বর্তমানে বেশির ভাগ মহিলাই ঘরের বাইরে বেরিয়ে কাজ করেন। এবং দিনের শেষে বাড়ি ফিরে সংসারের কাজ করার আর এনার্জি থাকে না। স্বাভাবিকভাবেই তারা নির্ভরশীল হয়ে পড়েন ‘হাউজ হেল্পার’দের উপর।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে, বাড়ির বা সংসারের দৈনন্দিন নানা কাজ করলেও ক্যালোরি বার্ন হয়। ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে। এমনটাই জানা গিয়েছে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যেমর এক প্রতিবেদনে।
ঘর মোছা— ঘর মোছা মানে প্রায় হামাগুড়ি দেওয়া। এই পোজের ফলে পেটে চাপ পড়ে। হাঁটু এবং পায়ের মাসেলেও টান পড়ে। ফলে পেটের মেদ বাড়ে না। ২০ মিনিট এমন ভাবে ঘর মুছলে ১২০ ক্যালোরি পর্যন্ত বার্ন হয়। যদিও, বর্তমানে এমন সব জিনিস বাজারে উপলব্ধ যা দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েও ঘর মোছা যায়।
জামাকাপড় ধোয়া— এখন প্রায় প্রতি ঘরেই ওয়াসিং মেশিন রয়েছে। জামাকাপড় ধুতে খুবই সুবিধা হয় এতে। কিন্তু, নিজের হাতে কাপড় ধুলে প্রায় ১৩০ ক্যালোরি বার্ন হয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাসন ধোয়া— সামান্য এই কাজেও বার্ন হয় ক্যালোরি। জানা যাচ্ছে, এক ঘণ্টার এই কাজে ১২৫ ক্যালোরি বার্ন হয়।
রান্না— নিজের খাবার নিজে রান্না করলে প্রবণতা থাকে অল্প তেল-মশলা ব্যাবহারের। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। তা ছাড়া, বেশির ভাগ মানুষ রান্না করার সময় দাঁড়িয়ে থাকে। এ ভাবে প্রায় ১০০ ক্যালোরি বার্ন হয়।
ডাস্টিং— চেষ্টা করুন প্রতি দিন সকালে বা বিকেলে ডাস্টিং করার। এর ফলে প্রায় ১২৫ ক্যালোরি বার্ন হয়।
আটা মাখা— অনেকে তো এই কাজ করতে পছন্দই করে না। কিন্তু, জানা গিয়েছে, প্রতি দিন আটা বা ময়দা মাখলে হাতের পেশি ভাল থাকে। এবং বার্ন হয় ৫০ ক্যালোরি।
তাছাড়া নীচের নিয়মগুলো অনুসরণ করলেও আপনার ওজন কমাতে পারবেন
১. প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন: মেদ কমানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে জল। জল শরীরে জমে থাকা টক্সিন এবং শর্করাকে শরীর থেকে বার করে দিতে সক্ষম। প্রস্রাবের সঙ্গে শরীরের এই সমস্ত ক্ষতিকর পদার্থ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এতে শুধু যে শরীরকে সুস্থ মনে হয় তা-ই নয়, পাশাপাশি মেদও কমে।
২. গ্রিন টি পান করুন: কালো চা বা দুধ চা বাদ দিন, শুধুমাত্র গ্রিন টি পান করুন আগামী ২৪ ঘন্টা। এতে পাচনতন্ত্রে জমে থাকা ক্ষতিকর খাদ্যগুণ শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে। এটা শরীরকে মেদমুক্ত করার প্রথম ধাপ। তবে মনে রাখবেন, কফি খাওয়া বারণ। কালো চা এবং কফিতে ক্যাফিন থাকে। অম্লমিশ্রিত ক্যাফিন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
৩. প্রচুর পরিমাণে শশা খান: শশা এমন একটি সবজি যা শরীরকে অ্যালকালাইন-মুক্ত হতে সাহায্য করে। পাশাপাশি শশা খেলে অল্পেই পেট ভরে যায়। তার ফলে খাবার পরিমাণ আপনা থেকেই কমে আসে।
৪. শাকসবজি এবং ফল খান: সবজি এবং ফল-এ প্রোটিনের পরিমাণ সাধারণ ভাবে কম থাকে। আর প্রোটিন শরীরে মেদ জমার অন্যতম কারণ। বিনস জাতীয় সবজিতেও অবশ্য প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। সেই কারণে বিনস পরিহার করুন। অল্প প্রোটিনযুক্ত শাকসবজির উপর ভরসা করুন।
৫. প্রচুর ঘাম ঝরান: বিনা পরিশ্রমে দ্রুত মেদ কমানো অসম্ভব। ফলে শারীরিক পরিশ্রম করতেই হবে। দৌড়নো, সাইকেল চালানো কিংবা সাঁতার কাটার মতো কার্ডিও ভ্যাস্কিউলার এক্সারসাইজ করুন। অর্থাৎ এমন কাজ করুন, যাতে হাঁপ ধরে এবং প্রচুর ঘাম নির্গত হয়। এতে শরীরে জমে থাকা মেদ গলে যাবে।
৬. খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করুন: কী খাবেন তা তো জানলেন। পাশাপাশি কী কী খাবেন না, সে দিকেও আপনাকে নজর রাখতে হবে। দুধ, মিষ্টি, অ্যালকোহল আগামী ২৪ ঘন্টার জন্য একেবারে বর্জন করুন।
রাত্রে অন্তত সাত ঘন্টা ঘুমোন। পরের দিন সকালে আবার ওজন নিন নিজের। তফাতটা নিজের চোখেই দেখে নিন।