আমাদের প্রচলিত শিক্ষিত সমাজে এখনও অনেক পরিবারে কন্যা সন্তান জন্ম হওয়াকে ভাল চোখে দেখা হয় না। অনেকে আবার মুখ ফুটে কিছু বলতে না পারলে কন্যা সন্তান মন থেকে খুশী হতে পারেন না বা মেনে নিতে পারেন না। আশাকরি আজ তাদের ভূল ভাঙ্গাতে পারব।
কন্যা সন্তান হওয়ার অসংখ্য ফজিলতের মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে –
আল্লাহ তা‘আলা তাদের সমালোচনা করেছেন পবিত্র কুরআনে। ইরশাদ হয়েছে :
﴿وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُم بِٱلۡأُنثَىٰ ظَلَّ وَجۡهُهُۥ مُسۡوَدّٗا وَهُوَ كَظِيمٞ ٥٨ يَتَوَٰرَىٰ مِنَ ٱلۡقَوۡمِ مِن سُوٓءِ مَا بُشِّرَ بِهِۦٓۚ أَيُمۡسِكُهُۥ عَلَىٰ هُونٍ أَمۡ يَدُسُّهُۥ فِي ٱلتُّرَابِۗ أَلَا سَآءَ مَا يَحۡكُمُونَ ٥٩﴾ [النحل:58-59]
‘আর যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়; তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায়। আর সে থাকে দুঃখ ভারাক্রান্ত। তাকে যে সংবাদ দেয়া হয়েছে, সে দুঃখে সে কওমের থেকে আত্মগোপন করে। আপমান সত্ত্বেও কি একে রেখে দেবে, না মাটিতে পুঁতে ফেলবে? জেনে রেখ, তারা যা ফয়সালা করে, তা কতই না মন্দ!’ {সূরা আন-নাহল : ৫৮-৫৯}
عَن أَنَسٍ رضي الله عنه، عَنِ النَّبيّ ﷺ، قَالَ: «مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْن حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ القِيَامَةِ أنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ»وضَمَّ أصَابِعَهُ . رواه مسلم
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যে ব্যক্তি দু’টি কন্যার লালন-পালন তাদের সাবালিকা হওয়া অবধি করবে কিয়ামতের দিন আমি এবং সে এ দু’টি আঙ্গুলের মত পাশাপাশি আসব।’’(অতঃপর তিনি তাঁর আঙ্গুলগুলি মিলিত করে (দেখালেন)। [মুসলিম ২৬৩১, তিরমিযি ১৯১৪, আহমদ ১২০৮৯]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলনে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করনে, যার গৃহে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করল,অতঃপর সে ঐ কন্যাকে কস্ঠ্ও দেয়নি,তার উপর অসন্তুস্ঠ্ও হয়নি এবং পুত্র সন্তানকে তার উপর প্রধান্য দেয়নি,তাহলে ঐ কন্যার কারনে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবশে করাবেন।(মুসনাদে আহমদ ১;২২৩)
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَإِن كَرِهۡتُمُوهُنَّ فَعَسَىٰٓ أَن تَكۡرَهُواْ شَيۡٔٗا وَيَجۡعَلَ ٱللَّهُ فِيهِ خَيۡرٗا كَثِيرٗا ١٩ ﴾ [النس:]
‘আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ রাখবেন।’ {সূরা আন-নিসা, আয়াত : ১৯}
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,”কন্যা সন্তান হল উত্তম সন্তান। কেননা,তারা হচ্ছে
অধিক গুনের অধিকারিনী বিনম্র ও মিস্ঠভাষী । এছাড়া তারা পিতা-মাতার সেবা শুশ্রষার জন্য সদাসর্বদা প্রস্তুত থাকে এবং তারা মায়া মমতাকারীনী,স্নেহময়ী,বিনয়ী ও বরকতময়ী।”(ফিরদাউস ৪;২৫৫)
আর প্রথম সন্তান মেয়ে হ্ওয়ার ফযীলত সম্পর্কে হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হল,
হযরত আব্দুল্লাহ উমর (রা.) বর্ণনা করেন,রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,ঐ মহিলা বরকতময়ী ও সৌবাগ্যশালী,যার প্রথম সন্তান মেয়ে হয়।কেননা,(সন্তানদানের নিয়ামত বর্ণনা করার ক্ষেত্রে )আল্লাহ তায়ালা মেয়েকে আগে উল্লেখ করে বলেন,তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন আর যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন।”(কানযুল উম্মাহ ১৬:৬১১)