প্রতিদিন পটল খাচ্ছেন তো? জেনে নিন পটল খাওয়া শরীরের পক্ষে কতটা ভালো!

প্রতিদিন পটল খাচ্ছেন তো? জেনে নিন পটল খাওয়া শরীরের পক্ষে কতটা ভালো!

প্রতিদিন পটল খাচ্ছেন তো? জেনে নিন পটল খাওয়া শরীরের পক্ষে কতটা ভালো প্রতিদিন পটল খাচ্ছেন তো? পটল ভাজা হোক কিংবা পটলের তরকারি অথবা দই পটল। এসব খেতে তো দারুণ লাগে। কিন্তু জানেন কি? পটল খাওয়া শরীরের পক্ষে কতটা ভালো ?

১। পটলে ভালো পরিমাণে ফাইবার থাকে যা খাদ্য হজমে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা সমাধানে এবং লিভারের সাথে সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানেও সাহায্য করে।

২। পটলের বীজ এমন একটি স্বাস্থ্যকর বীজ যা কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে এবং মল নির্গমনে সাহায্য করে।

৩। পটলে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। তাই ওজন কমানোর জন্য নিশ্চিন্তে পটলের তরকারি খেতে পারেন। এটি পেট ভরা রাখতে ও খিদে কমাতে সাহায্য করে।

৪। পটলের আরেকটি স্বাস্থ্য উপকারিতা হচ্ছে এটি রক্তকে পরিশোধিত করে। এর ফলে ত্বকের যত্নেও এই সবুজ সবজিটি ভালো কাজ করে।

৫। পটলের ছোট গোলাকার বীচিগুলো কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগারের মাত্রা প্রাকৃতিকভাবে কমাতে সাহায্য করে।

৬। আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ঠাণ্ডা, জ্বর ও গলা ব্যথা কমতে ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয় পটল।

৭। পটলে ভিটামিন এ ও সি থাকে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে বলে ত্বকের জন্য উপকারী। ফ্রি রেডিকেলের বিস্তার রোধ করে বয়সের ছাপ প্রতিরোধে সাহায্য করে পটল।

পুষ্টিবিষয়ক বা রূপচর্চার ক্ষেত্রে প্রায়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্রি র‌্যাডিকল-সহ বিভিন্ন উপাদানে নাম উল্লেখ করা হয়। এগুলো আসলে কী? কোনটা শরীরের জন্য অপকারী, কোনটা বেশি থাকলে খারাপ বা কোষের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়?

এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হরমোন এবং ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. শাহজাদা সেলিম।

অনেকদিন ধরে যেন যৌনদীপ্ত জীবনযাপন করা যায় তার জন্য বহু যুগ ধরেই স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা কাজ করে চলেছেন। মানুষের বেঁচে থাকার সময় ক্রমান্বয়ে দীর্ঘায়িত হয়েছে এবং আরও হবে আশা করা যাচ্ছে। তারপরও আরও বেশিদিনের আয়ূ, আরও প্রলোভিত যৌবন প্রত্যাশা করে আসছে মানুষ।

অনেকে এর জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ধরনের ওষুধ বেছে নিয়েছেন। অনেক চিকিৎসকও পরামর্শ দিচ্ছেন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ করার জন্য। এখানে আসলে কী ঘটে তা আলোচনা করা যাক।

মানুষের দেহের কোষগুলোয় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম রাসায়নিক বিক্রিয়া চলছে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য এসব বিক্রিয়া অত্যাবশ্যক। এসব বিক্রিয়ার কারণে মুক্ত মৌল (Free Radical) তৈরি হয় এবং তারা দেহে জমা হতে থাকে। সামান্য পরিমাণ মুক্ত মৌল হয়তবা তেমন ক্ষতিকর নাও হতে পারে। তবে যখন বয়স বাড়ে এবং বেশি পরিমাণ মুক্ত মৌল জমা হয় দেহে, তখন সেগুলো দেহ-কোষের ধ্বংস বা মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

দেহের যেসব কোষ স্বল্প সময়ে প্রতিস্থাপিত হওয়ার সামর্থ্য রাখে (যেমন: মুখের ভেতরের মিউকাস স্তরের কোষ ও পাকস্থলির আবরণী কোষ ইত্যাদি) তাদের বেলায় মুক্ত মৌল ঘটিত কোষ-মৃত্যু তেমন বড় কোনো ক্ষতি করতে পারে না।

