স্তন ক্যানসারের মতোই জরায়ু ক্যানসারও অনেক কঠিন একটি অসুখ । পৃথিবীতে প্রচুর নারী জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন এবং এই রোগে মৃত্যুবরণ করেছেন। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বিশেষ করে উত্তর ও পূর্ব ইউরোপে ২০১২ সালে প্রায় ৬৫,০০০ হাজার নারী জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন এবং ইউরোপের দেশগুলোতে ছয়টি ক্যানসার রোগের মধ্যে জরায়ু ক্যানসার সবচেয়ে বেশি আলোচিত কারণ প্রতি বছর পুরো পৃথিবীতে প্রায় ২,৫০,০০০ নারী জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন । জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত নারীরা এই অসুখ হওয়ার প্রথম অবস্থায় চিকিৎসা না করানোর ফলে তাদের বেঁচে থাকার হার ৫০% কমে যায় । আর যারা প্রথম থেকেই চিকিৎসা করান তাদের বেঁচে থাকার সম্ভবনা থাকে ৯৫%।
তবে অনেকেই মনে করেন যে এই অসুখটি হয়তো প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পরে হয়ে থাকে কিন্তু এটি ভুল ধারণা । যেকোন বয়সেই নারীদের জরায়ু ক্যানসার হতে পারে । তবে বিশেষ করে ৫০ বছর বয়স্ক কিংবা এর থেকেও বেশি বয়সের নারীরা জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন বেশি । তবে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে শিল্পোন্নত দেশের নারীরা বেশি জরায়ু ক্যানসারে অধিক আক্রান্ত হয়ে থাকেন । এবং অন্য দিকে আফ্রিকান, আমারিকান ও এশিয়া প্রদেশের নারীদের এই ক্ষেত্রে জরায়ু ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম সাদা চামড়ার নারীদের থেকে ।
জরায়ু ক্যানসারকে ‘ সাইলেন্ট কিলার ’ বলা হয়ে থাকে কারণ এই অসুখ দেখা দিলে অনেক নারীরাই এর কিছু কিছু লক্ষণ বুঝতে পারেন না । কিংবা ভিন্ন লক্ষণ দেখা দিলেও গুরুত্ব দেন না । তাই সুস্থ থাকতে এই অসুখের পূর্ববর্তী কিছু লক্ষণ সম্পর্কে জেনে রাখুন ।
জরায়ু ক্যানসারের পূর্ববর্তী কিছু লক্ষণ :
১। নিন্মাঙ্গের চারপাশে চাপ লাগা কিংবা ঘন ঘন মূত্রত্যাগ করা ।
২। গ্যাস , বদহজম , কোষ্ঠকাঠিন্য। হালকা খাবারের পর পেট ভর্তি লাগা , পেটে অস্বস্তি লাগা , ইত্যাদি পেটের কোন সমস্যা খুব বেশি হলে তা জরায়ু ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে ।
৩। অন্য সময়ের থেকে পেটে অনেক পরিবর্তন দেখা দেওয়া ।
৪। পেটে অতিরিক্ত ব্যথা কিংবা পেট ফুলে থাকা ।
৫। বমি বমি ভাব কিংবা বার বার বমি হওয়া ।
৬। ক্ষুধা কমে যাওয়া ।
৭। অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পাওয়া কিংবা ওজন অনেক বেশি কমে যাওয়া ।
৮। যৌনমিলনের সময় ব্যথা পাওয়া ।
৯। অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ করা ।
১০। নারীদের মেনোপজ হওয়ার পরেও ব্লিডিং হওয়া ।