ঠিক নন।
১০/ আপনাকে খুশি রাখতে তিনি ঝগড়ায় হেরে যান
প্রেমিক প্রেমিকার মাঝে ঝগড়া হবেই। দাম্পত্য কলহ জীবনে থাকবেই, তারমানে এই না যে সম্পর্কটা ঠুনকো হয়ে যাবে। আপনার সঙ্গী যদি সত্যিই আপনার সাথে জীবন কাটিয়ে দেবার যোগ্য হয়, তাহলে তিনি আপনার মন রক্ষার জন্য হলেও সাময়িকভাবে হার স্বীকার করেনেবেন, কিন্তু সম্পর্কটা ভেঙ্গে যাবার মতো পরিস্থিতি তৈরি করবেন না কখনোই।
১১/ সবসময় আপনার পাশে আছেন
আপনার যে কোনো দরকারে এই মানুষটিকে পাশে পাচ্ছেন আপনি, জানায় হাফিংটন পোস্ট। আপনার জন্য যা কিছু করা দরকার তিনি তার সবই করছেন। তাহলে বুঝে নেবেন তার জীবনে আপনার অবস্থান শক্ত। এই মানুষটিকে জীবন সঙ্গী হিসেবে বেছে নিতেই পারেন আপনি।
১২/ আপনি তার অস্তিত্বের অংশ হয়ে গেছেন
এটা বোঝা অনেক কঠিন সত্যি। কিন্তু আপনাদের সম্পর্ক গভীর হলে আপনি বুঝতে পারবেন, তিনি নিজের অস্তিত্বের অংশ করে ফেলেছেন আপনাকে। আর তিনি নিজেও আপনার অস্তিত্বের অংশ হয়ে থাকতে চান। এমন অবস্থায় তাকে নিজের জীবন থেকে সরিয়ে দেওয়াটা হবে আসলেই খুব অনুচিত।