পেঁপে পাবেন হাতের কাছেই। দামও সহনীয়। সবজি ও সালাদ হিসেবে কাঁচা পেঁপের বেশ কদর রয়েছে। সুমিষ্ট পাকা পেঁপে রং, সুবাস আর স্বাদে অতুলনীয়। পেঁপে খেলে ওজন কমে, ত্বক পরিষ্কার হয়।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আর নানা উপকারী উপাদানে ভরপুর পেঁপে খেলে একদিকে স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকে, তেমনি চুল আর ত্বকের জন্যও উপকারী। খাবারে তাই পেঁপে রাখাটা জরুরি। চলুন তাহলে জেনে নিই পেঁপের অসাধারণ ৯টি উপকারিতা-
১. কোলেস্টেরল কমায়
অন্যান্য ফলের মতোই পেঁপেতে কোনো কোলেস্টেরল নেই। আর পেঁপেতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই কোলেস্টেরলের সমস্যায় যারা দুশ্চিন্তায় আছেন তারা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পেঁপে রাখুন। অন্যান্য কোলেস্টেরল যুক্ত খাবারের বদলে পেঁপে খান। তাহলে আপনার কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
২. হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে
পেঁপে অথেরোস্ক্লেরোসিস এবং ডায়াবেটিক হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। পেঁপের ভিটামিন এ, সি এবং ই, সমূহের এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসের চমৎকার উৎস। এই তিনটি পুষ্টি কলেস্টেরল প্রতিরোধে সাহায্য করে, যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক এর প্রধান কারণ এক। পেঁপের এ ছাড়াও ফাইবার এর একটি ভালো উৎস, যা উচ্চ কলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
৩. দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করে
অপথ্যালমোলজি আর্কাইভস প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতিদিন তিনবার পেঁপে খেলে চোখের বয়সজনিত ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। বয়স্কদের মধ্যে দৃষ্টি শক্তির ক্ষতির প্রাথমিক কারণ প্রতিদিনের খাবারে তুলনামূলকভাবে কম পুষ্টি গ্রহণ করা। পেঁপে আপনার চোখের জন্য ভালো কারণ এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ, সি, ও ই এর উপস্থিতি।
৪. হজমে সহায়তা করে
বদ হজমের রোগিদের পাকা পেঁপে খেলে খুব উপকার মিলবে। পাকা পেঁপে খেলে মুখে রুচি বাড়ে, সাথে সাথে খিদে বাড়ে তা ছাড়া পাকা পেঁপে পেট পরিষ্কার করে এবং বায়ু নাস করে। এ ছাড়াও পেপে অর্শ রোগের ক্ষেত্রেও বেশ উপকারি।
৫. অর্শ ও কৃমিনাশক
কাঁচা পেঁপের আঠা ও বীজ কৃমিনাশক। কাঁচা পেঁপের আঠা চিনি বা বাতাসের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে অর্শ ও জন্ডিসসহ লিবারের নানা রোগ ভালো হয়। এ আঠা প্রতিদিন সকালে ৫- ৭ ফোটা বাতাসার সঙ্গে মিশিয়ে খেলে অর্শের রক্ত পড়া বন্ধ হয়।
৬. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, ফ্লেভানয়েড, লুটেইন, ক্রিপ্টোক্সান্থিন আছে। এ ছাড়াও আরও অনেক পুষ্টি উপাদান আছে যেগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ক্যারোটিন ফুসফুস ও অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
৭. চুলের যত্নে
চুলের যত্নে পেঁপে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টক দইয়ের সঙ্গে পেপে মিশিয়ে চুলে মাখলে চুলের গোড়া শক্ত হয় ও চুল ঝলমলে হয়। ১ চামচ পেঁপের আঠা ৭/৮ চামচ পানি দিয়ে ফেটে চুলের গোড়ায় কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেললে উকুন মরে যায়।
৮. ত্বকের যত্নে
পেঁপে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ফল, তাই ত্বকের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। প্রতিদিন পাকা পেঁপের সাথে মধু ও টকদই মিশিয়ে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
৯. ব্রণের দাগ কমিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ায়
ব্রণের সমস্যা প্রায় সবারই থাকে। এসব ব্রণের কারণে মুখে খুব বাে ধরনের দাগ তৈরি হয়। এই বাজে দাগগুলো নিরাময় করতে পারে সুমিষ্ট এই ফলটি। মুখের অন্যান্য যেকোনো দাগ যেমন মেছতা, ফুস্কুরির দাগও খুব সহজেই দূর করে দিতে পারে। মুখের বিভিন্ন দাগ দূর করার পাশাপাশি পেঁপে ফলটি মুখের উজ্জ্বলতাও ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।