সৌন্দর্যের প্রাথমিক শর্তই হল নিখুঁত, উজ্জ্বল ত্বক। কিন্তু অনেক সময় ব্রণ বা ফুসকুড়ি এই সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অনেকের ক্ষেত্রে এই সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে! ঠিকঠাক চিকিৎসায় ব্রণ, ফুসকুড়ির সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে ঠিকই, কিন্তু তার জন্য যে সব ওষুধ বা ক্রিম বাজারে উপলব্ধ সেগুলি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাছাড়া, ব্রণ, ফুসকুড়ির চিকিত্সায় ব্যবহৃত মলম বা জেল থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ও থেকে যায়। তবে প্রাকৃতিক উপায়ে ব্রণ, ফুসকুড়ির সমস্যার সমাধান করা যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক ব্রণ, ফুসকুড়ির সমস্যার সমাধানে ৫টি অব্যর্থ ভেষজ টোটকা…
১) নিমপাতা অত্যন্ত কার্যকর একটি জীবাণুনাশক উপাদান। তাই ব্রণ, ফুসকুড়ি সারাতে নিমপাতা বেটে তার সঙ্গে চন্দনের গুঁড়ো মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণ ত্বকের আক্রান্ত অংশে লাগিয়ে মিনিট কুড়ি রেখে ধুয়ে ফেলুন। উপকার পাবেন।
২) যাঁদের মুখে ব্রণর পরিমাণ অত্যধিক বেশি তাঁরা পাতিলেবুর রস দিনে অন্তত ২-৩ বার ব্রণ আক্রান্ত জায়গাগুলিতে লাগান। তবে ৪-৫ মিনিটের বেশি রাখবেন না। তার পর ধুয়ে ফেলুন। যত দিন না সমস্যা কমছে, এই পদ্ধতি কাজে লাগান। ফল পাবেন হাতেনাতে।
৩) এক কাপের মতো পাকা পেঁপে চটকে তার সঙ্গে এক চামচ পাতিলেবুর রস আর প্রয়োজন মতো চালের গুঁড়ো মেশান। এই মিশ্রণটি মুখ-সহ গোটা শরীরে মাখুন। ২০-২৫ মিনিট মালিশ করে তার পর ধুয়ে ফেলুন। পেঁপে ছাড়াও এ ক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর রস ব্যবহার করতে পারেন। উপকার পাবেন।
৪) ব্রণ, ফুসকুড়ি সারাতে গোলাপ জল অত্যন্ত কার্যকরী। গোলাপ জলের নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ কমে যায়। দারুচিনি গুঁড়োর সঙ্গে গোলাপ জল মিশিয়ে সেটি ব্রণর ওপর লাগিয়ে মিনিট কুড়ি পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের সংক্রমণ, চুলকানি এবং ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।
৫) পুদিনা পাতার রস করে নিয়ে সেটা দিয়ে আইস কিউব তৈরি করুন। ফুসকুড়ি ও ব্রণের এই আইস কিউব ঘষুন ১০-১৫ মিনিট। এতে ফুসকুড়ি ও ব্রণের সংক্রমণ তো কমবেই সঙ্গে ত্বকের জ্বালাপোড়া ভাবও দূর হবে।
সাবানের চেয়ে মাটি মেখে স্নান করাই ত্বকের জন্য বেশি উপকারী! সাধারণত শরীরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতেই আমরা সাবান মেখে স্নান করি। মূলত শরীরের ঘাম, ময়লা ধুয়ে ফেলার জন্যই আমরা সাবান মেখে স্নান করি। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, শরীরের ঘাম, ময়লা ধোয়ার সঙ্গে সাবান মেখে স্নানের কোনও সম্পর্ক নেই।
একাধিক মার্কিন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, সাবান মানেই খার। বেশির ভাগ সাবানেই খার কম-বেশি পরিমাণে থাকেই। আর খার আমাদের ত্বকের জন্য মোটেও ভাল নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন ইউনিভার্সিটির একদল গবেষকদের মতে, নিয়মিত সাবান মেখে স্নান করার চেয়ে মাটি মেখে ভাল করে গা ধুয়ে ফেলা বেশি উপকারী। এই মার্কিন গবেষকদের মতে, সপ্তাহে অন্তত দু’বার সারা গায়ে ভাল করে মাটি মেখে স্নান করতে পারলে তা আমাদের শরীরকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে। অর্থাত্, মাটি মেখে ভাল করে স্নান করতে পারলে আমাদের শরীরের দূষিত পদার্থ, ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া ধুয়ে বেরিয়ে যায়। তাছাড়া, মাটিতে মিশে থাকা অসংখ্য ভেষজ ও খনিজ উপাদান আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
মার্কিন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, কাদা মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব শুষে নিয়ে ত্বককে ব্রণ, ফুসকুড়ির মতো একাধিক সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করে। তবে বর্তমানে দূষণের প্রভাব প্রায় সর্বত্র। তাই যে সব এলাকায় মাটির সঙ্গে বিভিন্ন রাসায়নিক বা আবর্জনা মেশে, সেখানকার মাটি গায়ে মেখে স্নান করলে হিতে বিপরীত ফল হতে পারে!