আগের দিনের বেঁচে যাওয়া খাবার গরম করে খাওয়ার রেওয়াজ প্রায় প্রতিটি গৃহস্থেই লক্ষ করা যায়। বিশেষত স্বামী-স্ত্রী দুজনেই যদি চাকরি করেন, তাহলে ফ্রিজে রাখা খাবার গরম করে খাওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকে না।
এমনভাবে খাবার গরম করে খাওয়াটা কি ঠিক? খাবার গরম করে খেলে সাধারণত কোনও সমস্যা না হলেও এই লেখায় আলোচিত খাবারগুলি ভুলেও গরম করে খাবেন না। আর যদি কথা না শোনেন তাহলে বলতেই হয় যে আপনার শরীর ভাল রাখতে আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা রাখা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।প্রতিটি খাবারেরই একটা চরিত্র রয়েছে।
সেই চরিত্র অনুযায়ী খাবারের দেখভাল না করলে কিন্তু সেই খাবার ধীরে ধীরে বিষে পরিণত হয়। আর বিষ খেলে শরীরের কী হতে পারে, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না। তাই আর সময় নষ্ট না করে এক্ষুনি চোখ রাখুন এই প্রবন্ধে আর জেনে নিন কোন কোন খাবার একবারের জন্য হলেও গরম করে খাওয়া যাবে না।
১. মুরগির মাংস
একেবারে ঠিক শুনেছেন, মুরগির মাংস গরম করে খেলে একাধিক শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। আসলে চিকেনে উপস্থিত প্রোটিনের গঠন একেবারে বদলে যায়, যখন খাবারটি গরম করা হয়।
ফলে এমন ধরেনর প্রোটিন শরীরে প্রবেশ করা মাত্র হজমের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই এবার থেকে অল্প করে মুরগির মাংস রান্না করবেন। আর যদি কোনও কারণে থেকেও যায় তাহলে ভুলেও সেটি গরম করে খাওয়ার কথা ভাববেন না।
২. আলুর তরকারি
পুষ্টিগুণে ভরপুর এই খাদ্যটি যদি বারে বারে গরম করে খাওয়া হয়, তাহলে এতে উপস্থিত শরীরের উপকারি উপাদানগুলির কর্মক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। ফলে এমন খাবার খেলে শরীরের কোনও উপকারেই লাগে না। শুধু তাই নয়,
একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে বারেবারে গরম করে আলু দিয়ে বানানো কোনও তরকারি খেলে পেট খারাপ হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ফুড পয়েজেনিং হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই সুস্থ থাকতে এবং হজম ক্ষমতাকে চাঙ্গা রাখতে এবার থেকে আর এই ভুল কাজটি করবেন না দয়া করে।
৩. বিট
ভেজিটেবল চপ, বিট গাজরের তরকারি সব বাঙালি রান্না ঘরে বিটকে কাজে লাগিয়ে একাধিক মুখরোচক পদ রান্না করা হয়ে থাকে। কিন্তু একথা কি জানা আছে যে রান্না করা যে কোনও বিটের পদ গরম করে খেলে শরীর খারাপ হবেই হবে!
তবে একটা পদ্ধতিতে এমন ধরনের খাবার গরম করে খেলে কোনও অসুবিধা হয় না। কী সেই পদ্ধতি? ফ্রিজে রাখা বিটের তরকারি খাওয়ার কম করে ২ ঘন্টা আগে বার করে নেবেন। সময় হয়ে গেলে অল্প আঁচে গরম করে খাবেন। এমনটা করলে দেখবেন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমবে।
৪. মাশরুম
যেদিন রান্না করেছেন সেদিনই খেয়ে ফেলার চেষ্টা করবেন মশরুম দিয়ে বানানো যে কোনও পদ। কারণ মাশরুম গরম করার সময় এতে উপস্থিত প্রোটিন তার গঠন পরিবর্তন করে দেয়। ফলে এমন বিকৃত প্রোটিন শরীরে প্রবেশ করলে ক্ষতি ছাড়া ভাল হয় না। তাই সব সময় মাশরুম রান্না করে দিনের দিনে খেয়ে ফেলার চেষ্টা করবেন।
৫. ডিম
ডিমের তরকারি গরম করে খান না, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে বলে তো মনে হয় না। কিন্তু জেনে রাখা ভাল যে এই অভ্যাস শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। কারণ গরম করা মাত্র ডিমে উপস্থিত প্রোটিন একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।
শুধু তাই নয় গরম করার সময় ডিমের শরীরে নানা ক্ষতিকর টক্সিন বা বিষাক্ত উপাদান জন্ম নেয়, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র পেট খারাপ, হজমের সমস্যা সহ একাধিক শারীরিক অসুবিধা দেখা দিতে পারে। প্রসঙ্গত, শুধু রান্না করা ডিমের তরকারি নয়, সেদ্ধ ডিম এবং অমলেটও গরম করে খাওয়া উচিত নয়।
৬. পালং শাক
একাদিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে পালং শাককে গরম করে খেলে শরীরে কার্সিনোজেনিক এলিমেন্ট বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদানের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণে বৃদ্ধি পায়।
আসলে পালং শাকে উপস্থিত নাইট্রেট গরম করার পর নাইট্রাইটস-এ রূপান্তরিত হয়ে যায়। আর এই উপাদানটি শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। তাই তো পালং শাক রান্না করার সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
৭. সেলারি শাক
পালং শাকের মতো এই শাকটিতেও প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট রয়েছে। গরম করার পর এদের চরিত্রও বদলে নাইট্রাইটস হয়ে যায়, যা কার্সিনোজিনক। ফেল এমন যে খাবারে সেলারিু শার রয়েছে সেটি গরম করে খেলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।