গর্ভকালিন মেয়েদের শরীরে হরমোনের তারতম্য ঘটে। এ তারতম্যের কারণে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া যারা প্রথমবারের মত মা হতে যাচ্ছেন তাদের এ বিষয়ে কোন ধরণের অভিজ্ঞতা না থাকায় তারা বেশ ঝামেলার মধ্যে পড়েন। গর্ভকালিন সময়ে মোটামুটি সবাই একই ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হন। এ স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো মা ও শিশুর শারীরিক সমস্যা খুব একটা না করলেও অস্বস্থিতে ভোগায় অনেক। এমন কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে আজকের আলোচনা।
বমিভাব ও বমি : এটা খুব সাধারণ সমস্যা এবং বলা হয়ে যে, এটা গর্ভধারণের প্রথম লক্ষণ। সাধারনত হরমোনের তারতম্যের কারণে এমনটি হয়। গর্ভধারণের প্রথশ তিনমাস এ সমস্যা কারোও কারোও বেশি দেখা দিতে পারে। পরে আপনা-আপনি এ সমস্যা ভালো হয়ে যায়। তাই এটা নিয়ে বেশি দুচিন্তা করবেন না। সকালে উঠে খালি পেটে শুকনো টোস্ট খেলে এবং ক্ষিধে লাগার আগেই খেয়ে ফেললে বমির ভাব কম হয়। সাধারণ বমি ডাক্তারের পরামর্শ মতে কিছু ওষুধ খেলে সেরে যায় বা কমে যায়। কিন্তু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বমি হয় তখন চিকিৎসকের নির্দেশমত চিকিৎসা ও প্রয়োজনে হাসপাতালেও ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
তলপেটে ব্যথা : জরায়ু ধীরে ধীরে বড় হয়ে এর আশে-পাশের লিগামেন্টে টান পড়ার জন্য তলপেটে ও কুঁচকিতে হালকা ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা স্বাভাবিক। এই ব্যথা পাঁচ-ছয় মাসের দিকে হয়।
পিঠে ও কোমড়ে ব্যথা : গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এধরনের ব্যথা হয়। হরমোনের কারণে হাড়ের জোড়াগুলো শিথিল হওয়ার জন্য এই ব্যথা হয়। এজন্য ওষুধ সেবনের প্রয়োজন পড়ে না। সামনের দিকে ঝুঁকে কোন কাজ বা হাটাচলা করবেন না। কোমর সোজা করে বসুন।
সাদা শ্রাব : গর্ভাবস্থায় হরমোন ইস্ট্রোজেন ও রক্ত সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার জন্য সাদা শ্রাব কোন কোন সময় যেতে পারে। ঢিলেঢালা পোষাক ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। সাদা শ্রাবের সাথে যদি দুর্গন্ধ থাকে বা চুলকানি হয় তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
গলা ও বুক জ্বালা : এটাও গর্ভকালীন একটা সাধারণ সমস্যা। অতিরিক্ত ঝাঁল, তেলচর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিলে এসমস্যা কমে যায়। তবে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে শুয়ে থাকলে বড় জরায়ু পাকস্থলীতে চাপ দেয়ার জন্য এটা হতে পারে। তখন উচুঁ বালিশে কাত হয়ে শোয়া, খাবার পর কিছুক্ষণ হাঁটা-হাঁটি করার পর পানি খেলে এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
পায়ে পানি আসা : গর্ভাবস্থার শেষের দিকে পায়ে কিছু পানি আসতে পারে। তবে অতিরিক্ত পা ফোলা বা পা ফোলার সাথে প্রেসার বেশী থাকলে দেরি না করে চিকি?সকের শরণাপন্ন হতে হবে।
এছাড়াও আরও কিছু সমস্যা বিশেষ করে প্রথমদিকে মাথাঘোরা, অরুচি, দুর্বল লাগা, আলসেমি লাগা-শেষের দিকে ওঠতে বসতে বা শোয়া থেকে উঠতে কষ্ট লাগা, হাত-পা গরম ভাব, গায়ে মুখে বিশেষ করে গলায় কালো দাগ পড়া, পেঁটের চামড়া ফেটে যাওয়া বেশী পিপাসা লাগা বা ক্ষিধে পাওয়া এগুলো হতে পারে।