পাইলস? চাপের কথা! যখনই হয় শুধু চাপ, কষ্ট, ব্যথা। কেউ মনে করেন বংশগত কারণে এমন হচ্ছে, কারও আবার দীর্ঘ কোষ্ঠকাঠিন্যের ফল। অর্শ বা পাইলস যে কোনও বয়সেই হতে পারে, কারণ থাকতে পারে একাধিক।
মলদ্বারের বাইরে বা ভিতরের চারদিকের শিরা কোনও কারণে ফুলে উঠে প্রসারিত হয়ে মটরদানার ন্যায় রূপ ধারণ করলে তাকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় অর্শ বা পাইলস। পাইলস মলদ্বারের ভিতরের দিকে হলে কষ্ট অনেক বেশি। খুব নরম চামড়ার দ্বারা আবৃত থাকে বলে সহজেই আঘাত লাগে, ক্ষত হয় এবং মলত্যাগের সময় খুব রক্তপাত হতে থাকে।
এই পাইলস যত বেশি প্রসারিত হয়, তত মল ত্যাগের সময় কষ্ট হয়। কারও আবার পাইলস কিছুটা মলদ্বারের বাইরে এবং কিছু অংশ ভিতরে থাকে। তখন তাকে বলা হয় মিক্সড পাইলস। যখন তা মলদ্বারের বাইরেই পুরো বেরিয়ে থাকে তখন তাকে বলা হয় বহিরাগত বা এক্সটার্নাল পাইলস। এমন হলে ব্যথা-যন্ত্রণা অভ্যন্তরীণ পাইলসের চেয়ে একটু কম হয়।
কাদের ভয়?
১) কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে খুব চাপ দিয়ে মল ত্যাগ।
২) উত্তেজক, উগ্র জাতীয় ওষুধ সেবন ও তীব্র রেচক ওষুধ সেবন।
৩) একটানা বসে কাজ, খুব মশলা, তেল ও ঘি মিশ্রিত খাবার বেশি খেলে এমন সমস্যা হয়।
৪) লিভারের অসুখ বা লিভার সিরোসিস রোগ-এর জন্য।
৫) অজীর্ণ রোগ ও পরিপাক তন্ত্রের সমস্যা।
৬) প্রস্টেটের সমস্যা বা মূত্রথলিতে ব্যথার জন্য অতিরিক্ত চাপ দিয়ে মূত্রত্যাগ।
৭) গর্ভাবস্থায় জরায়ুর উপর চাপ।
৮) নানা কারণে শিরাতে চাপ যা থেকে রক্ত জমাট (Venous engorgement ) বেঁধে গেলে মলের সঙ্গে রক্তপাত হতে পারে।
৯) বংশগত বা বাবা-মায়ের এই রোগ থাকলে সন্তানের মধ্যেও দেখা দিতে পারে।
চিনবেন কেমন করে?
কখনও কখনও মলদ্বার চুলকাতে থাকে, দপদপ করে ও জ্বালা করতে থাকে। কাঁটা ফোটার মতো ব্যথা ও যন্ত্রণা হয়। তলপেটেও ব্যথা করে। তবে পাইলস মলদ্বারের ভিতরে দিকে হলে বিশেষ কোনও লক্ষণ প্রকাশ পায় না। কেবলমাত্র মলদ্বারের ভিতরে ভার বোধ ও মল ত্যাগের সময় অল্প ব্যথা অনুভব হতে পারে।
মনে হয় মলদ্বারের ভিতরে একটা জিনিস আটকে আছে। রক্তস্রাব শুরু হলে লক্ষণ প্রকটভাবে প্রকাশ পায়। দুর্বলতা, রক্তহীনতা, হাত-পা চোখের পাতা ফোলাভাব, মাথাধরা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। মলদ্বারের শিরাগুলিতে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। মলদ্বারে ইনফেকশন হয়ে ঘা হয়ে যায়। সে কারণেই রক্তপাত হতে থাকে। হোমিওপ্যাথি ওষুধ দ্বারাই এই রোগের পুরোপুরি নির্মূল সম্ভব।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন