আজকাল বুঝি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে টের পাচ্ছেন যে আপনার বয়স বাড়ছে? গালের ত্বক কুঁচকে যাচ্ছে? আপনার অ্যাদ্দিনের মাখনের মতো টানটান ত্বকে বলিরেখা পড়ছে? চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গেছে তো? উঁহু,চাপ নেবেন না, টেনশনেরও কোনো কারণ নেই। আজকের আর্টিকলে আপনার গালের ত্বক কুঁচকে যাওয়া আটকাতে রইলো ৬টি মারাত্মক সলিউশন।
ত্বক কেন কুঁচকে যায়?
এমনিতে বয়স হলে ত্বক তো কুঁচকে যায়ই। বয়সের সাথে সাথে ত্বকে থাকা কোলাজেন আর ইলাস্টিন টিস্যু যা অ্যাদ্দিন আপনার ত্বককে টানটান করে রাখত, তা দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে ত্বক কুঁচকে যায়। এছাড়া বয়সের আগেই কিন্তু আপনার ত্বক কুঁচকে যেতে পারে। সূর্যের আলো,বা পলিউশন, স্ট্রেস, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া বা শরীরে ভিটামিন ই-র অভাব আপনার গালের ত্বক কুঁচকে যাওয়ার কারণ হতে পারে। কিন্তু কীভাবে আটকাবেন আপনার গালের ত্বকের কুঁচকে যাওয়া? দেখুন।
১.অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করা কিন্তু আপনার ত্বকের জন্য দারুণ উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ভিটামিন এ আপনার ফ্রি র্যাডিকেলে ড্যামেজ হওয়া ত্বককে ঠিক করতে পারে।
উপকরণ – অলিভ অয়েল ২ চামচ, মধু ১ চামচ,গ্লিসারিন কয়েক ফোঁটা। পদ্ধতিঃ অলিভ অয়েল,মধু ও গ্লিসারিন একসাথে মিশিয়ে আপনার গালে বা সারা মুখেই ভালো করে ম্যাসাজ করুন। এছাড়া শুধু অলিভ অয়েলও ম্যাসাজ করতে পারেন। দিনে দু’বার নিয়ম করে করুন। একমাসের মধ্যে ফল পাবেন। আপনার ত্বকের মরা চামড়া দূর করতে, আর গালের কুঁচকোনো ত্বককে ঠিক করতে এর জুড়ি নেই।
২.অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরায় কিন্তু প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আর ম্যালিক অ্যাসিড থাকে।এটা আপনার ত্বকের বলিরেখা কমিয়ে ত্বককে টানটান রাখে।
উপকরণ – ফ্রেশ অ্যালোভেরা রস পরিমাণ মতো। পদ্ধতিঃ অ্যালোভেরা রস আপনার গালে বা সারা মুখে ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট রেখে হালকা গরম জলে ধুয়ে নিন। নিয়ম করে করুন।
৩.কলা
গালের কুঁচকোনো থেকে যদি মুক্তি পেতে চান তাড়াতাড়ি, তাহলে কলাকে আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড করুন। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন,মিনারেলস আর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে যা আপনার মুখের কুঁচকে যাওয়া আর ফাইন লাইনস সহজেই দূর করে।
উপকরণ – কলা ১ টা,মধু ২ চামচ। পদ্ধতিঃ কলা ভালো করে ম্যাশ করে নিন। এবার ওর সাথে মধু মিশিয়ে ভালো করে মাখুন।এবার এটা আপনার মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করে মেখে ফেলুন। আধ ঘণ্টা মতো রেখে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে মোটে দু’দিন করুন। দেখবেন একমাসে আপনার গালের ত্বক আবার টানটান হয়ে উঠেছে।
৪.গাজর
গাজরে কিন্তু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে, যা আপনার ত্বকে কোলাজেনের উৎপাদনে সাহায্য করে। এছাড়া আপনার ত্বককে উজ্জ্বল, স্মুদ আর নরম বানাতেও গাজরের জুড়ি নেই।
উপকরণ – গাজর ১ টা,মধু ২ চামচ। পদ্ধতিঃ গাজর ভালো করে সেদ্ধ করে নিন যতক্ষণ না পর্যন্ত নরম হয়ে যায়। এবার ওটা ঠাণ্ডা হলে ভালো করে ম্যাশ করে মধু দিয়ে মেশান। এবার মুখে ভালো করে মেখে নিন। আধঘণ্টা মতো রেখে হালকা গরম জলে ধুয়ে নিন। একদিন ছাড়া একদিন করুন। উজ্জ্বল আর টানটান ত্বক পাবেন মাত্র কয়েকদিনে।
৫.কাঠ বাদাম
আপনার গালের কুঁচকোনো ভাব কমাতে ব্যবহার করুন কাঠ বাদাম। কারণ এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন ই, আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড আর ওলেয়িক অ্যাসিড, যা আপনার ত্বকের বয়স আর কুঁচকে যাওয়া—দুটোই কমাতে পারে সহজে।
উপকরণ- কাঠ বাদাম ৫-৬ টা,কাঁচা দুধ ৪ চামচ। পদ্ধতিঃ কাঠ বাদাম কাঁচা দুধে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে পেস্ট করে মুখে মেখে ফেলুন। ২০-৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ডার্ক সার্কেল থেকে শুরু করে গালের কুঁচকে যাওয়া ত্বক—সব সমস্যার সমাধান হবে জলদি। রোজ নিয়ম করে করবেন। এছাড়া বাদাম তেলও কিন্তু মাখতে পারেন।
৬.মেথি
মেথি বা মেথির তেল—আপনার ত্বকের নানা সমস্যা, যেমন গালের চামড়া কুঁচকে যাওয়াতে কিন্তু দারুণ কাজ করে। এতে থাকা প্রচুর ভিটামিন আর মিনারেলস আপনার ত্বকে সহজে ঢুকতে পারে, আর বলিরেখা, ফাইন লাইনসকে তাড়াতাড়ি কমায়।
উপকরণঃ মেথি ২ চামচ,জল ১ কাপ। পদ্ধতি – মেথি জলে ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে সেই জল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন।ফল পাবেন। এটা দিনে দু’বার করে অন্তত করুন। তাছাড়া আপনার গালে মেথির তেলও লাগাতে পারেন।
এবার দেরী না করে শিগগিরি অ্যাপ্লাই করা শুরু করুন এই মারাত্মক টোটকা। দেখবেন কুঁচকোনো গালের দুঃখ ভুলে আবার আনন্দে আয়নার সামনে মেকআপ করছেন।