ফ্যাশন সচেতন ছেলে মেয়ে উভয়েই জানেন চুলের হাইলাইটের ব্যাপারে। চুলের মাঝে মাঝে গোছা করে পছন্দের অন্য রঙে রাঙিয়ে নেয়াটাকেই হাইলাইট বলা হয়। পার্লারে যেভাবে চুলের হাইলাইট করা হয় তাতে কেমিক্যালের মাত্রা অনেক বেশি থাকে।
ফলে চুলের সৌন্দর্যও নষ্ট হয়। আর তাই আজকে আপনাদের জন্য রইল ঘরে বসে প্রাকৃতিক উপায়ে চুল হাইলাইট করার পদ্ধতি। এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে করা হয় বলে চুলের ক্ষতিও হয় না।
চুলের স্টাইলে বদল এনে সহজেই বদলে ফেলা যায় চেহারাও। চুলের স্টাইলের একটা অন্যতম অংশ হল চুল হাইলাইট করা। অনেকেই চুল হাইলাইট করতে ভালবাসেন। সাদা চুলকে কালো করার পাশাপাশি চুলের রঙে রঙিন ঝলক আনতে আজকাল হেয়ার ডাই বা কলপ ব্যবহার করছেন অনেকেই। কিন্তু বাজার থেকে কিনে আনা এ সব রঙে থাকে অনেক রকমের ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য। এই ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত হেয়ার ডাই ব্যবহারের ফলে মাথার ত্বকে চুলকানি, ফুসকুড়ি থেকে শুরু করে দেখা দেয় নানা রকম চর্মরোগ।
ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত এই সব হেয়ার ডাই ব্যবহারের ফলে অকালে অতিরিক্ত মাত্রায় চুল ঝরে গিয়ে টাক পড়ে যেতে পারে। তা হলে উপায়? জেনে নিন, বাড়িতে বসে নিজেই কী করে চুল হাইলাইট করে নিতে পারবেন। ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত হেয়ার ডাই ব্যবহার না করেই।
লেবুর রস: সবচেয়ে সস্তা উপায়ে দুর্দান্ত হাইলাইটের সমাধান লেবুর রস। একটি পাত্রে লেবুর রসের সঙ্গে সমপরিমাণ জল মেশান। এ বার চুলের গোছা আলাদা আলাদা করে ভাগ করে তাতে লাগিয়ে নিন এই মিশ্রণ। এর পর অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে চুল মুড়ে রাখুন। রোদে বসুন খানিক ক্ষণ। চুল শুকোলে সামান্য উষ্ণ গরম জলে শ্যাম্পু করে নিন। বার দুয়েক এমন করলেই দেখবেন, কেমন রং ধরেছে চুলে!
কন্ডিশনার আর দারচিনি: এই দুইয়ের মিক্সড ডাবলসে চুলে হবে দেখার মতো হাইলাইটস! কয়েকটা দারচিনি মিক্সারে গুঁড়িয়ে নিন। তার পর কন্ডিশনারের সঙ্গে মেশান। এ বার কোনও ব্রাশ দিয়ে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভাল করে লাগিয়ে নিন এই প্যাক। তার পর মোটা দাঁড়ার চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে চুলে কোঁপা করে রাখুন। শাওয়ার ক্যাপে মাথা ঢেকে শুয়ে পড়ুন। সকালে উঠে শ্যাম্পু করে ফেললেই চুলে ধরবে মনের মতো রং!
চায়ের লিকার: ঘরোয়া উপায়ে চুলকে কন্ডিশনিং করতে চায়ের লিকারের চেয়ে ভাল উপাদান আর কিছু হতে পারে না। চুলকে হাইলাইট করার ক্ষেত্রেও চায়ের লিকার খুবই কার্যকর। তবে যে কোনও রকম চা নয়, এটি করতে ক্যামোমাইল টি ব্যাগ কিনে আনুন। টি ব্যাগ রাখুন গরম জলে, তা রং ছাড়তে শুরু করলে, ভাল করে গুলে নিন গরম জলের সঙ্গে। এ বার সেই জল দিয়ে চুল ধুয়ে কিছু ক্ষণ রোদে বসুন। বার তিনেক এমন করুন। হালকা লালচে আভার হাইলাইট পেয়ে যাবেন সহজেই।
ভিনিগার ও মধুর মিশ্রণ: এই উপায় অবলম্বন করতে হলে আগে থেকে বানিয়ে রাখুন প্যাক। দরকার কিছু ঘরোয়া জিনিস, যা সহজেই কিনে আনা যায়। ১ কাপ মধু, ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, ১ টেবিল চামচ এলাচের গুঁড়োর সঙ্গে মিশিয়ে নিন ২ কাপ ভিনিগার। মিশ্রণটি ঘন করে বানান। এ বার আলাদা করে বেছে নিন কোন কোন চুলগুলিকে হাইলাইট করতে চাইছেন। সেখানে এই প্যাক লাগিয়ে একটা শাওয়ার ক্যাপ পরে চুল ঢেকে রাখুন। ঘুমোনোর আগে এটা লাগিয়ে শুয়ে পড়ুন, আর সকালে উঠে শ্যাম্পু করে নিন। সুন্দর হাইলাইটে ভরে উঠবে চুল।
অলিভ অয়েলের মাধ্যমে :অলিভ অয়েল চুলের ময়েসচারাইজার হিসেবে অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু চুলের ঘরোয়া হাইলাইটের জন্য অলিভ অয়েলের ব্যবহার সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। চুলের যে যে অংশ হাইলাইট করতে চান সে অংশে ভাল করে অলিভ অয়েল মাখিয়ে রোদে বসে থাকুন। অলিভ অয়েল সূর্যের আলোর সাথে রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে চুলের রঙ পরিবর্তন করে ফেলে। এতে করে পছন্দ অনুযায়ী চুল হাইলাইট করা হয়ে যায়।
এই ক’টা সহজ ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করুন আর চুলে আনুন চোখ ধাঁধানো হাইলাইট।