বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ চারজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড ও দুই কোটি ১০ লাখ জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এ রায় দেন। বেগম জিয়া এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল করতে পারবেন।
এর আগে বেগম জিয়া বকশীবাজার আদালতে পৌঁছেন দুপুর পৌণে দুইটায়। এরপর তার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৬৩২ পৃষ্ঠার রায় পড়তে শুরু করেন বিচারক ড. মো: আখতারুজ্জামান ।
রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়া ও আরো দুই আসামি। প্রথমেই বিচারক রায়ের প্রসিকিউশনের অভিযোগগুলো পড়ে শোনান।
এ মামলায় মোট আসামি ছয়জন। তার মধ্যে তিনজন পলাতক। এই তিনজন হলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক হারুন-আর রশিদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন—মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
একনজরে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা
রমনা থানায় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশিদ।
এজাহারে টাকা আত্মসাতের (ঘটনার) সময়কাল হিসেবে ১৩ নভেম্বর ১৯৯৩ হতে ২৮ মার্চ ২০০৭ সালকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
মামলার কার্যদিবস ২৬১ দিন ।
খালেদা জিয়া হাজিরা দেন ৪৩ দিন।
খালেদা জিয়া আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন আট দিন।
গত ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ রায়ের দিন ধার্য করেন বিশেষ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান।
রায়ের দিন ধার্য ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।