আমাদের মায়েদের প্রতিদিনের কাজের মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল বাচ্চাদের পড়াতে বসানো । বাচ্চারা বড় হলে কেবল তাদের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়না , বরং স্কুলের পড়াগুলো ঠিক মতো তৈরি করতে বাচ্চাকে সাহায্য করা ও তার পড়াশোনার প্রতি সঠিক মনোযোগ স্থাপনে সাহায্য করতে একজন অভিভাবক হিসেবে মায়ের দায়িত্বের কথা বলে শেষ করা যাবে না ।
শুধু যে একটি নির্দিষ্ট রুটিন মাফিক আপনার বাচ্চাকে পড়াতে বসালেই আপনার বাচ্চা ঠিকমতো এমনটা নয় । আপনাকেও এমন কোন ভালো উপায় খুঁজে বের করতে হবে যাতে আপনার বাচ্চা পড়তে বসতে আগ্রহী হয়ে ওঠে ও তার পড়ার সময়টুকু বাচ্চা সম্পূর্ণভাবে উপভোগ করে ।
আজ এই লিখাতে জানাবো বাচ্চাদের পড়াতে বসিয়ে মায়েরা মনে রাখবেন যে বিষয়গুলো –
পড়াতে বসানোর একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন
আপনার বাচ্চাকে পড়াতে বসানোর জন্য প্রথমে যা করতে হবে তা হল একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী অনুসরণ করা । তবে মনে রাখবেন টাইম টেবিলটা হবে আপনার শিশু কখন পড়তে বসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে তার উপর নির্ভর করে । আপনি যদি আপনার সময় অনুযায়ী আপনার বাচ্চার পড়ার সময় বাছাই করেন এতে আপনার বাচ্চার পড়ার প্রতি আগ্রহ কমতে থাকবে ।
বাচ্চাকে পড়তে উৎসাহী করতে প্রশংসা করুন
আপনার বাচ্চার পড়ার গতি ও মনোযোগ উভয়ই বাড়াতে তাকে তার পড়ার ভালো ফলাফলের জন্য প্রশংসা করুন । সে কোন বিষয়ে ভালো অগ্রগতি দেখালে হাত তালি দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করুন ।
বাচ্চার সাথে সাথে আপনিও পড়ুন
বাচ্চারা একা একা পড়ার থেকে সাথী নিয়ে পড়তে বেশী পছন্দ করে । আর তাই বাচ্চাকে পড়াতে বসিয়ে আপনি চুপচাপ না থেকে বাচ্চার সাথে সাথে পড়ুন । এতে আপনার বাচ্চা দ্রুত পড়া আয়ত্ব করতে পারবে ।
পড়ার ফাঁকে ফাঁকে বাচ্চার সাথে খেলুন
পড়া যাতে একঘেঁয়েমি কোন ব্যাপারে পরিণত না হয় তা নিশ্চিত করতে বাচ্চার সাথে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে খেলায় অংশগ্রহণ করুন । হতে পারে সেটা পড়া বিষয়কই কোন খেলা , যার মাধ্যমে বাচ্চা খেলতেও পারবে আবার সাথে পড়াও হবে ।
বাচ্চাকে বার বার প্রশ্ন করুন
বাচ্চার জানার আগ্রহ বাড়িয়ে তুলতে পড়ার ফাঁকে তাকে জানা বিষয়ে বার বার প্রশ্ন করুন । আর আপনার বাচ্চা যদি প্রশ্নের ঠিক ঠিক উত্তর দেয় তাহলে তার প্রশ্নের উত্তরের বিপরীতে ভালোবাসা আর আদর দিন ।
বাচ্চাকে পড়াতে বসানোর জায়গা বিস্তৃত করুন
আপনার বাচ্চার পড়ার জায়গা শুধু একটি নির্দিষ্ট ঘরে না রেখে একটু বিস্তৃত করুন । যেমন টেবিল চেয়ারে একটানা না পড়িয়ে বিছানায় বসাতে পারেন , মেঝেতে বসাতে পারেন কিংবা বারান্দায় । এতে স্থান পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে বাচ্চার পড়ার একঘেঁয়েমি কেটে যাবে ।
পড়ানো শেষে বাচ্চাকে খেতে দিন তার পছন্দের কোন খাবার
প্রতিদিনের পড়ানোর শেষে সারপ্রাইজ হিসেবে আপনার সোনামণিকে দিতে পারেন তার পছন্দের কোন খাবার । দেখবেন এই উপায়ে আপনার বাচ্চার পড়াও হবে সাথে খাওয়াও হবে ।
বাচ্চাকে সময় পেলে তার ছুটির দিনগুলোতে শিক্ষণীয় ভিডিও গেম দেখান , যেখানে বাচ্চার মজা করে পড়া লেখা করছে , কবিতা পাঠ করছে , টিচাররা বাচ্চাদের সাথে মজা করছে তাদের অনেক কিছু শিখাচ্ছে এমন ভিডিও দেখলে বাচ্চারা খুব আগ্রহ বোধ করে তাদের পড়ালেখা ঠিক মতো করতে ।