প্রত্যেক নারীই চায় তার সন্তান ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক। গর্ভের সন্তান নিয়েও নারীদের আগ্রহ কম নয়। কি খেলে, কি করলে সন্তান ভালো থাকবে তারা সেই চেষ্টাই চালিয়ে যান। চলুন পাঠক জেনে নেয়া যাক গর্ভের সন্তানকে সুস্থ রাখার খাদ্য তালিকা। নিচের এই খাবারগুলোতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি যা মা ও শিশুকে সুস্থ রাখবে ।
দেখে নিন কি খেলে গর্ভের শিশু সুস্থ থাকবে…
ডিম
ডিম শিশুর মস্তিকের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং জন্মগত ত্রুটি দূর করে ।গর্ভাবস্থায় সিদ্ধ ডিম খাওয়া ভাল।আর কেউ যদি ওমলেট বা ডিম পোচ খেতে চান তাহলে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে ডিম যেন কাঁচা না থাকে।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি এবং আয়রন ।এগুলো শিশুর বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় । এছাড়া এতে রয়েছে কপার যা শরীরে আয়রন দ্রুত শোষন করতে সাহায্য করে।মিষ্টি আলু সিদ্ধ করে বা বেক করে খেতে পারেন । এছাড়া ফ্রেন্স ফ্রাইয়ের মত করেও খেতে পারেন ।
বাদাম
বাদামে রযেছে ওমেগা-৩, প্রোটিন, ফাইবার এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল।এছাড়াও রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম যা প্রিম্যচিউর ডেলিভারির ঝুঁকি কমায় ও শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের গঠনে সাহায্য করে ।
শস্য ও ডাল
শস্য ও ডাল থেকে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন ও আয়রন পাওয়া যায় । এছাড়া জিংক ও ক্যালসিয়ামও পাওয়া য়ায় ।
চর্বি ছাড়া মাংশ
মাংশ থেকে পাওয়া যায় প্রোটিন ও আয়রন ।যা শিশুর মস্তিকের বিকাশে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখে।
কমলার রস
এক গ্লাস কমলার রস থেকে আপনি প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি পাবেন । যা শিশুর দাতঁ ও হাড়ের গঠনকে মজবুত করবে।
দই
দই এ দুধের চেয়ে বেশী ক্যালসিয়াম থাকে । এছাড়া এতে ভিটামিন বি এবং জিংক রয়েছে । একজন গর্ভবতী মাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমানে ক্যালসিয়াম গ্রহন করতে হবে ।ক্যালসিয়ামের ঘাটতির ফলে জন্মের সময় শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মাতে পারে এবং মা পরবর্তীতে হাড়ের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে পারে ।
ওটামিল
ওটস এ প্রচুর পরিমানে ফাইবার, প্রোটিন এবং ভিটামিন বি৬ থাকে । সকাল বেলাটা একবাটি ওটামিল খাওয়া শুরু করতে পারে এতে করে সকালের বমি ভাবটা একটু কমতে পারে । গর্ভাবস্থায় অনেকে কোস্ঠকাঠিন্যে ভুগে থাকেন । ওটস এর প্রচুর ফাইবার আপনাকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে । ওটস বিভিন্ন সুপার শপ এবং দোকানে কিনতে পাওয়া যায়।
সবুজ শাকসবজি
শাক সবজি নিয়ে বলার তেমন কিছুই নেই । এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বাচ্চা ও মা দুই জনকেই সুস্থ রাখবে ।
মাছ
বিভিন্ন ধরনের মাছ আপনার খাবারের মেন্যুতে রাখা উচিত । মাছের তেলে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ও প্রোটিন।
গর্ভাবস্থায় ডায়েট
গর্ভাবস্থায় ডায়েট করা উচিত না এতে করে আপনার শরীর পুস্টিহীনতায় ভুগতে পারে।গর্ভাবস্থায় ওজন বাড়া ভাল লক্ষন কিন্তু আপনার ওজন যদি খুব বেশী বেড়ে যায় তাহলে খাবারের তালিকা থেকে চিনি ও চর্বি যুক্ত খাবার বাদ দিন ও হালকা ব্যায়াম করুন। তবে তার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
গর্ভাবস্থায় ওজন কতটুকু বাড়বে
ধীরে ধীরে ওজন বাড়া সবচেয়ে ভাল। সাধারণত গর্ভাবস্থায় ওজন ১০-১২ কেজি বাড়তে পারে।দিনে কত বার খাবেননিয়মিত খাবার খাবেন। তিন বেলা খাবারের পাশাপাশি ৩-৪ বার হালকা নাস্তা করতে পারেন। যদি খাবারে অরুচি বা বদহজম হয় তাহলে অল্প অল্প করে বারবার খাবেন।
মনে রাখবেন সন্তান সবার কাছেই মূল্যবান। সবাই চাইবে সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে। তাই কষ্ট হলেও সন্তানের ভালোর জন্য সাবধানে সবকিছু মেনে চলার চেষ্টা করুন। সেই সাথে নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ রাখুন। বিস্রামে থাকুন, উত্তেজিত থাকবেন না, সেই সাথে উদ্বেগ না হয় এমন কিছু করবেন না ও ভয় পাবেন না। সব থেকে বড় কথা হল নিজের খেয়াল রাখুন। আপনি ভাল থাকলেই আপনার সন্তানও ভাল থাকবে।