তবে যেসব কোষ খুবই ধীরে ধীরে প্রতিস্থাপিত হয় বা আদৌ প্রতিস্থাপিত হতে পারে না (যেমন স্নায়ুকোষ, হৃৎপিণ্ডের মাংশপেশি ইত্যাদি) তাদের প্রতিটি কোষের মৃত্যুই ক্ষতির কারণ হয়। বেশি মাত্রায় এমন কোষের মৃত্যু বা ধ্বংস ঘটলে দেহে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।

মুক্ত মৌলসমূহ যে কোনো মানুষের একক কোষীয় ক্রিয়াকর্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত জমা হতে থাকে। দেহ কিছুটা বের করে দিতে পারে। তবে বেশির ভাগই দেহের ভেতরে থেকে যায় এবং কোষের ক্ষতি করতে থাকে। মুক্ত মৌলগুলো অক্সিডেভিট বিক্রিয়ায় উপজাত। অক্সিডেভিট বিক্রিয়া (Oxidative Reaction) কোষের শক্তি উৎপাদনের প্রধান বিক্রিয়া। তাই অক্সিডেটিভ বিক্রিয়াগুলো বন্ধ বা হ্রাসও করা সম্ভব নয়।

দেহের ভেতরে যদি মুক্ত মৌলগুলোর উৎপাদন বন্ধ করা যায়, এদের জমা হওয়া কমানো বা বন্ধ করা যেত তবে কোষের ধ্বংস বা মৃত্যুর একটি অভ্যন্তরীণ কারণ থামানো যেত। তবে তা তো আর সম্ভব নয়। মুক্ত মৌলের উৎপাদন বন্ধ করতে গেলেও কোষের ক্ষতি হবে। তাই কোষের আয়ু বৃদ্ধির বিকল্প চিন্তা করতে হয়। আর তাহল রাসায়নিকভাবে মুক্ত মৌলগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা। আর সেটা সম্ভব।

প্রতিদিন পটল খাচ্ছেন তো? – এ কাজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহায়তা করে। দেখা গেছে যারা সুদীর্ঘ বছর বেঁচে থাকেন তাদের দেহে সুপার অক্সাইড ডিসমুটেজ নামক এনজাইম তৈরি হয় যা মুক্ত মৌলকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে। মানুষের দেহের অভ্যন্তরেও মুক্ত মৌলকে নিষ্ক্রিয় করার মতো পদার্থ আছে। যেমন বিলিরুবিন, গ্লুটাথিওন ইত্যাদি। আবার কিছু খাদ্য-উপাদান থেকেও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। যেমন বিটা ক্যারোটিন ‘সি’ ও ভিটামিন ‘ই’।

তবে এসব অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো প্রবলভাবে কাজ করতে দেখা যায় না। তবে ধীরে ধীরে হলেও ওরা মুক্ত মৌলের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের বিরোধিতা করে এবং কোষকে রক্ষা করতে সচেষ্ট হয়।

তাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন: গাজর, মূলা, আপেল, আমলকীসহ তাজা ফলমূল ও শাকসবজি বয়স বাড়ার গতিকে ধীর করতে সহায়ক হয়। কারও কারও মতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো হৃৎপিণ্ডকেও রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ওপরে আলোচনার আলোকে আরও বেশি দিন সুস্থ দেহে যৌবনময় জীবনযাপনের জন্য কেউ কেউ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ওষুধ হিসেবে খাচ্ছেন। তবে এসব ওষুধ মানুষের জন্য যথেষ্ট উপকারী হওয়ার সম্ভাবনা কম। তার প্রধান কারণ হল, এসব ওষুধে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট একজন মানুষের প্রাত্যহিক চাহিদার চেয়ে বহু গুণ বেশি থাকে। অতিরিক্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের অক্সিডেটিভ প্রক্রিয়া কমাবে না, কোষের শক্তি উৎপাদনকে ব্যাহত করবে। পরিণামে কোষের মৃত্যু তাড়াতাড়ি হবে।

