বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে কলার অন্দরে থাকা পটাশিয়াম শরীরে প্রবেশ করার পর রক্তচাপকে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসে। সেই সঙ্গে হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে দাঁতের সৌন্দর্য বাড়াতে স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ক্লান্তি দূর করতেও কলার কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে।
এবার ফিরে আসা যাক সেই প্রশ্নটিতে, যা দিয়ে শুরু করা হয়েছিল এই প্রবন্ধটি। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে কলাকে কাজে লাগানো হলে কী কী উপকার পাওয়া যেতে পারে।
১.ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরে আসে:
কলাতে উপস্থিত ভিটামিন এ, ত্বকের অন্দরে প্রবেশ করার পর হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা তো ফিরে আসেই। সেই সঙ্গে নানা সময়ে হওয়া স্কিন ড্যামেজও ধীরে ধীরে ঠিক হতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। তাই ড্রাই স্কিনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে একটা কলা নিয়ে প্রথমে চটকে নিন।
তারপর সেই পেস্টটা ভাল করে মুখে লাগিয়ে কম করে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। সময় হয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে নিন। এইভাবে নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা করলে দেখবেন ত্বক নরম এবং তুলতুলে হয়ে উঠতে সময় লাগবে না। লেই সঙ্গে স্কিনের ড্রাইনেসও ঘুঁচবে। প্রসঙ্গত, কলার সঙ্গে অল্প পরিমাণে মধু মিশিয়ে যদি মুখে লাগাতে পারেন, তাহলে আরও বেশি করে উপকার পাওয়া যায়।
২. ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রণবন্ত হয়ে ওঠে:
অল্প সময়েই ত্বককে উজ্জ্বল এবং সুন্দর করে তুলতে কলাকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই ফলটির অন্দরে উপস্থিত ভিটামনি সি, ত্বকের গভীরে প্রবেশ করার পর একদিকে যেমন পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়, তেমনি টক্সিক উপাদানেরাও বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না।
শুধু তাই নয়, ত্বক উজ্জ্বল এবং ঝলমলে হয়ে ওঠে। ফলে আরও বেশি করে চোখে পরতে শুরু করে ত্বকের সৌন্দর্য। এক্ষেত্রে অর্ধেক কলাকে চটকে নিন প্রথমে। তারপর তাতে ১ চামচ চন্দন গুঁড়ো এবং হাফ চামচ মধু মিশিয়ে একটা ফেস প্যাক বানিয়ে নিন। এবার সেই পেস্টিটি মুখে লাগিয়ে কম করে ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। সময় হয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে নিন। প্রসঙ্গত, ত্বকের ঔজ্জ্বলতা বাড়াতে আরেকভাবেও কাজে লাগাতে পারেন কলাকে।
কীভাবে? একটা কলা নিয়ে চটকে নিন। তারপর তাতে পরিমাণ মতো লেবুর রস মিশিয়ে নেন। এবার দুটি উপাদান ভাল করে মিশিয়ে নেওয়ার পর সেটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর হলকা গরম জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে নিন।
৩. ত্বকের বয়স কমে:
অল্প বয়সেই ত্বক বুড়িয়ে যাচ্ছে নাকি? তাহলে তো বন্ধু সময় থাকতে থাকতেই কলাকে কাজে লাগাতে শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার পাবেন। আসলে এই ফলটির অন্দরে থাকা ভিটামিন এ এবং ই এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, ত্বকের বয়স কমাতে কলার সঙ্গে একটা অ্যাভোকাডে মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর মিশ্রনটি মুখে লাগিয়ে কম করে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে মুখটা ধুয়ে নিন। প্রতিদিন যদি এই ঘরোয়া টোটকাটিকে কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে অল্প দিনেই দেখবেন বিলরেখা কমতে শুরু করেছে। ফলে কমবে ত্বকের বয়সও, বাড়বে সৌন্দর্য।
৪.পায়ের পরিচর্যায়:
ফাটা গোড়ালিকে সুন্দর করে তুলবেন কীভাবে তাই ভাবছেন? কোনও চিন্তা নেই! আজ থেকেই কলাকে কাজে লাগাতে শুরু করুন। দেখবেন অল্প দিনেই গোড়ালির হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরে আসবে। এক্ষেত্রে রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে ভাল করে পাটা ধুয়ে নিন। তারপর একটা কলাকে চোটকে নিয়ে সেই পেস্টটি গোড়ালিতে লাগিয়ে ১০ মিনিয় রেখে দিন। সময় হয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এইভাবে নিয়মিত যদি গোড়ালিরব পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলে দেখবেন সমস্যা কমতে সময় লাগবে না।
৫. ব্রণের প্রকোপ কমায়:
কলার খোসা নিয়ে তার ভিতরের সাদা আংশটি মুখের যে যে জায়গায় ব্রণ হয়েছে সেখানে ভাল করে ঘষতে থাকুন। যখন দেখবেন কলার খোসার সাদা অংশটি খয়েরি রং নিয়েছে, তখন হালকা গরম জল দিয়ে ভাল করে মুখটা ধুয়ে নিন। এমনটা নিয়মিত করতে পারলে ব্রণের প্রকোপ কমতে দেখবেন সময় লাগবে না।