বুদ্ধিমান ও মেধাবী সন্তান হোক তা সব মায়েরাই প্রত্যাশা করে থাকেন । আর এটা অনেকটাই নির্ভর করে মায়ের সঠিক খাদ্যাভ্যাসের ওপর । যদি কোনও মা পুষ্টিকর খাবার না খান যেমন : ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন ডি, লোহা ইত্যাদি তাহলে তার শরীরে কিছুটা ঘাটতি থেকে যাবে । আর এর প্রভাব পড়বে সন্তানের ওপর । মায়ের সঠিক খাবারের অভাবে শিশুর মানসিক বিকাশে সমস্যা দেখা দিতে পারে । গর্ভাবস্থায় মা কী খায় সেটা সন্তানের শারীরিক ও মানসিক গঠনে বড় ভূমিকা পালন করে ।
তাহলে দেরি কেন ? আসুন জেনে নিই গর্ভাবস্থায় কী কী খাবার খেলে আপনি বুদ্ধিমান ও মেধাবী সন্তান জন্মদিতে পারবেন…
মাছ :
স্যালমন , টুনা , ম্যাকারেল ইত্যাদি ওমেগা – 3 ফ্যাটি এ্যাসিড সমৃদ্ধ । এগুলো বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য খুবই জরুরি । একটা গবেষণায় দেখা গেছে , যেসব মায়েরা গর্ভাবস্থায় সপ্তাহে দুবারের বেশি মাছ খায় তাদের সন্তানের বুদ্ধি বা আইকিউ বেশি হয় ।
ডিম :
ডিম এ্যামিনো এ্যসিড কোলিন সমৃদ্ধ , যাতে মস্তিষ্কের গঠন ভাল হয় ও স্মরণশক্তি উন্নতি হয় । গর্ভবতী নারীদের দিনে অন্তত দুটো করে ডিম খাওয়া উচিত যার থেকে কোলিনের প্রয়োজনের অর্ধেক পাওয়া যায় । ডিমে থাকা প্রোটিন ও লোহা জন্মের সময় ওজন বাড়িয়ে দেয় ।
দই :
সন্তানের স্নায়ু কোষগুলো গঠনের জন্য আপনার শরীর প্রচুর পরিশ্রম করে । এ জন্য আপনার বাড়তি কিছু প্রোটিন লাগবে । আপনাকে প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে যেমন : দই । দইয়ে ক্যালসিয়াম আছে যেটা গর্ভাবস্থায় লাগে ।
আয়রন :
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যা বুদ্ধিমান ও মেধাবী সন্তান হতে সাহায্য করে । এই খাবারগুলো গর্ভাবস্থায় অবশ্যই খাওয়া উচিত । আয়রন আপনার গর্ভের সন্তানের কাছে অক্সিজেন পৌঁছে দেয় । এছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শে আপনার আয়রনের সাপ্লিমেন্ট খাওয়া উচিত ।
ব্লুবেরি :
ব্লুবেরির মত ফল , টমেটো ও লাল বিন্সে এ্যান্টি ওক্সিডেন্ট থাকে । তাই গর্ভাবস্থায় এই ফলগুলো আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের টিস্যুকে রক্ষা করে ও বিকাশে সাহায্য করে ।
ভিটামিন-ডি :
যেসব মায়েদের ভিটামিনের মাত্রা প্রয়োজনের চেয়ে কম থাকে তাদের বাচ্চার মস্তিষ্ক দুর্বল হয় । ডিম , চিজ , বিফ , লিভার ইত্যাদি খাবারে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় । এছাড়া ভিটামিন – ডি এর ভাণ্ডার সূর্য্যের আলো তো আছেই ।
আয়োডিন :
আয়োডিনের অভাব , বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম ১২ সপ্তাহে সন্তানের আইকিউ কম করে দিতে পারে । গর্ভাবস্থায় আয়োডিনযুক্ত লবণ খান । এছাড়া সামুদ্রিক মাছ , শামুক , ডিম , দই ইত্যাদি খেতে পারেন ।
সবুজ শাক-সবজী :
পালং শাক , ডাল ইত্যাদি ফলিক এ্যাসিড সরবরাহ করে । এছাড়াও ফলিক এ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট ভিটামিন বি – ১২ এর সঙ্গে খাওয়া উচিত । বুদ্ধিমান ও মেধাবী সন্তান পেতে এই সবজি গুলো খাওয়া উচিৎ ।
মস্তিষ্কের কোষ গঠনে ফলিক এ্যাসিড খুব প্রয়োজনীয় । একটা গবেষণায় দেখা গেছে , যেসব নারীরা গর্ভবস্থায় সন্তান প্রসবের চার সপ্তাহ আগে ও আট সপ্তাহ পর অবধি ফলিক এ্যাসিড নিয়ে থাকে তাদের ৪০ শতাংশ অটিস্টিক সন্তান জন্ম দেয়ার আশংকা কম থাকে ।