একই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের জন্য ক্ষতিকর হবে। এদিকে আমরা প্রতিদিনের খাদ্য থেকেও কিছু পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পেয়ে থাকি। এদের সম্মিলিত প্রভাবে কোষের মৃত্যুই শুধু এগিয়ে আসবে।

এক্ষেত্রে একটাই কাজ করা যেতে পারে তাহল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য উপাদানসমূহ প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে খাওয়া। একই সঙ্গে প্রাণিজ আমিষ, বিশেষ করে গরু ও ছাগলের মাংস খাওয়া কমিয়ে আনা এবং প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে তিনদিন পরিমিত ব্যায়াম করা। জীবনের শৃঙ্খলও দীর্ঘায়ু লাভ সহায়ক।

Related Posts

মিষ্টি আলুর গুনাগুন ও চাষাবাদ পদ্ধতি

মিষ্টি আলুর গুনাগুন ও চাষাবাদ পদ্ধতি

মিষ্টি আলু খেতে খুবই সুস্বাদু ও মজাদার। মিষ্টি আলু শুধু সুলভ ও সহজলভ্য এবং সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। মিষ্টি আলু রান্না করে, সিদ্ধ করে কিংবা পুড়িয়ে খাওয়া…

বারান্দায় বা ছাদে করুন সহজে আলুর চাষ

বারান্দায় বা ছাদে করুন সহজে আলুর চাষ

আলু আমেরিকায় প্রথম পাওয়া যায়। এই উপমহাদেশেও আলু এসেছে উপনিবেশিকদের হাত ধরে। এই বাঙ্গাল মূলকেই প্রথম আলু চাষ শুরু হয়। কোলকাতা থেকে আস্তে আস্তে আলু ছড়িয়ে পরে…

বাড়ীর ছাঁদে টবে ব্রোকলি চাষ করার উপায়

বাড়ীর ছাঁদে টবে ব্রোকলি চাষ করার উপায়

দিন দিন আমাদের দেশে ব্রোকলি বেশ জনপ্রিয় সবজি হয়ে উঠছে। কেউ কেউ এটিকে সবুজ ফুলকপিও বলেন। পুষ্টিবিদদের মতে এটি একটি উৎকৃষ্ট মানের সবজি। এই সবজিটি বেশ দুর্বল…

ঈগলের মতো দৃষ্টি থাকলেই ‘Curious’ খুঁজে পাবেন ‘Furious’ এর ভিড়ে

ঈগলের মতো দৃষ্টি থাকলেই ‘Curious’ খুঁজে পাবেন ‘Furious’ এর ভিড়ে

অতিরিক্ত কাজের চাপে আর হারাবেন না ধৈর্য্য। মনোনিবেশ করতে পারবেন সহজেই। আর এইভাবে আপনার সমস্ত বেসিক সমস্যা দূর করতে ফের নিয়ে আসা হয়েছে নতুন Optical Illusion। যেখানে…

চোখের ধাঁধা: এক পলকেই খুঁজে বার করতে হবে এখানে লুকিয়ে থাকা ‘Form’ শব্দটি

চোখের ধাঁধা: এক পলকেই খুঁজে বার করতে হবে এখানে লুকিয়ে থাকা ‘Form’ শব্দটি

আজকের এই ধাঁধার খেলায় ঝালিয়ে নিন আপনার মগজাস্ত্র। নিজের ব্রেনকে নিজেই করুন চ্যালেঞ্জ। আর এই সবটা করুন একটি মাত্র Optical Illusion-এর মাধ্যমে। একটু ধৈর্য্য সহকারে এই ধাঁধা…

চোখের ধাঁধা: ছবির মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে ‘ICE’, রইল মাত্র ১০ সেকেন্ডে খুঁজে বার করার চ্যালেঞ্জ

চোখের ধাঁধা: ছবির মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে ‘ICE’, রইল মাত্র ১০ সেকেন্ডে খুঁজে বার করার চ্যালেঞ্জ

একটুতেই অনেক বেশি রেগে যাওয়া মানুষগুলোর জন্য দারুণ সুখবর। আপনাদের ব্রেন ও মন বরফের মতো ঠাণ্ডা রাখায় উপায় নিয়ে আজ হাজির হয়েছে । এই উপায়টি হল দারুণ…